স্বামী নীলাঞ্জনের সঙ্গে কাশ্মীরে গায়িকা ইমন চক্রবর্তী। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
চারপাশে সবুজ পাহাড়। পাইনের বন। পাথরের উপর দিয়ে বয়ে চলেছে খরস্রোতা লিডার নদী। ভূস্বর্গের রূপে মজে গায়িকা ইমন চক্রবর্তী ও তাঁর স্বামী নীলাঞ্জন ঘোষ। সমাজমাধ্যমে কাশ্মীর ভ্রমণের ঝলক ভাগ করে নিয়েছেন গায়িকা। কখনও চড়েছেন ঘোড়ার পিঠে, কখনও কাঁধে খরগোশ নিয়ে পোজ় দিয়েছেন। কখনও আবার আদর করে বুকে জড়়িয়ে ধরেছেন কাশ্মীরি শিশুকে। ছবি, ভিডিয়োয় স্পষ্ট, যুগলে দারুণ উপভোগ করছেন কাশ্মীরের রূপ, সৌন্দর্য।
পহেলগাঁওতে লিডার দেখে উচ্ছ্বসিত ইমনের ছবি ক্যামেরাবন্দি হয়েছে। কাশ্মীরে ছবির মতো সুন্দর একটি স্থান পহেলগাঁও। এখান দিয়েই বয়ে গিয়েছে লিডার নদী। পুজোয় কি সেখানে ঘুরতে যাবেন? পহেলগাঁও থেকে ঘুরে নেওয়া যায়, এমন ৩ স্বল্পচেনা গন্তব্যের সন্ধান রইল।
বৈসরন ভ্যালি
পহেলগাঁও থেকে ইদানীং অল্পচেনা গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছেন পর্যটকেরা। তারই মধ্যে একটি বৈসরন উপত্যকা। বিস্তৃত সবুজ ঢেউখেলানো প্রান্তরকে ঘিরে রয়েছে পাহাড় ও পাইনের বন। এই স্থানকে সুইৎজ়ারল্যান্ডের সঙ্গে তুলনা করে কেউ কেউ ‘মিনি সুইৎজ়ারল্যান্ড’-ও বলেন।
পহেলগাঁও থেকে বৈসরন কিন্তু গাড়ি যায় না। যেতে হলে হয় হাঁটতে হবে, না হলে ঘোড়ার পিঠে। যেতে মোটামুটি ঘণ্টাখানেক সময় লাগে। হাঁটলে আর একটু বেশি। মধুচন্দ্রিমা যাপনে কাশ্মীর বেছে নিলে, এমন সুন্দর গন্তব্য কিন্তু বাদ দেবেন না।
তুলিয়ান হ্রদ
বিখ্যাত কবি আমির খসরু কাশ্মীর সম্পর্কে লিখেছিলেন, এই পৃথিবীতে কোথাও যদি স্বর্গ থাকে তবে, তা এখানেই।
সেই স্বর্গের রূপ উপভোগ করতে চাইলে, গাড়িপথ ছেড়ে পাড়ি দিতে হবে পাহাড়ি পথে। সবুজ ঘাসের ঢেউখেলানো উপত্যকা, পাইন, ফার গাছের জঙ্গলপথে পা বাড়াতে পারেন তুলিয়ান হ্রদ দেখতে। পহেলগাঁও থেকে তুলিয়ানের দূরত্ব ১৬ কিলোমিটার। তবে এই দূরত্ব পার করা অতটাও সহজ নয়। পাহাড়ি পথে হাঁটতে হবে। কোথাও পড়বে খরস্রোতা নদী। কখনও মাথা দোলাবে ফুলের দল। ক্লান্তি আসবে। তবে তা ভুলিয়ে দেওয়ার জন্য থাকবে স্বর্গীয় রূপ।
১২ হাজার ফুট উচ্চতায় পাহাড় ঘেরা ছোট্ট হ্রদ তুলিয়ান। ২ দিন লাগে ট্রেকটি সম্পূর্ণ করতে। প্রথম ধাপে বেস ক্যাম্প থেক যাত্রা শুরু। দ্বিতীয় ধাপে দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী উপত্যকা পার হতে হবে। তৃতীয় ধাপে পৌঁছনো যাবে হ্রদে। চাইলে ঘোড়া করেও যাওয়া যায়।
লিডারওয়াত ভ্যালি
পহেলগাঁও থেকে ট্রেক করে ঘুরে আসতে পারেন আর এক অচেনা গন্তব্য লিডারওয়াত ভ্যালিতে। আরু ভ্যালি হয়ে যেতে হবে সেখানে। কাশ্মীর নিয়ে বহু হিন্দি ছবি হয়েছে। সেই ছবিতে যে অসাধারণ দৃশ্যপট দেখেছিলেন, তার সঙ্গে মিল পাবেন এই পথে পা বাড়ালে। কোথাও উঁকি দেবে পাইনের বন, সঙ্গ দেবে ম্যাপেল গাছ। কোথাও আবার থাকবে বিশাল উপত্যকা। এখান থেকেই যাওয়া যায় কালহই ও তারসার ট্রেকিংয়ে। লিডারওয়াতকে পরবর্তী ধাপের ট্রেকিংয়ের জন্য বেস ক্যাম্প হিসাবেও ব্যবহার করা হয়।
কী ভাবে যাবেন?
শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে করে জম্মু তাওয়াই স্টেশন। সেখান থেকে গাড়িতে শ্রীনগর হয়ে পহেলগাঁও। বিমানে শ্রীনগর পৌঁছে সেখান থেকেও পহেলগাঁও যেতে পারেন। শ্রীনগর থেকে পহেলগাঁওয়ের দূরত্ব মোটামুটি ৯০ কিলোমিটার। পহেলগাঁও থেকে তিনটি জায়গাই হেঁটে যাওয়া যায়। দু’টি জায়গায় যাওয়ার জন্য ঘোড়া পাবেন।
কোথায় থাকবেন?
পহেলগাঁওতে থাকার জন্য বিলাসবহুল হোটেলও আছে, আবার কম খরচের আস্তানাও মিলবে। খোঁজ করলে গ্রামের দিকে হোমস্টে পাওয়া যায়।