মানুষী গিয়েছিলেন। আপনিও ঘুরে আসবেন না কি রণথম্ভোরের জঙ্গল থেকে? ছবি: সংগৃহীত।
ঘুরতে তিনি বড়ই ভালবাসেন। বিভিন্ন সময় সমাজমাধ্যমের পাতায় ভাগ করে নেন সেই ছবিও। প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরী মানুষী চিল্লার। অভিনেত্রী-মডেলকে এখন আর সে ভাবে রূপোলি পর্দায় দেখা যায় না। তবে সমাজসেবামূলক কাজ ছাড়াও নিজস্ব পরিসরে ব্যস্ত তিনি। তার মাঝেই বিভিন্ন মহূর্তে ছবি তিনি ভাগ করে নেন সমাজমাধ্যমে। গত সপ্তাহে যখন বি-টাউনের তারকাদের সমাজমাধ্যম উপচে পড়েছিল রকমারি সাজপোশাক, আনন্দ অনুষ্ঠানের ছবিতে, তখন মানুষী ভাগ করে নিয়েছিলেন অন্য রকম কিছু মুহূর্ত।
জঙ্গলের সৌন্দর্য, খেলে বেড়ানো হরিণ, ময়ূর-সহ বিভিন্ন পশুপাখির ছবি জায়গা পেয়েছিল তাঁর সমাজমাধ্যমের পাতায়। সম্প্রতি রাজস্থানের রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যানের ছবি ভাগ করে নিয়েছেন প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরী। রাজস্থানের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তের সওয়াই মাধোপুর জেলার এই জাতীয় উদ্যান বাঘ-সহ অসংখ্য প্রাণীর বিচরণক্ষেত্র।
প্রতি বছর অসংখ্য পর্যটক বেড়াতে আসেন এখানে। বন্যপ্রাণ, প্রকৃতি নিয়ে আগ্রহ থাকলে আপনিও ঘুরে নিতে পারেন এই জাতীয় উদ্যান।
কী কী আছে?
রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যানের অন্যতম আকর্ষণ হল বাঘ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী এখানে ৭৫টি বাঘ এবং বাঘিনী রয়েছে। এ ছাড়াও এই জঙ্গল লেপার্ড, সম্বর, হরিণ, চিতল, চিঙ্কারা, শ্লথ বিয়ার-সহ অসংখ্য বন্যপ্রাণের বাসভূমি।
রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যানের আশপাশের জলাশয়গুলিতে শীতের দিনে উড়ে আসে বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি। এখানে অন্তত ৩০০ প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। এখানেই দেখা মেলে ইন্ডিয়ান পিট্টা, ইন্ডিয়ান গ্রে হর্নবিল, ঈগল, গ্রেটার ফ্লেমিংগো, পেন্টেড স্টর্ক-সহ অসংখ্য পাখির। আর সঙ্গে রয়েছে জঙ্গলের সৌন্দর্য। কুমির, পাইথন-সহ বিভিন্ন সরিসৃপের চারণক্ষেত্র এই উদ্যান।
সাফারি
জাতীয় উদ্যানের গহীনে পায়ে হেঁটে ঘোরা যায় না। সে জন্য রয়েছে সাফারির ব্যবস্থা। রণথম্ভোরের জঙ্গলে মোট ১০টি জোন রয়েছে। প্রতিটি জোনে আলাদা সাফারির ব্যবস্থা রয়েছে। সাফারি হয় দু’ ভাবে। জিপ এবং ক্যান্টার সাফারি। অক্টোবর থেকে জুন মাস পর্যন্ত জঙ্গল ঘোরার ছাড়পত্র মেলে।
সাফারির জন্য আগে থেকেই বুকিং করতে হয়। নির্দিষ্ট নথি দিয়ে অনলাইনেই বুকিং হয়। সকাল এবং দুপুরে সাফারি হয়। শীতের দিনে জঙ্গল ভ্রমণের জন্য যাত্রা শুরু হয় সকাল ৭টায়। দুপুরে সাফারি শুরু হয় ২টো থেকে। সাড়ে তিন ঘণ্টার সাফারির সময় মরসুম অনুযায়ী আধ ঘণ্টা আগে-পরে হয়।
পক্ষী পর্যবেক্ষণ
রণথম্ভোরের জঙ্গলে পাখিও দেখতে আসেন পক্ষী পর্যবেক্ষকরা। তবে জঙ্গলের সর্বত্র হাঁটাহাটির অনুমতি নেই। সে ক্ষেত্রে সাফারির সময় গাড়িতে বসেই যতটুকু পাখি দেখার, দেখতে হবে। মালিক তালাও, রণথম্ভোর দুর্গ, রাজবাগ তালাও, পদম তালাও, ঝালেরা এই জায়গাগুলি পাখি দেখার জন্য জনপ্রিয়।
তবে পক্ষী পর্যবেক্ষকরা সওয়াই মাধোপুর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে সুরওয়াল হ্রদ, ১৫ কিলোমিটার দূরে মানসরোবরেও পাখি দেখার জন্য যেতে পারেন।
রণথম্ভোরের দুর্গ
জঙ্গল ছাড়াও দেখে নিতে পারেন রণথম্ভোরের বহু পুরনো দুর্গ। ৭০০ ফুট উঁচু দুর্গটি জঙ্গলের মধ্যে রয়েছে। জানা যায়, এই দুর্গটি তৈরি করিয়েছিলেন জাঠ শাসক, নাগিল রাজা সাজরাজ সিংহ নাগিল। পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে এই দুর্গ একাধিক নৃপতির দখলে আসে। রাজপুতদের হাতে থাকা দুর্গটি মোগল শাসকদের হাতেও গিয়েছিল বিভিন্ন সময়ে।
ভারতের স্বাধনীতা পূর্ববর্তী সময়ে রণথম্ভোরের জঙ্গলেই শিকার করতেন এখানকার রাজারা। পরে রাজপাট অবলুপ্ত হয়। জঙ্গল এখন বন্যপ্রাণীদের জন্য সুরক্ষিত।