সন্দেশখালিতে বিক্ষুব্ধ জনতার ছোড়া ইটে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে হানা দিতে গিয়ে স্থানীয়দের রোষে পড়ল ইডি। মারমুখী জনতার চাপে পিছু হটতে হল কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার আধিকারিকদের। ইতিমধ্যেই সন্দেশখালির বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন স্থানীয়রা। বেশ কয়েকটি রাস্তা কাঠের গুঁড়ি দিয়ে অবরোধ করা হয়েছে। টায়ারে আগুন ধরিয়ে প্রতিবাদ করতেও দেখা গিয়েছে স্থানীয়দের একাংশকে। সংবাদমাধ্যমের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে। এই প্রথম কোনও অভিযানে গিয়ে এত বড় বিক্ষোভের মুখে পড়ল ইডি।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার সকালে। রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলাকে কেন্দ্র করে সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। তবে সেই বাড়ি তালাবন্ধ ছিল। অনেক ক্ষণ ডাকাডাকির পরেও কারও সাড়া মেলেনি। প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষার পর সেই বাড়ির তালা ভাঙার চেষ্টা করেন ইডির তদন্তকারী আধিকারিকরা। সেই সময়েই বেশ কয়েক জন স্থানীয় ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। তাঁরা নিজেদের তৃণমূল নেতার অনুগামী পরিচয় দিয়ে ইডি আধিকারিকদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জনওয়ানদেরও ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের একাংশের বিরুদ্ধে। জনগণের প্রতিক্রিয়া দেখে ইডি আধিকারিকেরা ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে যান। তবে এর পরেও থামেনি বিক্ষুব্ধ জনতা। ইট-পাটকেল হাতে রাস্তায় নামেন বেশ কয়েক জন। কয়েকটি রাস্তা অবরোধ করা হয়েছে। টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগও উঠেছে তৃণমূলের কয়েক জন কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে। বেশ কয়েকটি গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। পুরো এলাকা কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে স্থানীয় পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনায় দুই তৃণমূল নেতার বাড়িতে হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শুক্রবার সকালে ইডির একটি দল প্রথমে উত্তর চব্বিশ পরগনার বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যের শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছয়। পরে তাঁর বাড়িতেও হানা দেন ইডি আধিকারিকরা। একই সময়ে অন্য একটি দল সন্দেশখালিতে শাহজাহানের বাড়ির কাছে পৌঁছে যায়। সূত্রের খবর, শঙ্কর এবং শাহজাহান, দু’জনেই প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (বালু)-র ‘ঘনিষ্ঠ’। ইডি সূত্রে খবর, রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলাকে কেন্দ্র করেই ওই দুই জায়গায় হানা দিয়েছে ইডি। উত্তর ২৪ পরগনার দুই তৃণমূল নেতার বাড়ির পাশাপাশি, দক্ষিণ কলকাতার বিজয়গড়ের একটি বহুতলেও হানা দিয়েছে ইডি। সূত্রের খবর, সেখানে এক জন চ্যাটার্ড অ্যাকাউন্টটেন্টের বাড়িতে তল্লাশি চলছে। তবে কোন মামলায় সেই তল্লাশি অভিযান, তা এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি।