Jagaddhatri Puja

মুখ বড়, কোমর সরু! কিশোর শিল্পীর জগদ্ধাত্রী প্রতিমা নিয়ে ‘ট্রোলিং’, পাশে দাঁড়াল চন্দননগরের পুজো কমিটি

বরাবর দাদুই প্রতিমা বানাতেন। দাদুর হাতে গড়া সেই জগদ্ধাত্রী প্রতিমাই ‘আভিজাত্য’ এনে দিয়েছিল বায়োয়ারি পুজোয়। বৃদ্ধ শিল্পী মারা যাওয়ায় এ বছর প্রতিমা গড়েছে তাঁর নাতি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
চন্দননগর শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:৫৩
চন্দননগরের বাগবাজার সর্বজনীনের প্রতিমা গড়েছেন ১৫ বছরের কিশোর অনিকেত পাল।

চন্দননগরের বাগবাজার সর্বজনীনের প্রতিমা গড়েছেন ১৫ বছরের কিশোর অনিকেত পাল। —নিজস্ব চিত্র।

বরাবর দাদুই প্রতিমা বানাতেন। দাদুর হাতে গড়া সেই জগদ্ধাত্রী প্রতিমাই ‘আভিজাত্য’ এনে দিয়েছিল বায়োয়ারি পুজোয়। বৃদ্ধ শিল্পী মারা যাওয়ায় এ বছর প্রতিমা গড়েছে তাঁর নাতি। কিশোর শিল্পীর তৈরি সেই প্রতিমার জন্যই এ বছর তুমুল সমালোচনার মুখে পড়তে হল চন্দননগরের বাগবাজার সর্বজনীন পুজো কমিটিকে।

Advertisement

চন্দননগরের বারোয়ারি জগদ্ধাত্রী পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম প্রাচীন হল বাগবাজার সর্বজনীন। ১৯০ বছরের ওই পুজোর ঐতিহ্যই হল ৩০ ফুটের প্রতিমা। সেই প্রতিমা আর তার সাজ দেখতে প্রতি বছর ভিড় উপচে পড়ে। কিন্তু এ বছর দর্শনার্থীদের অভিযোগ, প্রতিমা নিখুঁত হয়নি। কারও বক্তব্য, প্রতিমার মুখ ব়ড় হয়ে গিয়েছে। কারও কারও আবার অনুযোগ, ‘‘সরু হয়ে গিয়েছে কোমরের দিকটা।’’ এ নিয়ে সমাজমাধ্যমেও ‘ট্রোলিং’ শুরু হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে কিশোর শিল্পীর পাশেই দাঁড়ালেন পুজো কমিটির কর্তারা। বিতর্ক উড়িয়ে তাঁরা জানাচ্ছেন, শিল্পী অনিকেত পালের বয়স মাত্র ১৫ বছর। এ বছরই প্রথম প্রতিমা গড়েছে চন্দননগর বঙ্গ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ওই ছাত্র। প্রায় ৪০ বছর ধরে অনিকেতের দাদুই প্রতিমা বানিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুর পর সেই দায়িত্ব পায় অনিকেত। এক পুজো উদ্যোক্তার বক্তব্য, ‘‘ঠাকুরের মাপজোকে খানিক ভুল হয়েছে ঠিকই। কিন্তু কিশোরের হাতে মায়ের মৃন্ময়ী রূপ দান হয়েছে। এই সাহসিকতার কাজ একমাত্র বাগবাজার সর্বজনীনই করতে পারে।’’

অনিকেতও বলে, ‘‘এই প্রথম বার এত বড় ঠাকুর বানালাম। বাগবাজারের ঠাকুরের মুখ ছাঁচে তৈরি হয় না। পুরো ঠাকুরটাই হাতে বানিয়েছি। প্রথম বছর তো উঁচু বাঁশের উপর উঠে কাজ করতে গিয়ে ভয় লেগেছে।’’

সমাজমাধ্যমে সমালোচনা নিয়ে সম্পর্কেও অবগত অনিকেত। সে বলেন, ‘‘প্রথম বছর যা ভুলত্রুটি হয়েছে, মানুষ যা বলছে, তার থেকে শিক্ষা নিয়েছি। আগামী দিনে আমার হাতে কাজ আরও ভাল হবে।’’

পুজো উদ্যোক্তারাও মনে করছেন, ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েই শিল্পী তৈরি হয়। উদ্যোক্তাদেরও বিশ্বাস, অনিকেতকে সময় দিলে সে আরও ভাল কাজ করবে ভবিষ্যতে। পরের বছরও প্রতিমা গড়ার কাজ অনিকেতকেই দেবে পুজো কমিটি? কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শুভজিৎ গোস্বামী অবশ্য বলেন, ‘‘সেটা এখনই বলতে পারছি না। সেটা তো মিটিং করে ঠিক করতে হবে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement