এখানেই চলে পড়াশোনা, রান্না। ছবি: সমরেশ মণ্ডল।
পরিত্যক্ত গোয়ালঘরের এক কোণেই চলছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কাজকর্ম। এমনই পরিস্থিতি নামখানা পঞ্চায়েতের শিবনগর আবাদ এলাকায় ৩১৯ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের। প্রায় দশ বছর ধরে চলছে স্থানীয় এক বাসিন্দার ভাঙা গোয়ালঘরে রান্না সহ বাচ্চাদের প্রাথমিক পঠন পাঠনের কাজ চলছে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটিতে বর্তমানে প্রায় চল্লিশ জন পড়ুয়া রয়েছেন। এ ছাড়া আট জন অন্তঃসত্ত্বা খাবার সংগ্রহ করেন ওই কেন্দ্র থেকে।
ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সহায়িকা আশালতা পাত্র জানান, স্থায়ী কোনও ঘর থাকায় বাধ্য হয়ে পরিত্যক্ত গোয়ালঘরে বাচ্চাদের রান্না করতে হচ্ছে। ওই ঘরে অঙ্গনওয়াড়ির কাজ চালাতে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলেও দাবি তাঁর। তিনি বলেন, “সাপ, ব্যাঙ, টিকটিকির অচ্যাচারে ঠিক করে বসা বা দাঁড়ানো যায় না। কোনওরকম রান্না করে বাচ্চাদের দিয়ে দিই। বারবার বিষয়টি অফিসে জানিয়েছি, আধিকারিকরা বলেছেন নতুন ভবন হবে। কিন্তু আজ প্রায় দশ বছর হতে চলল অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই বাচ্চাদের রান্না চলছে।”
মায়া বাগ নামে অভিভাবক বলেন, “এই অবস্থাতেই বাচ্চাদের নিয়ে আসতে হচ্ছে। কত দিন এভাবে চলবে? দ্রুত স্থায়ী কেন্দ্র তৈরি করা হোক।” বাসিন্দারা জানান, পঞ্চায়েত থেকে ছ’মাসের মধ্যে নতুন ঘর তৈরি করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু কোনও কাজই হয়নি। এলাকার এক বাসিন্দা আড়াই শতক জায়গাও দান করেছেন নতুন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরির জন্য। তবুও কাজ এগোয়নি বলেই অভিযোগ।
জমিদাতা পরিবারের সদস্য কল্যাণী তুঙ বলেন, “এক সময় খোলা জায়গায় কাদায় রান্না হত। গোয়ালঘরে গরু না থাকায়, বাচ্চাদের এখানে রান্নার সুযোগ করে দিয়েছি। প্রায় দশ বছর বিনা ভাড়াতেই এখানে কেন্দ্রের কাজকর্ম চলছে। নতুন অঙ্গনওয়াড়ি ভবন তৈরির জন্য আমার বাবা আড়াই শতক জায়গা দান করেছিলেন। তবে কাজ হয়নি।”
নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অভিষেক দাস বলেন, “বিষয়টি আমরা আগে জানতাম না। জানার পরে ব্লকের সিডিপিও-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি আমরা ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রকে পঠনপাঠনের উপযোগী করে তুলব।”