Poor Condition of Stations

প্ল্যাটফর্মের সার্বিক পরিকাঠামো বেহাল বহু স্টেশনে, অভিযোগ

রেল দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়মন্ড হারবার থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার রেল পথে যাতায়াতের মধ্যে ২৫টি স্টেশন পড়ে।

Advertisement
দিলীপ নস্কর
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪ ১০:০৯
অকেজো উত্তর রাধানগর স্টেশন প্ল্যাটফর্মের নলকূপ।

অকেজো উত্তর রাধানগর স্টেশন প্ল্যাটফর্মের নলকূপ। নিজস্ব চিত্র ।

রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্মগুলিতে পরিকাঠামোগত সমস্যাই যাত্রী পরিষেবায় প্রধান অন্তরায় বলে অভিযোগ যাত্রীদের। প্লাটফর্মে নেই-এর তালিকায় প্রথমেই রয়েছে পানীয় জল ও শৌচালয়। প্ল্যাটফর্ম চলে গিয়েছে হকারদের দখলে। ছাউনির নীচে যাত্রীদের দাঁড়ানোর জায়গায় ঝুড়ি, ঝাঁকা নিয়ে হকারদের ভিড়। ট্রেনে ওঠা-নামার সময় নাস্তানাবুদ যাত্রীরা। ডায়মন্ড হারবার থেকে শিয়ালদহ এবং নামখানা থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত স্টেশনের প্ল্যাটফর্মগুলির উপযুক্ত পরিকাঠামোর দাবিতে একাধিক বার অবস্থান বিক্ষোভ ও যাত্রী আন্দোলন হয়েছে, তাতে সমস্যার সমাধান হয়নি বলেই নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ।

Advertisement

রেল দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়মন্ড হারবার থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার রেল পথে যাতায়াতের মধ্যে ২৫টি স্টেশন পড়ে। তার মধ্যে ডায়মন্ড হারবার জংশন বারুইপুর, সোনারপুর, বালিগঞ্জ ও শিয়ালদহ স্টেশনগুলির প্ল্যাটফর্মে পরিষেবা ঠিক থাকলেও বাকি প্ল্যাটফর্মগুলির পরিকাঠামো বেহাল। একই ভাবে নামখানা থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত প্রায় ১০০ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে ৩১টি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। সেখানেও তিত্রটা একই। এখনও পর্যন্ত অধিকাংশ প্লাটফর্ম জুড়ে ছাউনি তৈরি হয়নি। ফলে গ্রীষ্ম – বর্ষায় ট্রেন ধরার জন্য রোদ-বৃষ্টিতে খোলা আকাশের নীচে দাঁড়াতে হয়। বেশ কিছু স্টেশনের যাত্রী ছাউনি ভাঙা। ফলে তার নীচে দাঁড়ানো আরও বিপদের। প্ল্যাটফর্মে নজরদারি অভাবে আগাছার জঙ্গলও দেখা যায়। এমনকি পার্থিনিয়ামের মতো পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক ঝোপঝাড়ও দেখা যায়। কিছু প্ল্যাটফর্ম খানাখন্দে ভরা। আবার বেশ কিছু প্ল্যাটফর্মে অল্প বৃষ্টি হলেই জল জমে যায়। বহু প্ল্যাটফর্ম কামরা থেকে অনেকটা নীচে। যাত্রীদের ওঠা-নামায় খুব অসুবিধা হয়। মূল রাস্তা থেকে প্ল্যাটফর্ম পর্যন্ত যাতায়াতের রাস্তাও বর্ষায় চলাচলের অযোগ্য।

পানীয় জলের সমস্যা সবচেয়ে বেশি। শৌচালয় থাকলেও হয় দরজা ভাঙা নয়তো দলের ব্যূস্থা নেই। মহিলা শৌচালয়ের তো বালাই নেই। যদিও বা থাকে তা’ও কেবল এক নম্বর প্ল্যাটফর্মেই। ফলে মহিলাদের ক্ষেত্রে অসুবিধাটা অনেক বেশি। সন্ধ্যার পরে বহু প্ল্যাটফর্মে পর্যাপ্ত আলো নেই, সন্ধ্যার পরে অন্ধকার নেমে আসে স্টেশন চত্বরে। যাত্রী ছাউনির নীচে অধিকাংশ পাখাও বিকল।

দুটি প্ল্যাটফর্মের সংযোগকারী ফুট ওভারব্রিজগুলি নড়বড়ে। এক সঙ্গে অনেকে পারাপার করলে দোলে। ডায়মন্ড হারবার শাখায় নেতড়া স্টেশনে ফুট ওভারব্রিজের এক দিক বেশ কয়েক মাস ধরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পারাপার করতে হচ্ছে ঘুর পথে। স্টেশনে কেবল মাত্র এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে টিকিট কাউন্টার থাকে। সে ক্ষেত্রে ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিক থেকে কেউ এলে ঘুরে এক নম্বরে গিয়ে টিকিট কাটতে হয়। তাতে ট্রেন ধরতে সমস্যা হয় অনেক সময়।

যাত্রীদের অভিযোগ, বহু বছর আগে তৈরি প্ল্যাটফর্মগুলি ১২ বগির ট্রেনের উপযুক্ত নয়। কখন কোন ট্রেনের মহিলা কামরা কোথায় থামবে তা বোঝা যায় না, ফলে হুড়োহুড়ি হয়। নিত্যযাত্রী গোবিন্দ দাস, বিমল পালেদের অভিযোগ, ‘‘যাত্রী পরিষেবার দিকে নজর নেই রেলের। স্টেশনের প্ল্যাটফর্মগুলি হকারদের দখলে চলে গিয়েছে। গণ পরিবহন হিসেবে একমাত্র ভরসা রেল। কিন্তু পরিকাঠামো তলানিতে এসে ঠেকেছে।’’ পূর্ব রেলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘যাত্রী পরিষেবায় জোর দেওয়া হচ্ছে। প্ল্যাটফর্মগুলিতে যাত্রীদের বসার জায়গা ও পানীয় জল, শৌচাগারের ত্রুটিগুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement