Jaynagar Child Murder

খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্ত, ধর্ষণ কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে: জয়নগর থেকে এসপি

শনিবার সকাল থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন এলাকার মানুষ। প্রথমে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পরে পুলিশ ক্যাম্পে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
জয়নগর শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ১২:২১
(বাঁ দিকে) শনিবার জয়নগরে বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি। জ্বলছে জয়নগরের মহিষমারি পুলিশ ক্যাম্প (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) শনিবার জয়নগরে বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি। জ্বলছে জয়নগরের মহিষমারি পুলিশ ক্যাম্প (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।

জয়নগরের ঘটনায় অভিযুক্তকে ভোরে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি জানালেন, অভিযুক্ত খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে ধর্ষণের যে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই অভিযোগ স্বীকার করেননি ধৃত যুবক।

Advertisement

জয়নগরের মহিষমারি এলাকায় একটি জলাভূমি থেকে শুক্রবার রাতে উদ্ধার করা হয় এক ন’বছরের শিশুর দেহ। অভিযোগ, তাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। রাতেই সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করে পুলিশ। ১৯ বছরের যুবককে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে শনিবার সকাল থেকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে উত্তেজিত জনতা। অভিযোগ, রাতে পরিবার মহিষমারি পুলিশ ফাঁড়িতে শিশু নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ জানাতে গিয়েছিল। কিন্তু তাদের অভিযোগকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। জয়নগর থানায় যেতে বলেছিল পুলিশ, দাবি পরিবারের। তাদের বক্তব্য, রাতে অভিযোগ পাওয়া মাত্র পুলিশ তৎপর হলে শিশুটিকে হয়তো বাঁচানো যেত।

শনিবার সকাল থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন এলাকার মানুষ। প্রথমে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তার পর থানায় ঢুকে ভাঙচুর চালানো হয়। মহিষমারির পুলিশ ক্যাম্পে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। ডাকা হয় দমকল। পরিস্থিতি সামাল দিতে র‌্যাফ নামানো হয়েছিল। লাঠিচার্জও করেছে পুলিশ। ছোড়া হয়েছে কাঁদানে গ্যাস। পুলিশ সূত্রে খবর, স্থানীয়দের বিক্ষোভে ১২ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। যেখান থেকে শিশুর দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল, সেই এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছে। এসপি বলেন, ‘‘পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে আছে। আমাদের পুলিশের পুরো টিম এখানে আছে।’’পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ প্রসঙ্গে এসপি বলেন, ‘‘এখানে মহিষমারি পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। আমরা রাত ৯টা নাগাদ খবর পেয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত শুরু করি। কোথা থেকে শিশুটি নিখোঁজ হয়েছিল, কে শেষ বার তাকে দেখেছিল, এই তথ্যগুলি সংগ্রহ করা হয়েছিল তখনই। সাধারণত কোনও শিশু নিখোঁজ হলে অপহরণের মামলা রুজু করা হয়। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছিল। রাতে অভিযুক্তকে চিহ্নিতও করা হয়। জয়নগর থানায় সাড়ে ১২টা নাগাদ মামলা রুজু হয়েছে। তিন-চার ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে। অপরাধের কথা তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন। পুলিশ প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ করেছে। তার পরেও এলাকায় ক্ষোভ কেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ পুলিশের কেউ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেছিলেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন এসপি। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, পুলিশ ক্যাম্পে আগুন ধরানোর ঘটনায় অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে পদক্ষেপ করা হবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করবে পুলিশ।

পরিস্থিতি সামাল দিতে জয়নগরে পৌঁছেছেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার, প্রেসিডেন্সি রেঞ্জের ডিআইজি আকাশ মাঘারিয়া-সহ একাধিক পুলিশকর্তা। পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেলেও এলাকায় চাপা উত্তেজনা রয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার কুলতলি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্য বিজেপির নেতারা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে কুলতলি থানা ঘেরাও অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন
Advertisement