পাহাড় থেকে সমতল, ছড়িয়ে থাকা বর্জ্য ক্ষতি করছে পরিবেশের। ছবি: ভেকটিজি।
নদী, সমুদ্র, পাহাড় বা জলাধার, নির্মল সৌন্দর্য এক নিমেষে শেষ হয়ে যায় এখানে-সেখানে পড়ে থাকা প্লাস্টিকের জলের বোতল, চিপস্-বিস্কুটের প্যাকেটে।
১০-১২ বছর আগেও কিন্তু এই ছবি ছিল না। এখন পাহাড় হোক কি সমতল, এমনকী জঙ্গল এলাকাতেও প্লাস্টিকের বর্জ্য চোখে পড়বে কোথাও না কোথাও!
স্থানীয় মানুষ থেকে ভ্রমণ পিপাসু, সকলেই না সচেতন হলে পরিবেশ বাঁচবে কী করে? এ ভাবে চলতে থাকলে কোন সুন্দরের টানেই বা পর্যটক ঘুরবেন?
এভারেস্ট থেকে শুরু করে পাহাড়, জলাধার সর্বত্রই ক্রমবর্ধমান বর্জ্য ক্রমশ পরিবেশের জন্য চিন্তার বিষয় হয়ে উঠছে। এই পরিস্থিতিতে পরিবেশ রক্ষায় ভ্রমণের সময় প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো উচিত সকলেরই। কী ভাবে তা সম্ভব, সেটাই জেনে নিন।
বোতল ও ব্যাগ
বাড়ি থেকেই জলের বোতল নিয়ে যান। যতজন বেড়াতে যাবেন প্রত্যেকের জন্যই মাথা পিছু একটি বোতল রাখুন। এমনিতেও প্লাস্টিক শরীরের জন্য ভাল নয়। বদলে স্টিল বা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়, এমন বোতল বেছে নিন। বেড়াতে গিয়ে প্লাস্টিকের বোতলে জল কেনার বদলে চেষ্টা করুন হোটেল বা হোম-স্টে থেকে পরিশ্রুত পানীয় জল ভরে নিতে। কোনও কিছু কেনার সময়ও আমরা ক্যারি ব্যাগ চাই। তার বদলে যদি ছোট ভাঁজ করা ব্যাগ সঙ্গে রাখা যায়, তা হলে প্লাস্টিকের ক্যারি ব্যাগের ব্যবহার কমানো সম্ভব হবে।
প্লাস্টিককে না বলতে হবে
বেড়াতে গিয়ে লস্যি হোক বা ডাবের জল। বেশিরভাগ জায়গাতেই ব্যবহার করা হয় প্লাস্টিকের স্ট্র। পরিবেশ বাঁচাতে নিজেই স্টিলের স্ট্র সঙ্গে রাখতে পারেন। অনেক জায়গায় প্লাস্টিকের চামচে খেতে দেওয়া হয়। সঙ্গে স্টিলের চামচও রাখুন। কতটুকু আর জায়গা লাগবে? এতে আপনার আশপাশে থাকা আর পাঁচ জনের কাছেও সচেতনতার বার্তা যাবে।
কাচ ও টিনের পাত্রে রাখা পানীয় বেছে নিন
পাহাড় যান বা সমুদ্র বা জঙ্গল, সব চেয়ে বেশি বর্জ্য থাকে প্লাস্টিকের জল বা নরম পানীয়ের বোতলের। তার পর থাকে চিপস্ ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট। যদি প্লাস্টিকের নরম পানীয়ের বোতল কেনার বদলে কাচের বোতল বা টিনের বোতল কেনা যায় তা হলে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমবে।
পরিবেশবান্ধব ‘ওয়াইপস’
বাইরে গেলে হাত ও মুখ মোছার জন্য পরিবেশবান্ধব ‘ওয়াইপস’ ব্যবহার করুন। যা ফেলে দিলেও প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যাবে।
চা- বহু জায়গাতে প্লাস্টিকের কাপে চা দেওয়া হয়। অনুরোধ করতে পারেন মাটির ভাঁড়ে চা দেওয়ার জন্য। গ্রাহক সচেতন হলে বিক্রেতাও মনোভাব বদলাতে বাধ্য।
বর্জ্য কোথায় ফেলবেন- জল বা নরম পানীয় খেয়ে, চিপস্ খেয়ে গাড়ির ভিতর থেকে রাস্তায় বা ঝোপঝাড় দেখে বোতল বা প্লাস্টিকের প্যাকেট ফেলে দেওয়াটা কি দায়িত্বজ্ঞানের পরিচয় হতে পারে? ছোটরাও কিন্তু খুঁটিনাটি জিনিস বড়দের দেখেই শেখে। ফলে তারাও এই একই জিনিস করতে পারে। সব মিলিয়ে তা পরিবেশের পক্ষে ভয়াবহ। তাই এই ধরনের বর্জ্য রাস্তায় যেখানে-সেখানে না ফেলে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলুন।
পরিবেশ সুন্দর থাকলে জীবজগৎ ভাল থাকবে। সামান্য একটু অভ্যেসের বদল আর দায়িত্বশীলতা কিন্তু অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।