গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
এলাকায় জোট বেঁধেই নিজেদের সুরক্ষিত রেখেছেন ওঁরা, বলছেন বাংলাদেশের বাসিন্দা স্বপনকুমার বিশ্বাস। হামলার আতঙ্ক এর মধ্যেই তাঁর এবং তাঁর অনেক পড়শির মনের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। কোনও হামলার ঘটনা ঘটলে আইনরক্ষকরা কতটা সক্রিয় হবেন, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে তাঁদের মধ্যে।
বাংলাদেশের যে সব এলাকায় সে দেশের সংখ্যালঘুরা সংখ্যায় বেশি, সেখানে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানালেন সীমান্ত পেরিয়ে এ দেশে আসা বহু বাংলাদেশি। তবে নাম বলতে ভয় পাচ্ছেন অনেকে। অনেক দিন আগে ট্যুরিস্ট ভিসা নেওয়া ছিল বরিশালের বাসিন্দা স্বপনের। বুধবার এ দেশে এসেছেন পেট্রাপোল দিয়ে। বললেন, ‘‘আমাদের এলাকাটি সংখ্যালঘু-প্রধান। আমরা ঐক্যবদ্ধ। ফলে আমাদের ওখানে কেউ গোলমাল পাকাতে পারেনি। শান্তিতেই আছি।’’
ও দেশ থেকে আসা বেশ কয়েক জন সংখ্যালঘু মানুষের দাবি, যে সব এলাকায় সংখ্যালঘুরা সংখ্যায় কম, সেখানেই মূলত হামলা চালানো হচ্ছে। বিশ্বজিৎ গায়েন নামে এক বাংলাদেশির দাবি, ‘‘আমি চাষবাস করে খাই। আমাকে বলা হয়েছে, ফসল না কি ওদের!’’ বুধবার পেট্রাপোল সীমান্তে উৎকণ্ঠা নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এক মহিলা। বয়স্ক এক আত্মীয়ের আসার কথা বাংলাদেশ থেকে। মহিলা বললেন, ‘‘ও দেশের পরিস্থিতি ভাল নয় বলেই শুনছি। তাই ওঁকে আমাদের এখানে কিছু দিন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
বুধবার বাংলাদেশের যে সব সংখ্যালঘু মানুষ দু’দেশের মধ্যে যাতায়াত করেছেন, তাঁদের অনেকেরই চোখে-মুখে আতঙ্ক, উৎকণ্ঠা স্পষ্ট। এক জনের কথায়, ‘‘চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মতো পরিচিত এক জনকে যদি গ্রেফতার করে কার্যত বিনা বিচারে আটকে রাখতে পারে, তা হলে ভাবুন, আমাদের মতো সাধারণ মানুষের সঙ্গে কী হতে পারে!’’ অনেকেই নাম বা ছবিতে আপত্তি জানালেন। দেশে ফিরে যাতে শান্তিতে থাকতে পারেন, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ওঁরা। কাদের মণ্ডল নামে এক বাংলাদেশির কথায়, ‘‘বিভিন্ন প্রান্তে লোকজনকে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। ভারত-বিরোধী কথাবার্তা প্রচার করা হচ্ছে। মানুষকে উত্তেজিত করছে
কিছু লোক।’’
এক প্রবীণ বাংলাদেশি চিকিৎসার জন্য এ দেশে এসেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সব থেকে আশঙ্কার বিষয়, দেশের কিছু শিক্ষিত মানুষই আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধে ভারতের অবদান মুছে ফেলতে চাইছেন। ইতিহাসকে বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে।’’