Jagadhatri Puja 2024

শুধু আলো নয়, বনকাপাসির শোলার সাজেই অদ্বিতীয় চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী

জনশ্রুতি রয়েছে, শিবের বিয়ের সময় টোপর তৈরির জন্যই জন্ম হয় শোলা গাছের!

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বর্ধমান ও চন্দননগর শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪ ১১:৩৭
Advertisement

শোলা। যার বৈজ্ঞানিক নাম ‘এস্কাইনোমিনি অ্যাস্পেরা’। মূলত এটি একটি বর্ষাজাত উদ্ভিদ। হিন্দুরা বিশ্বাস করেন এই গাছ পবিত্র। সে কারণেই বিয়ের মতো শুভ কাজে ব্যবহৃত হয় শোলা।

Advertisement

শোলার তৈরি টোপর, মুকুট, মালা বাঙালি বিয়ের ট্রেডমার্ক। জনশ্রুতি রয়েছে, হিমালয় কন্যা পার্বতীকে বিয়ে করার সময় শিবের নাকি শ্বেত টোপর পরার বাসনা হয়। সে সময় দেবশিল্পী বিশ্বকর্মার কথায় টোপর তৈরির উপাদান হিসাবেই শোলার জন্ম দেন স্বয়ং শিব। একই সঙ্গে জলাশয়ে সৃষ্টি হয় এক সুকুমার যুবকের, যিনি হরগৌরির বিয়ের টোপর, মুকুট, মালা তৈরি করেন। নিজের কাজে সকলকে মুগ্ধ করেন। তার নামকরণ হয় মালাকার। বঙ্গে এই মালাকাররাই শোলা শিল্পের ধারক এবং বাহক। তবে এখন জীবিকার কথা ভেবেই পাল, দাস-সহ আরও অনেক সম্প্রদায়ের মানুষ এই কাজে যুক্ত হয়েছেন।

একটা সময় শোলা শিল্পের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল বাংলাদেশের মানিকগঞ্জ, কেরানিগঞ্জ, মুনসিগঞ্জ, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবেরিয়া, কিশোরগঞ্জ, নেত্রগঞ্জ, শেরপুর, যশোর, রংপুর, দিনাজপুর, বরিশাল। কালের নিয়মেই সে সব সোনালী অতীতে এখন মরচে ধরেছে। টিম টিম করে হলেও প্রদীপ জ্বলছে পশ্চিমবঙ্গে। হাতির দাঁতের বিকল্প হিসাবে নিজের জায়গা করে নিয়েছে শোলা। মুর্শিদাবাদ ধরে রেখেছে শোলাশিল্প। একই রকম ভাবে নাম রেখেছে পূর্ব বর্ধমান। পুজোর মরশুমে কম করে ৫০ কোটি টাকার বাণিজ্য হয় বাংলার শোলাগ্রাম বনকাপাসিতে। করোনার পর সেই ব্যবসা অনেকটাই ধাক্কা খেয়েছে। তার উপর থিমের রমরমায় কোথাও কোথাও ব্রাত্য হয়েছে পুরনো ঐতিহ্য। পছন্দের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে শোলাও। কাজ কমেছে, টান পড়েছে রোজগারেও। তবে এখনই কি ‘এপিটাফ’ লেখার সময় এসেছে? ফরাসডাঙার আলোয় শ্বেত শোলার আধিপত্য কিন্তু বলছে, না সময় আসেনি, সম্ভবত আসবেও না। কারণ, বেঁচে থাকার এই অসম লড়াই শোলাকে বাঁচিয়ে রাখার দৃষ্টান্তে বেনজির বাংলার শোলাগ্রাম বনকাপাসি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সর্বশেষ ভিডিয়ো
Advertisement