নরেন্দ্রপুরের সেই স্কুলে প্রধানশিক্ষকের দফতরে তালা। —নিজস্ব চিত্র।
নরেন্দ্রপুরের স্কুলে প্রধানশিক্ষকের দফতর সিল করে দেওয়া হল। এখনও তাঁকে খুঁজছে পুলিশ। মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর আগে আদালত ওই প্রধানশিক্ষককে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছে। শুক্রবার থেকেই শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা।
নরেন্দ্রপুরের বলরামপুর মন্মথনাথ বিদ্যামন্দিরের প্রধানশিক্ষক সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদ এবং আরও কয়েক জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন ওই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কলকাতা হাই কোর্ট সোমবারের মধ্যে প্রধানশিক্ষক-সহ অভিযুক্তদের গ্রেফতারির নির্দেশ দিয়েছিল। সেই সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। আদালত পুলিশ সুপারকে জানিয়েছিল, মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রধানশিক্ষককে গ্রেফতার করতে হবে।
মাধ্যমিক শুরুর আগের দিন প্রধানশিক্ষকের দফতরটি সিল করে দিয়েছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার ওই দফতর সিল করার আগে সেখান থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। গোটা প্রক্রিয়ার সময়ে উপস্থিত ছিলেন সোনারপুরের বিডিও-র প্রতিনিধি, নরেন্দ্রপুর থানার প্রতিনিধি এবং ওই স্কুলের শিক্ষকদের প্রতিনিধি।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নরেন্দ্রপুরের স্কুলে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীদের ছবিও ভাইরাল হয় সমাজমাধ্যমে। প্রধানশিক্ষক ছাড়াও অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই সদস্য আকবর আলি খান, অলোক নাডু এবং স্কুল পরিচালন কমিটির সদস্য মনিজুর রহমান। এঁদের এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা যায়নি। আক্রান্ত শিক্ষকদের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার অভিযুক্তদের গ্রেফতারির বিষয়ে পুলিশ সুপারের রিপোর্ট তলব করেন হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। রিপোর্টে সুপার জানান, এই ঘটনায় আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম, শেখ আব্দুল সুফিয়ান এবং শোভন আলি সর্দার। তবে স্কুলের প্রধানশিক্ষককে গ্রেফতার করা যায়নি। ঘটনার তদন্তে চারটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। এক জন ডিএসপি পদমর্যাদার আধিকারিকের পর্যবেক্ষণে তদন্ত চলছে।
নরেন্দ্রপুর থানার আইসি আদালতে বলেন, ‘‘আমরা তল্লাশি চালিয়েছি। কিন্তু সবাই পালিয়ে গিয়েছে।’’ তিনি জানান, তাঁর অন্য থানায় বদলি হয়ে গিয়েছে। তাই তাঁর পক্ষে আর এই তদন্তে যুক্ত থাকা সম্ভব হচ্ছে না। তখন আদালত জানায়, আইসিকে পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করতে হবে যাতে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁর বদলির নির্দেশ কার্যকরী না করা হয়। কারণ, এই মামলার তদন্ত শুরু থেকে যাঁর হাতে ছিল, তদন্তের প্রক্রিয়াও তিনিই শেষ করুন, এটাই আদালত চায়।