Indian Railways

দক্ষিণের অনেক প্ল্যাটফর্মেই নেই জল-শৌচালয়ের ব্যবস্থা

নিত্যযাত্রীরা জানান, অনেক প্ল্যাটফর্ম জুড়ে ছাউনি তৈরি হয়নি। ট্রেন ধরার জন্য রোদ-বৃষ্টিতে খোলা আকাশের নীচে দাঁড়াতে হয়। প্ল্যাটফর্মের আশপাশে আগাছার জঙ্গল।

Advertisement
সমীরণ দাস , দিলীপ নস্কর
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:১৮
অকেজো জলের ট্যাব লাইন ও নলকূপ।

অকেজো জলের ট্যাব লাইন ও নলকূপ। —নিজস্ব চিত্র।

পুজোয় প্রতিবারই দক্ষিণ ২৪ পরগনার গ্রামীণ এলাকা থেকে বহু মানুষ কলকাতায় ঠাকুর দেখতে যান। যাতায়াত মূলত রেলপথে। কিন্তু শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার অনেক স্টেশন থেকেই দীর্ঘক্ষণ অন্তর ট্রেন চলে। পুজোয় দর্শনার্থীদের কথা ভেবে ট্রেন বাড়ছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পূর্ব রেল জানিয়েছে, পুজোয় বাড়তি ট্রেন চালানোর বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কিন্তু দক্ষিণ শাখার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের বেহাল পরিকাঠামোর কি উন্নতি হবে? বিশেষ করে পানীয় জল এবং শৌচালয়ের?

Advertisement

কারণ, ওই দুই পরিষেবা নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অব্যবস্থায় নিত্য দুর্ভোগে পড়েন তাঁরা। তাঁরা জানান, অনেক স্টেশনের শৌচালয় এতটাই নোংরা থাকে যে ব্যবহার করা যায় না। কোথাও পানীয় জল মেলেই না। কোথাও মিললেও খাওয়ার অযোগ্য। পুজোর ভিড়ে দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলেইঅনেকের আশঙ্কা।

পূর্ব রেলের তরফে দাবি করা হয়েছে, পরিকাঠামো উন্নয়নে নিয়মিতই কাজ করা হয়। বর্তমানেও অনেক প্ল্যাটফর্মে কাজ হচ্ছে। বেশ কিছু প্ল্যাটফর্ম উঁচু করার কাজ চলছে। যাত্রী সুরক্ষায় অন্যান্য বিষয়েও নজর দেওয়া হচ্ছে।

অভিযোগ, শিয়ালদহ-ডায়মন্ড হারবার ও শিয়ালদহ-নামখানা শাখার বহু স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে পরিকাঠামোগত ত্রুটি রয়েছে। পানীয় জলের ব্যবস্থা বা শৌচালয় পর্যন্ত নেই অনেক স্টেশনে। রেল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়মন্ড হারবার থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার রেলপথে ২৫টি স্টেশন রয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি বড় স্টেশন বাদে বাকিগুলির প্ল্যাটফর্ম বেহাল। একই ভাবে নামখানা থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত প্রায় ১০০ কিলোমিটার রেলপথে ৩১টি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। সেখানেও পরিস্থিতি একই।

নিত্যযাত্রীরা জানান, অনেক প্ল্যাটফর্ম জুড়ে ছাউনি তৈরি হয়নি। ট্রেন ধরার জন্য রোদ-বৃষ্টিতে খোলা আকাশের নীচে দাঁড়াতে হয়। প্ল্যাটফর্মের আশপাশে আগাছার জঙ্গল। খানাখন্দে ভরা প্ল্যাটফর্মগুলিতে পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই, নলকূপ ভাঙা। কয়েকটি প্ল্যাটফর্মে মহিলা শৌচালয়ও নেই। জলের অভাবে সব সময়ই নোংরা হয়ে থাকে শৌচালয়। অনেক ক্ষেত্রেই শৌচালয়ের দরজা-জানলা ভাঙা।

কিছু প্ল্যাটফর্ম ট্রেনের কামরা থেকে অনেকটা নিচুতে হওয়ায় বয়স্ক মানুষের ওঠানামা করতে হয় ঝুঁকি নিয়ে। প্ল্যাটফর্মে ছাউনির নীচে পাখা ঘোরে না, আলোর ব্যবস্থাও বেশ টিমটিমে। সন্ধের পরে অন্ধকারে ভরে থাকে স্টেশন। ট্রেনের মহিলা কামরা প্ল্যাটফর্মের ঠিক কোথায় পড়বে, তা উল্লেখ করা থাকে না বলেও অভিযোগ। ফলে, অসুবিধায় পড়তে হয় মহিলা যাত্রীদের। দু’টি প্ল্যাটফর্মের সংযোগকারী ওভারব্রিজ নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে অনেক জায়গায়। এক সঙ্গে অনেকে পারাপার করলে টলমল করে। ডায়মন্ড হারবার শাখার নেতড়া স্টেশনেই ওভারব্রিজের মুখে দু’দিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পারাপার করতে হচ্ছে অনেক ঘুরপথে। স্টেশনে কেবলমাত্র এক নম্বর প্ল্যাটফর্মেই টিকিট কাউন্টার রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ঘুরে এসে টিকিট কাটতে হয় যাত্রীদের।

অভিযোগ, বহু বছর আগে তৈরি প্ল্যাটফর্মগুলি পাকাপাকি ভাবে সংস্কার হয়নি। নিত্যযাত্রী দেবব্রত সরকার, তপন ময়রাদের অভিযোগ, ২০-২৫ বছর ধরে ট্রেনে কলকাতায় যাতায়াত করছি। সেই শুরু থেকে আজ পর্যন্ত স্টেশনগুলির পরিকাঠামোর কোনও পরিবর্তন হল না। রেল কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে সমস্ত স্টেশনগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নের ব্যবস্থা করুক।

আরও পড়ুন
Advertisement