এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
‘আপনার মেয়েকে বিয়ে করতে চাই।’ কিছু দিন আগে এমনই আর্জি নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে মাটিয়া থানা এলাকার বাসিন্দা জব্বার মোল্লার বাড়িতে উপস্থিত হয়েছিলেন স্থানীয় যুবক নাজিমুদ্দিন মোল্লা। ৫৬ বছরের প্রৌঢ় ওই যুবককে সরাসরি জানিয়ে দেন, তাঁর সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেবেন না। এর পর সপ্তাহখানেক আগে মেয়েকে অন্যত্র পাত্রস্থ করেছেন জব্বার। সব কিছু ভালই চলছিল। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে খুন হয়ে গিয়েছেন ওই প্রৌঢ়। যা নিয়ে উত্তেজনা এলাকায়। অভিযোগ, নাজিমুদ্দিনই খুন করেছেন তাঁকে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে জব্বার বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় আচমকা তাঁর রাস্তা আগলে দাঁড়ান নাজিমুদ্দিন। কিছু বুঝে ওঠার আগে ধারালো অস্ত্র নিয়ে একের পর এক কোপ মেরে পালিয়ে যান নাজিমুদ্দিন। রক্তাক্ত অবস্থায় প্রৌঢ়কে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন স্থানীয়েরা। কিন্তু জব্বারকে বাঁচানো যায়নি। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, মেয়ের সঙ্গে নাজিমুদ্দিনের বিয়ে দেননি বলে জব্বারকে খুন করেন তিনি। তারা অভিযুক্তের শাস্তির দাবি করেছে।
পেশায় সব্জি ব্যবসায়ী জব্বার কাজ সেরে মঙ্গলবার রাতে বারাসাত থেকে ট্রেনে করে মালতিপুর স্টেশনে নামেন। হেঁটে কোড়াপাড়ায় তাঁর বাড়ি ফিরছিলেন। রেললাইন ধরে এগোনোর সময় তাঁকে আক্রমণ করেন নাজিমুদ্দিন। প্রৌঢ়ের চিৎকার-চেঁচামেচিতে স্থানীয়েরা ছুটে যেতেই পালিয়ে যান আক্রমণকারী। প্রৌঢ়কে উদ্ধার করে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
অন্য দিকে, প্রৌঢ়ের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর উত্তেজনা ছড়ায় গ্রামে। স্থানীয়েরা অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুর চালান। তবে নাজিমুদ্দিন বা তাঁর পরিবারের কারও খোঁজ পাওয়া যায়নি। জব্বারের স্ত্রী মাসুদা বিবি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘আমার স্বামীকে কুপিয়ে খুন করে ওর টাকাপয়সাও নিয়ে পালিয়েছে নাজিমুদ্দিন। ওর যেন শাস্তি হয়।’’ মৃতের দাদা আব্দুল আজিজ মোল্লা জানান, নাজিমুদ্দিন তাঁদের এলাকারই ছেলে। ভাইঝির পাত্র হিসাবে তাঁকে তাঁরা কেউ মেনে নেননি। তার পর ভাইঝির অন্যত্র বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তার পরেই তাঁর ভাইকে খুন করেছেন নাজিমুদ্দিন।
ওই ঘটনার পর এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মাটিয়া থানার পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত নাজিমুদ্দিন এবং তাঁর পরিবারের লোকজন পলাতক। তাঁদের খোঁজ করা হচ্ছে।