Mamata Banerjee in Habra

মুখ্যমন্ত্রীর মুখে নেই বালুর নাম, ক্ষুণ্ণ অনুগামীদের অনেকে

এ দিনের সভায় অবশ্য একবারের জন্যও মুখ্যমন্ত্রীর মুখে বালুর নামশোনা যায়নি। এই জেলার আর এক প্রান্ত সন্দেশখালির বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের নামও তোলেননি মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement
সীমান্ত মৈত্র  
হাবড়া শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৪ ০৭:২৭
হাবড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক। ছবি: সুজিত দুয়ারি।

হাবড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক। ছবি: সুজিত দুয়ারি।

ব্রাত্য থাকলেন বালু।

Advertisement

সময়ের ব্যবধান মাত্র তিন মাস। গত বছর ডিসেম্বর মাসে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দেগঙ্গায় দলীয় সভা করতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার কিছু দিন আগেই তৎকালীন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে ইডি রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার করে। দেগঙ্গার সভামঞ্চ থেকে মমতা সে দিন দাবি করেন ‘‘বালুকে (জ্যোতিপ্রিয়ের ডাক নাম) গ্রেফতার করা হয়েছে, যাতে সে দলের কাজ করতে না পারে। নির্বাচন করতে না পারে।’’ দলনেত্রীর মুখে বালুর নাম শুনে আশ্বস্ত হয়েছিলেন জেলায় বালুর অনুগামীরা।

তারপর জল গড়িয়েছে অনেক দূর। মন্ত্রিত্ব থেকে বালুকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবুও মঙ্গলবার যখন হাবড়ার বাণীপুরে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক সভা করতে এলেন, বালু-ঘনিষ্ঠেরা আশা করেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী হয় তো বালুদা সম্পর্কে কিছু বার্তা দিয়ে যাবেন। হাবড়া থেকেই তিন বার বিধানসভা ভোটে জিতেছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। হাবড়া ছিল তাঁর খাসতালুক।

এ দিনের সভায় অবশ্য একবারের জন্যও মুখ্যমন্ত্রীর মুখে বালুর নামশোনা যায়নি। এই জেলার আর এক প্রান্ত সন্দেশখালির বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের নামও তোলেননি মুখ্যমন্ত্রী।

তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের মতে, এ দিন ছিল প্রশাসনিক সভা। ফলে বালুর নাম উল্লেখ করার কারণ ছিল না মুখ্যমন্ত্রী। তা ছাড়া, শাহজাহানকে তো দল বহিষ্কারই করেছে। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাকে। তার নাম নেওয়ার প্রশ্নই ছিল না। জেলা তৃণমূল কোর কমিটির চেয়ারম্যান নির্মল ঘোষ বলেন, ‘‘এটা প্রশাসনিক সভা। ফলে বালুর নাম নেওয়ার সুযোগ মুখ্যমন্ত্রীর ছিল না।’’

দলের একাংশের আবার বক্তব্য, প্রশাসনিক সভায় রাজনৈতিক কথা বলে গেলেন দিদি। তা হলে বালুদাকে নিয়ে দু’কথা বললে কী এমন ক্ষতি ছিল! বালু অনুগামীদের এই অংশ প্রকাশ্যে অবশ্য এ নিয়ে কিছু বলছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মীর কথায়, ‘‘রাজনীতিতে বালুদা মনে হয় অতীত হয়ে গেলেন!’’

তবে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন সভায় বলেছেন, ‘‘মতুয়াদের বড়মা বীণাপাণি ঠাকুরের অসুস্থতা সময়ে সেখানকার বিধায়ক আমাকে বলতেন, দিদি বড়মা অসুস্থ, চিকিৎসা করাতে হবে।’’ বড়মার জীবদ্দশায় প্রায় ১০ বছর জ্যোতিপ্রিয় গাইঘাটার বিধায়ক ছিলেন। এ ক্ষেত্রে ‘দিদি’ বালুকেই ইঙ্গিত করেছেন বলে দলের অনেকের মত।

বিরোধীরা কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না। সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সামনে ভোট বলে মানুষের চোখে ধুলো দিতে মুখ্যমন্ত্রী বালু, শাহজাহানের নাম নিলেন না। এর মধ্যে অবশ্য কোনও আন্তরিকতা নেই।’’ হাবড়ার বিজেপি নেতা বিপ্লব হালদারের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ভেবেছেন, তিনি বালু বা শাহজাহানের নাম মুখে না নিলে হয় তো জেলার মানুষ তাঁদের কুকীর্তি ভুলে যাবেন। মানুষকে বোকা বানাতে চাইলেন উনি।’’

আরও পড়ুন
Advertisement