সংস্কারের অভাবে বেহাল নদী। নিজস্ব চিত্র।
নামেই নদী। কিন্তু না আছে স্রোত, না খেলে জোয়ার-ভাটা। স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা পাওয়ার পাশাপাশি দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়ায় এমনই করুণ অবস্থা মথুরাপুরের সুতারবাগ নদী ও সংযোগকারী খালের। গরম পড়তে শুরু করায় শুকিয়ে আসছে নদীর জলও। এই পরিস্থিতিতে চাষের জন্য প্রয়োজনীয় জলের ঘাটতির আশঙ্কা করছেন এলাকার কৃষকেরা। রায়দিঘির বিধায়ক অলোক জলদাতা অবশ্য বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। সেচ দফতর বিষয়টি দেখছে। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
কুলপি, মন্দিরবাজার, মথুরাপুর-১ ও মথুরাপুর-২ ব্লকের মধ্যে দিয়ে বয়ে গিয়ে পাথরপ্রতিমায় অন্য একটি নদীতে মিশেছে সুতারবাগ। এই নদীর সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে কয়েক হাজার কৃষক ও মৎস্যজীবীর জীবিকা। মথুরাপুর-১ ব্লকের আবাদ ভগবানপুর পঞ্চায়েতের সাতপুকুর এলাকায় নদীর উপরে রয়েছে একটি স্লুস গেট। এই গেটের মাধ্যমেই নদীতে জল সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করা হত। ফলে হাজার হাজার কৃষক চাষের জন্য সেই জল ব্যবহার করতে পারতেন। কিন্তু দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়ায় নদী মজে যেতে শুরু করেছে। জায়গায় জায়গায় চড়া পড়ে গিয়েছে। স্লুস গেটের গোড়াতেও চড়া পড়ায় ঠিক ভাবে জল সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। কোথাও আবার জল একেবারে তলায় গিয়ে ঠেকেছে। গ্রীষ্মকালে জল থাকে না, আবার বর্ষার সময়ে জল উপচে জমি, রাস্তা ডুবে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, একাধিক বার প্রশাসন এবং সেচ দফতরকে নদী সংস্কারের দাবি জানিয়েও সুরাহা মেলেনি। এলাকার বাসিন্দা জ়াকির পিয়াদা, মইদুল মোল্লারা বলেন, “নদী এখন খালের থেকেও সরু হয়ে গিয়েছে। এই জল দিয়েই আমরা চাষের কাজ করি। অনেকে মাছও ধরেন। কিন্তু ইদানীং আর পর্যাপ্ত জল পাচ্ছি না। নদীতে চড়া পড়েছে। কিন্তু সংস্কার না হওয়ায় নদী মজে যাচ্ছে। এ ভাবে চলতে থাকলে আমাদের জীবন-জীবিকা কী ভাবে চলবে? আমরা চাই, দ্রুত নদী সংস্কার করা হোক।”
স্থানীয় বাসিন্দা তথা মথুরাপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা ও সংস্কৃতি কর্মাধ্যক্ষ শাহানা খাতুন বলেন, “এলাকার মানুষ দীর্ঘ দিন ধরে নদী সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছেন। আসলে কৃষক এবং মৎস্যজীবীরা প্রত্যক্ষ ভাবে এই নদীর উপরে নির্ভরশীল। তাই সংস্কার দরকার আছে। আমরা সেচ দফতরকে জানিয়েছি। আশা করছি, দ্রুত তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।”
রায়দিঘির এসডিও (সেচ) অলোক পাল বলেন, “আপাতত স্লুস গেটটি সারানো হবে। তারপর জলপ্রবাহ কেমন থাকে দেখে নিয়ে, বাকি পদক্ষেপ করা হবে।”