Crime News

সুন্দরবনে চোর সন্দেহে থানায় নিয়ে গিয়ে মারধরের অভিযোগ, জামিন মিলতেই অসুস্থ হয়ে মৃত্যু যুবকের!

পরিবারের অভিযোগ, থানার লকআপে দফায় দফায় আবুকে মারধর করে পুলিশ। তার পর গত ৪ জুলাই তাঁকে কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতে হাজির করায় পুলিশ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
সুন্দরবন  শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৪ ১৩:৩৭
A young man died after got bail from court in Sundarban

বিক্ষোভ মৃতের পরিবারের। — নিজস্ব চিত্র।

চোর সন্দেহে থানায় তুলে নিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। সেই মারধরের কারণেই মৃত্যু হয় যুবকের, দাবি পরিবারের। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। পরিবার এবং স্থানীয়েরা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। এমনকি, পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা করেছেন মৃতের বাবা।

Advertisement

ঘটনাটি ঘটেছে, সুন্দরবন পুলিশ জেলার ঢোলাহাটে। মৃত যুবকের নাম আবু সিদ্দিক হালদার (২২)। তাঁর বাড়ি ঢোলাহাটের ঘাটবকুলতলা গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ৩০ জুন আবুর কাকা মহসিন হালদারের বাড়ি থেকে কিছু সোনার গয়না চুরি যায়। অভিযোগ, চুরির পরের দিনই ঢোলাহাট থানার পুলিশ আবু এবং তাঁর কাকাকে জোর করে থানায় তুলে নিয়ে যায়। তার পর সেখানেই আবুর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ লেখানোর জন্য মহসিনকে জোর করা হয়। অভিযোগ, এমনকি শেষ পর্যন্ত জোরপূর্বক মহসিনকে দিয়ে অভিযোগ লিখিয়ে নেওয়া হয়।

পরিবারের অভিযোগ, থানার লকআপে দফায় দফায় আবুকে মারধর করে পুলিশ। তার পর গত ৪ জুলাই তাঁকে কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতে হাজির করায় পুলিশ। পরিবারের দাবি, আবুর সারা শরীরে আঘাতের দাগ রয়েছে। এমনকি চোখমুখ ফেটে গিয়েছে। আদালত আবুর জামিন মঞ্জুর করে। বাড়ি আসার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন আবু। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে প্রথমে মথুরাপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

তবে বাড়ি আনার পর আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন আবু। তড়িঘড়ি ডায়মন্ড হারবারে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে সুরাহা না মেলায় কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় আবুকে। তবে ওই হাসপাতালে শয্যা না মেলায় হাসপাতালের মেঝেতেই ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ। অবস্থার অবনতি হওয়ায় আবুকে পার্ক সার্কাসের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি।

সোমবার রাত ১০টা নাগাদ নার্সিংহোমেই মৃত্যু হয় আবুর। তাঁর মৃত্যুর খবর গ্রামের বাড়িতে পৌঁছতেই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। ঢোলাহাট থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের সদস্যেরা। এক স্থানীয়ের কথায়, ‘‘পুলিশই এখন বড় গুন্ডা। দোষী পুলিশদের কঠোর শাস্তি চাই।’’ মৃতের মা তসলিমা বিবি সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাওয়ের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। এই প্রসঙ্গে কোটেশ্বর জানান, আদালতে হাজির করানোর সময় আবুর কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল না। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে জেলা পুলিশ।

আরও পড়ুন
Advertisement