Sandeshkhali TMC

রেখা পাত্রের ‘গুরু’, জেল খেটেছেন সন্দেশখালির আন্দোলনেও, তৃণমূলে যোগ সেই সুজয় মাস্টারের

আন্দোলন পর্বের পর এই প্রথম সন্দেশখালিতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার তাঁর সফরের আগে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে দলের পতাকা হাতে তুলে নেন সুজয় মাস্টার।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:০২
তৃণমূলের পার্টি অফিসে গিয়ে দলের পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন রেখা পাত্রের (ইনসেটে) গুরু বলে পরিচিত স্থানীয় নেতা সুজয় মাস্টার।

তৃণমূলের পার্টি অফিসে গিয়ে দলের পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন রেখা পাত্রের (ইনসেটে) গুরু বলে পরিচিত স্থানীয় নেতা সুজয় মাস্টার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সন্দেশখালি সফরের আগে তৃণমূলে যোগ দিলেন স্থানীয় নেতা সুজয় মণ্ডল ওরফে ‘সুজয় মাস্টার’। গত বছর সন্দেশখালিতে শাসকবিরোধী আন্দোলনের শুরুতে তাঁর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় সূত্রে খবর, সে সময়ে শাহজাহান শেখ, উত্তম সর্দার, শিবু হাজরার মতো বিতর্কিত নেতার বিরুদ্ধে মহিলাদের একজোট করেছিলেন এই সুজয়। এমনকি, সন্দেশখালি পর্বে জেলও খেটেছেন তিনি। এই সময়ে তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর যথেষ্ট দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। সেই সুজয় মাস্টারই আবার শাসকদলের হাত ধরলেন।

Advertisement

আন্দোলন পর্বের পর এই প্রথম সন্দেশখালিতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর সফরের আগেই খবর আসে, সন্দেশখালিতে শাসকদলের দলীয় কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন সুজয়। সন্দেশখালির স্থানীয় নেতারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এর পরেই মঞ্চে ওঠেন মমতা।

পেশায় রাজ্য সরকারি স্কুলের প্যারাটিচার সুজয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, এক সময়ে তিনি সিপিএমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে তৃণমূলে চলে আসেন। কিন্তু শাহজাহান, শিবু, উত্তমদের ‘অত্যাচার’ তিনি সহ্য করতে পারেননি। তাঁদের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন সুজয় নিজে। এই সময় থেকেই তিনি সন্দেশখালির মহিলাদের একজোট করতে শুরু করেছিলেন। স্থানীয় কিছু তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে মহিলাদের আন্দোলনের অন্যতম নেতা হয়ে উঠেছিলেন সুজয় মাস্টার।

সন্দেশখালির আন্দোলনের অন্যতম মুখ রেখা পাত্রকে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। সেই রেখার উত্থানও এই সুজয়ের হাত ধরেই, খবর স্থানীয় সূত্রে। পরে অবশ্য তাঁদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়।

সন্দেশখালিতে আন্দোলনরত মহিলাদের মূল অভিযোগ ছিল, স্থানীয় তৃণমূল নেতারা জোর করে জমি দখল করেন, অত্যাচার করেন স্থানীয়দের উপর। বিঘার পর বিঘা জমি দখল করে তৈরি করা হয় মাছের ভেড়ি। লোকসভা নির্বাচনের আগেই তৃণমূল পাল্টা অভিযোগ করে, টাকার বিনিময়ে সন্দেশখালির আন্দোলন ‘সাজিয়েছে’ বিজেপি। এর পর লোকসভা নির্বাচনে সন্দেশখালির কেন্দ্র বসিরহাটে সে ভাবে আর দাগ কাটতে পারেনি বিজেপি। তৃণমূলের প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম (বর্তমানে প্রয়াত) সেখানে কয়েক লক্ষ ভোটে জিতেছিলেন। পরে তিনি প্রয়াত হন। সন্দেশখালি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি জিতেছিল। এ বার মমতার সফরের আগে তৃণমূলের ‘ঘরের ছেলে’ সুজয় আবার ঘরে ফিরলেন। তৃণমূলের দাবি, নিজের ‘ভুল’ বুঝতে পেরেছেন সুজয়। তাই আবার দলে ফিরলেন।

সুজয়ের তৃণমূলে যোগদান প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘উনি তো তৃণমূলেরই লোক। লোকসভা নির্বাচনের সময়েও উনি তৃণমূল করেছেন। প্যারাটিচার সংগঠনের তৃণমূলের নেতা উনি। পাঁচ দিন আগে উনি আমাকে একটি মেসেজ করেছিলেন। বলেছিলেন, আমি চাপে পড়েছি। আমি বলেছি নিজের মতো সিদ্ধান্ত নিতে।’’


Advertisement
আরও পড়ুন