Goalpokhar

গোয়ালপোখর গুলিকাণ্ডে ধৃত ১২, নিহতের দেহ নিয়ে থানার সামনে বিক্ষোভ, দোষীদের শাস্তির দাবি

তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এলাকায় হিংসা হচ্ছে বলে দাবি বিজেপির। যদিও সে দাবি নস্যাৎ করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা গোয়ালপোখরের তৃণমূল বিধায়ক গোলাম রব্বানী।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
ইসলামপুর শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:০০
Representational picture shootout

গোয়ালপোখরে গুলিচালনার ঘটনায় শনিবার পর্যন্ত গ্রেফতারির সংখ্যা ১২। প্রতীকী ছবি।

উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরে গুলিচালনায় নিহত মহম্মদ আরিফের দেহ নিয়ে থানার সামনে বিক্ষোভ দেখালেন তাঁর আত্মীয়-পরিজন। তাঁদের দাবি, মৃত্যুর সময় পুলিশি সাহায্য চেয়ে পাননি আরিফ। দোষীদের গ্রেফতারির দাবিও তোলেন বিক্ষোভকারীরা। শনিবার পর্যন্ত এই ঘটনায় গ্রেফতারির সংখ্যা ১২। এই ঘটনায় জেলা বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এলাকায় হিংসা হচ্ছে। যদিও সে দাবি নস্যাৎ করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা গোয়ালপোখরের তৃণমূল বিধায়ক গোলাম রব্বানী।

শনিবার ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালের পুলিশ মর্গে আরিফের দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। এর পর দুপুরে তাঁর দেহ নিয়ে গোয়ালপোখর থানার সামনে ঘণ্টা দেড়েক বিক্ষোভ চলে। পুলিশকর্তাদের আশ্বাস মেলার পর বিকেল ৪টে নাগাদ বিক্ষোভ প্রদর্শন বন্ধ হয়।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার গোয়ালপোখর থানার পাশে মদিনাচক এলাকায় আরিফের দোকানের সামনে একটি মোটরবাইকের সঙ্গে গাড়ির ধাক্কায় সামান্য জখম হন এক ব্যক্তি। তা নিয়ে বচসার জেরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ এলাকায় ওই গোষ্ঠীর মধ্যে আরও এক দফা ঝামেলা হয়। ইট, বাঁশ, লাঠি, পাথর নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে চড়াও হন দুই গোষ্ঠীর লোকজন। এর পর রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ গুলিচালনার অভিযোগ ওঠে জৈনগাও গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মহম্মদ নাজিসের দলবলের বিরুদ্ধে৷ রাতের অন্ধকারে নাজিস-‘প্রভাবিত’ এলাকায় এক ব্যবসায়ী গুলি চালান বলে অভিযোগ। তাতে গুলিবিদ্ধ হন মহম্মদ বাবুল, মহম্মদ সইদুল এবং হাবিবা খাতুন নামে এলাকার ৩ বাসিন্দা। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে এই ঘটনা খতিয়ে দেখতে গেলে আরিফের বাড়ির পিছন থেকে তাঁর গুলিবিদ্ধ দেহ পাওয়া যায়।

এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়ালপোখর থানার পুলিশ। ইসলামপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার বিশপ সরকার বলেন, ‘‘সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ পরে আরও এক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ সুপারের দাবি, ‘‘যখন যা ঘটনা হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা বলে দাবি করেছেন বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি সুরজিৎ সেন। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়নি। এখনই রাজ্য জুড়ে প্রতিটি জায়গায় তৃণমূলকে মারছে তৃণমূল। জেলায় জেলায় ব্লকে ব্লকে হিংসা চলছে। আসলে সংখ্যালঘুদের জন্য কোনও উন্নয়ন করেননি মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ের ব্যবস্থা ভাল করে করেছেন তিনি। পঞ্চায়েত নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, ক্ষমতা দখলের লড়াই তত বাড়বে। বিরোধীদের তো কেস দিয়ে রেখেছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় দেখবেন, রাজ্য কবরস্থান আর শ্মশানে পরিণত হবে।’’

যদিও বিজেপির এই দাবি অস্বীকার করেছেন রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানী। সংঘর্ষের ঘটনায় দোষীদের আইন মোতাবেক শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘যাঁদের নামে এফআইআর হয়েছে এবং যাঁরা অন্ধকারে গুলি চালিয়েছেন, তাঁদেরকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও বোঝা যাচ্ছে না, অন্ধকারে কে গুলি চালিয়েছেন। একটা বাইকে ধাক্কা মারার জেরে সংঘর্ষ কী করে হল, তা বুঝতে পারছি না। তবে আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন। যাঁরাই আইন নিয়ে খেলবেন, তাঁদের গ্রেফতার করা হবে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement