মধুচন্দ্রিমার অভিজ্ঞতা হোক অন্যরকম।
প্রেম পর্ব চলাকালীন সম্পর্ক এক রকম থাকে। কিন্তু প্রেম যখন বিয়েতে গড়ায়, সম্পর্কের সমীকরণ বদলাতে থাকে। বহু দিনের চেনা মানুষ দিবারাত্র চোখের সামনে দেখেও অচেনা মনে হয়। সঙ্গীর অনেক নতুন অভ্যাসের সঙ্গে পরিচিত হতে হয়। নতুন মানুষের সঙ্গে জীবন শুরু করার অনুভূতি অন্য। আর বিয়ের পর সম্পর্কের যত্ন নেওয়ার প্রস্তুতি পর্ব হল মধুচন্দ্রিমা। মলদ্বীপ, লাদাখ, গোয়া, জয়পুর, ইন্দোনেশিয়া— মধুচন্দ্রিমার পরিকল্পনা করতে বসলে এই জায়গাগুলির কথা ভাবেন অনেকে। ইদানীং অনেকেই বিয়ের পরে দু’জন মিলে কয়েক দিন আলাদা পরিবেশে কাটানোর জন্য বেছে নিচ্ছেন এই জায়গাগুলিই। কিন্তু এই জায়গাগুলি ছাড়াও দেশের মধ্যেও এমন অনেক সুন্দর, ছবির মতো জায়গা আছে, যেগুলি মধুচন্দ্রিমার ঠিকানা হিসাবে বাকি জায়গাগুলিকে গোল দিতে পারে। কিন্তু মধুচন্দ্রিমার জায়গা হিসাবে ততটাও কদর নেই সেগুলি। আপনার মধুচন্দ্রিমার অভিজ্ঞতা অন্য রকম হোক চান? তা হলে এমন কয়েকটি চেনা জায়গায় বেছে নিন, যেখানে মধুচন্দ্রিমা করার পরিকল্পনা করেন হাতেগোনা কয়েক জন। অথচ সেই জায়গাগুলি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ এবং ভরপুর। যেখানে দু’জন মিলে প্রেমের নতুন গদ্যে লিখতে পারেন, নিজেদের সম্পর্কের উদ্যাপন অন্য রকম ভাবে করতে পারেন।
উটি
শাহরুখ খানের ‘দিল সে’ ছবির ‘ছাইয়া ছাইয়া’ গানের দৃশ্যের কথা মনে আছে? টয় ট্রেনের উপরে উঠে শাহরুখ খানের নাচ ভোলার কথাও নয়। নীলগিরি পর্বতের কোলে তামিলনাড়ুর নীলগিরি জেলার ছোট্ট শহর উটিতেই সেই দৃশ্যের শুটিং হয়। মধুচন্দ্রিমার ঠিকানা কিন্তু হতেই পারে দক্ষিণের এই জায়গা। উটি লেক, এমারেল্ড হ্রদ, দোদাবেতা চূড়া, কালহাট্টি জলপ্রপাত, মুদুমালাই জাতীয় উদ্যান, নিডল রক ভিউ পয়েন্ট— উটিতে দেখার মতো জায়গার অভাব নেই। অনেকেই গরমের ছুটিতে উটি বেড়াতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে। তবে এমন ছবির মতো সুন্দর জায়গায় মধুচন্দ্রিমায় গেলে মনে থাকবে বহু দিন। দু’জনে মিলে কয়েকটি দিন যে ভাল সময় কাটবে, তা হলফ করে বলা যায়।
পোর্ট ব্লেয়ার
আন্দামানের চরাচর জুড়ে একাকার আকাশের নীল রং। সেই রং মনে জড়িয়ে মধুচন্দ্রিমা উদ্যাপনের গন্তব্য হতে পারে পোর্ট ব্লেয়ার। মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে নির্জনতা প্রয়োজন নয়। পোর্ট ব্লেয়ারের আনাচকানাচে ছড়িয়ে আছে অপার নৈঃশব্দ। এই সবুজ দ্বীপপুঞ্জ প্রেমের জন্য একেবারে আদর্শ। ঐতিহাসিক সেলুলার জেল, নর্থ-বে আইল্যান্ড, জারোয়া রিজার্ভ, ভাইপার আইল্যান্ড— হাতে সপ্তাহখানেক সময় নিয়ে তবেই পোর্ট ব্লেয়ারের পথে পা বাড়ানো ভাল। সময়ের অভাবে অর্ধেক জিনিস দেখে ফিরে এলে মন খারাপ হতে পারে।
শ্রীনগর
কাশ্মীর যদি হয় মধুচন্দ্রিমার ঠিকানা, সারা জীবন মনে থাকবে এই সফরের কথা। কাশ্মীরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নতুন করে ব্যক্ত করার প্রয়োজন পড়ে না। এমন স্বর্গরাজ্যে দু’জন মিলে গড়ে তুলতে পারেন রূপকথার মতো মুহূর্ত। পরিবার নিয়ে কাশ্মীরে বেড়াতে যান অনেকেই। তবে সপরিবার ভ্রমণ ছাড়াও কাশ্মীরে মধুচন্দ্রিমার পরিকল্পনা করতেই পারেন। শ্রীনগর হল কাশ্মীরের প্রাণকেন্দ্র। মধুচন্দ্রিমার কয়েকটি দিন এখানেই কাটিয়ে দিতে পারেন। পাহাড়ের চূড়ায় বরফের চাদর জড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে এই শহর। মোঘল গার্ডেন, টিউলিপ গার্ডেন, ডাল লেক— চোখ জুড়িয়ে দেবে, মন ভরিয়ে দেবে এই জায়গা। ডাল লেকের বুকে শিকারায় ভাসতে ভাসতে প্রেমের উদ্যাপন হলে মন্দ কী!