টিকিট না পেয়ে ভোগান্তি যাত্রীদের

অসংলগ্ন কথা, রেলকর্মীর বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ 

পরিস্থিতি সামাল দিতে সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ আরপিএফ কর্মীরা আসেন। তাঁরা যাত্রীদের পরামর্শ দেন, বনগাঁয় চলে যেতে। সেখান থেকে টিকিট কেটে গন্তব্যে যেতে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৩ ০৮:৪৬
রেলকর্মীর কীর্তি মোবাইলবন্দি করছেন যাত্রীরা, গোপালনগর স্টেশনে।

রেলকর্মীর কীর্তি মোবাইলবন্দি করছেন যাত্রীরা, গোপালনগর স্টেশনে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

রেলের টিকিট কাউন্টারের এক কর্মীর বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ তুললেন যাত্রীরা। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব রেলের বনগাঁ-রানাঘাট শাখার গোপালনগর স্টেশনে।

Advertisement

অভিযোগ, এ দিন সকালে ওই স্টেশনের কাউন্টারে থাকা এক রেলকর্মী যাত্রীদের টিকিট দেননি। অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন বলে অভিযোগ। যাত্রীদের বক্তব্য, ওই রেলকর্মী মত্ত অবস্থায় ছিলেন। ঠিক মতো দাঁড়িয়ে থাকতেও পারছিলেন না। টিকিট না পেয়ে এ দিন অনেক যাত্রী ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। অনেকে বিনা টিকিটে ট্রেনে উঠে পড়েন। কেউ কেউ আবার টিকিট কাটতে না পেরে বাড়ির পথ ধরেন।

রেল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোর ৪টে থেকে যাত্রীরা ট্রেন ধরবেন বলে স্টেশনে আসেন। কিন্তু টিকিট মেলেনি। কেন টিকিট দেওয়া হচ্ছে না, সে ব্যাপারে একেক সময়ে একেক রকম কথা বলতে থাকেন কাউন্টারে থাকা কর্মী। কখনও বলেন, তিনটি মেশিনই খারাপ। কখনও বলেন, মেশিনের সফটওয়্যার হ্যাক হয়ে গিয়েছে। ক্ষুব্ধ যাত্রীদের অনেকে ওই রেলকর্মীর ছবি এবং কাউন্টারের ছবি তুলে ট্রেনে উঠে পড়েন। এক যাত্রীর কথায়, "কখনও বিনা টিকিটে ট্রেনে যাতায়াত করিনি। খুব ভয় লাগছে। টিকিট পরীক্ষক ধরলে মোবাইলে তোলা ছবি দেখিয়ে ঘটনার কথা জানাব।"

পরিস্থিতি সামাল দিতে সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ আরপিএফ কর্মীরা আসেন। তাঁরা যাত্রীদের পরামর্শ দেন, বনগাঁয় চলে যেতে। সেখান থেকে টিকিট কেটে গন্তব্যে যেতে। যাত্রীরা প্রশ্ন তোলেন, বনগাঁয় যদি টিকিট পরীক্ষক ধরেন, তা হলে কী হবে? তবে পরীক্ষক ধরবেন না বলে রেল পুলিশ তাঁদের আশ্বস্ত করে। যাত্রীরা অনেকেই জানান, বনগাঁ থেকে টিকিট কেটে গন্তব্যে পৌঁছতে অনেক দেরি হয়ে যাবে। কাজ মিটবে না। কেউ কেউ প্ল্যাটফর্মে থাকা অটোমেটিক ভেন্ডিং মেশিন থেকে টিকিট কাটার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

সকাল ৮টা ২০ মিনিট নাগাদ অন্য এক রেলকর্মী এসে টিকিট দেওয়া শুরু করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, ওই রেলকর্মী আগেও মদ খেয়ে বেহুঁশ হয়ে পড়েছিলেন। অভিযোগ অস্বীকার করে ওই রেলকর্মী বলেন, "দেড় বছর এখানে আছি। কোনও অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে নেই।" মদ খাওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমায় দেখে মনে হচ্ছে আমি মদ খেয়েছি? যাত্রীরাই মদ খেয়েছেন, তাই আমাকে বাঁকা দেখছেন!" এরপরেই সাংবাদিকদের বলেন, "১৪৪ ধারা থাকে স্টেশনে। আপনারা সেটা ভেঙে কী করে প্ল্যাটফর্মে এলেন?" মুহূর্তে প্রসঙ্গ পালটে বলেন, "রেলকে কেউ ভালবাসে না। রেলকে বেসরকারিকরণ করা হচ্ছে। আমি চাই, রেল সরকারি থাকুক।"

পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ওই রেল কর্মীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এ দিন তাঁকে মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয় কর্তৃপক্ষের তরফে।

আরও পড়ুন
Advertisement