দু’দিনে কী ভাবে ঘোরা যাবে চেরাপুঞ্জি? ছবি: ফ্রি পিক।
চেরাপুঞ্জি। ভূগোলের বইয়ের পাতায় পড়ে নেওয়া নাম, যেখানে না কি বিশ্বের সর্বাধিক বৃষ্টিপাত হয়। তবে বদলেছে পরিবেশ। সর্বাধিক বৃষ্টিপাতের স্থানও গিয়েছে বদলে। তবে বদল যাই হোক, বদলায়নি চেরাপুঞ্জির প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ।
ঝর্না, পাহাড়, গুহা, প্রাকৃতিক সেতু , মেঘ-বৃষ্টি নিয়ে ছবির মতো সেজে বসে আছে চেরাপুঞ্জি। যার আর এক নাম সোহরা। খাসিদের সাংস্কৃতিক পীঠস্থান হল মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি।
এখানে রয়েছে অজস্র ঝর্না, বর্ষায় সবুজ পাহাড় হয়ে ওঠে আরও সবুজ। মেঘলা দিনে যেন নতুন পোশাকে সেজে ওঠে চেরাপুঞ্জি। কী ভাবে দু’দিনেই ঘুরে নিতে পারেন চেরাপুঞ্জি, সেটাই জেনে নিন।
প্রথম দিন সকালে ঘুরে নিন
ডবল ডেকার লিভিং রুট ব্রিজ- প্রথম দিনের শুরুটাই করতে পারেন এখানকার অন্যতম আকর্ষণ উমশিয়ঙের ডবল ডেকার রুট ব্রিজ দিয়ে। গাছের শিকড় দিয়ে তৈরি দো’তলা এই প্রাকৃতিক সেতু। প্রকৃতি ও প্রযুক্তির এই মেলবন্ধন অবাক করার মতো। ৫০ জন একসঙ্গে সেতুর ওপর দাঁড়াতে পারেন।
দুপুরে চলুন ঝর্না দেখতে
দুপুর চলুন নোগরিয়াত গ্রামে রেনবো ফলস দেখতে। খাড়াই পথে অনেকটা উঠতে হয়। তবে সূর্যের আলো ঝর্না জলের মধ্যে দিয়ে বিচ্ছুরিত হয়ে যখন সাত রঙা হয়ে ফুটে ওঠে, সেই সৌন্দর্য চড়াই পথের ক্লান্তি ধুয়ে দেয়। ঝর্ণা ধারেই সেরে নিতে পারেন দুপুরের খাওয়া।
এখান থেকে ঘুরে নিন চেরাপুঞ্জির আর একটি জনপ্রিয় ঝর্না নহকালিকাই। সবুজ ঢাকা উচুঁ পাহাড় থেকে সোজা নীচে নামছে জল। নীচে তৈরি হয়েছে পাথরের খাঁজে ছোট্ট একটা জলাশয়। রং তার গাঢ় নীল।
বিকেলে ঘুরে নিন মাওকডক ডিমপেপ ভ্যালি
ঘন সবুজে ঢাকা পাহাড়ি উপত্যকা। নহকালিকাই জলপ্রপাত থেকে এর দূরত্ব ২৪ কিলোমিটার। সূর্যাস্তের রাঙা আলো যখন উপত্যকার গায়ে তার পরশ বুলিয়ে দেয়, তখন সে রূপ হয়ে ওঠে অনির্বচনীয়। এই উপত্যকা ঘুরেই শেষ করুন প্রথম দিনের ভ্রমণ।
দ্বিতীয় দিন
সকালে ঘুরে নিন মোসমাই কেভ
এটা চুনাপাথরের গুহা। গুহায় ফোঁটা ফোঁটা জল পড়ে তৈরি হয় স্ট্যালাকটাইট ও স্ট্যালাগমাইট। গুহায় কোথাও হামাগুড়ি দিয়ে যেতে হয়, কোথাও একপাশ হয়ে। পুরো ব্যপারটাতেই বেশ রোমাঞ্চ রয়েছে।
এখান থেকেই চলে যেতে পারেন কাছেই নংথাইমাই ইকো পার্কে। ওখানে পৌঁছে দাঁড়িয়ে থকুন খানিক। উপভোগ করুন চারপাশের অপরূপ সৌন্দর্য।
বিকেল
বিকেল ঘুরে নিন আর একটি গুহা। আরওয়া কেভ। এখানে রয়েছে নানা রকম জীবাশ্ম। মাছের হাড় থেকে বিভিন্ন প্রাণীর জীবাশ্ম দেওয়ালে দেখা যায়। বহু প্রাচীন এই গুহা।
গুহা থেকে বেরিয় ঘুরে নিন এখানকার খুবই জনপ্রিয় জলপ্রপাত সেভেন সিস্টার্স। বিকেলের দিকে এই জলপ্রপাত দেখতে আরও ভাল লাগে। পাহাড়ের বুক চিরে নেমেছে সাতটি জলধারা। বর্ষায় গেলে সেই জলপ্রপাতের জলকণাও ছিটকে এসে লাগে গায়ে।
সন্ধেয় ঘুরে নিন থাংকারাং পার্ক। সন্ধের হওয়ার মুখে আলো জ্বলে উঠলে এই পার্ক ঘুরতে বেশ লাগে। ঝর্ণা, গাছপালা ঘেরা এই উদ্যান সান্ধ্যভ্রমণের জন্য উপযুক্ত।
কোথায় থাকবেন?
চেরাপু্ঞ্জিতে থাকার জন্য অসংখ্য ছোট ও বড় হোটেল আছে।