Jungle Safari

বর্ষার পর জঙ্গল খুললেই সাফারি করতে যাবেন? তার আগে ৫ জরুরি জিনিস অবশ্যই মাথায় রাখুন

জঙ্গলে যাবেন পশুপাখি দেখতে। অথচ সেখানকার নিয়ম মানবেন না, তা হয় না। জঙ্গলে গেলে কিছু নিয়ম অবশ্যই মেনে চলতে হয়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৩ ১৯:০১
Image of jungle safari

হাতির পিঠে চড়েও প্রবেশ করা যায় জঙ্গলের গভীরে। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।

অনেক চেষ্টা করে সেপ্টেম্বরের শেষে অফিস থেকে কয়েক দিনের ছুটি মঞ্জুর করাতে পেরেছেন আহেলি। অনেক দিন কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয়নি বলে কেমন যেন দমবন্ধ লাগছে। এ দিকে, জঙ্গলে যাবেন শুনে কলেজের চার-পাঁচ জন বন্ধু চেপে ধরেছে। তাঁরাও আহেলির সঙ্গে যেতে চান। অন্য অনেক জায়গাতেই তাঁদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছেন আহেলি। কিন্তু জঙ্গলের ব্যাপারে তিনি একটু বেশিই স্পর্শকাতর। তাই দল বেঁধে জঙ্গলে গিয়ে হইহুল্লোড় করা নিয়ে তাঁর একটু আপত্তিই আছে। কারণ জঙ্গলের নিয়ম সকলে জানেন না। অন্যান্য পর্যটনস্থলের সঙ্গে জঙ্গলের পরিবেশ গুলিয়ে ফেললে চলে না। অনেকে আবার নাম না জানা পাখির খোঁজে দিনের পর দিন বসে থাকেন জঙ্গলে। তাই জঙ্গলে যেতে হলে কী কী মেনে চলতে হবে, আগে থেকে তার দীর্ঘ তালিকা তৈরি করে সকলের হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন। জানেন কী কী আছে সেই তালিকায়?

Advertisement

১) আগে থেকে বুকিং করে রাখুন

এমনিতেই গোটা বছরের মধ্যে মাত্র একটি সময়ে পশ্চিমবঙ্গ বা দেশের প্রায় সব জঙ্গল, অভয়ারণ্য, জাতীয় উদ্যান বন্ধ থাকে। বন্য জীবজন্তুদের কাছে প্রজননের আদর্শ সময় হল বর্ষাকাল। তাই জুনের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বর মাসের ১৪ বা ১৫ তারিখ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের জন্য সাফারি বন্ধ থাকে। বর্ষার পর খোলা মাত্রই প্রতি বছর পর্যটকদের ঢল নামে জঙ্গলে। তাই সেপ্টেম্বরের শেষে বা অক্টোবরের শুরুতে জঙ্গল সাফারি করতে চাইলে আগে থেকে বুকিং করে রাখতে হবে। এখন থেকেই সব দেখেশুনে রাখা জরুরি।

২) পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখুন

পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে হাতি বা গণ্ডার দেখতে চাইলে জলদাপাড়া, মেন্দাবাড়ি, চিলাপাতা, সিমলিপাল, কুলডিহা। আর যদি বাঘ দেখার ইচ্ছা থাকে, তা হলে বান্ধবগড়, পেঞ্চ— গন্তব্য যা-ই হোক প্রত্যেকের সঙ্গে পরিচয়পত্র থাকা চাই। এই ধরনের অভয়ারণ্য, জঙ্গলগুলিতে চোরাশিকারীদের উপদ্রব এত বেশি যে, সারা দিনে কত জন আনাগোনা করলেন, তার হিসাব রাখে সরকার। নিরাপত্তার কারণেই এই নিয়ম রয়েছে বহু দিন আগে ধরেই।

৩) জঙ্গলে সাফারি করার নিয়ম জেনে রাখুন

বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের বিষয়ে সব জঙ্গলের নিয়মই এক। তবে প্রতিটি জায়গার নিজস্ব সময়সূচি রয়েছে। সাধারণত দিনে দু’বার জঙ্গল সাফারি হয়। তবে সেগুলি বনদফতরের ‘জিপ’ সাফারি। কিন্তু জলদাপাড়া, আসামের কাজিরাঙায় হাতির পিঠে চড়ে সাফারি করার ব্যবস্থাও রয়েছে। এই সাফারিটি কিন্তু দিনের বেলাতেই হয়। কারণ, জঙ্গল ঘুরতে অনেকটা সময় লাগে। সন্ধ্যার দিকে বন্যপ্রাণীরা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসে। সে সময়ে পোষা হাতি নিয়ে জঙ্গলে ঘোরা যায় না।

Image of jungle safari

বন্যপ্রাণী দেখতে দলে দলে পর্যটকেরা ভিড় করেন জঙ্গলে। ফাইল চিত্র।

৪) গাড়ি থেকে ভুলেও নীচে নামবেন না

খোলা জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো বন্যপ্রাণ দেখার কৌতূহল এবং উত্তেজনা দু’টিই থাকে। তাই বলে অতিরিক্ত উৎসাহ দেখিয়ে যেখানে গাড়ি থেকে নামার কথা নয়, সেখানে নেমে পড়ার ভুল করবেন না। জঙ্গলের পথে পদে পদে বিপদ লুকিয়ে থাকে। এমন কিছু করবেন না, যা আপনার এবং অন্য সকলের জীবনের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।

৫) উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরবেন না

জঙ্গলে গেলে খুব কায়দার পোশাক না পরাই ভাল। গা ঢাকা কালো বা গাছ-গাছালির মতো রঙের ‘ক্যামোফ্লাজ়’ পোশাক পরে জঙ্গলে যান। এটাই দস্তুর। বন্যপ্রাণীদের চোখে ধুলো দেওয়াই এর মূল উদ্দেশ্য। কারণ, খুব কাছে থাকা কোনও প্রাণী যদি মানুষের অস্তিত্ব টের পেয়ে যায়, তা হলে তাকে আর নাগালের মধ্যে পাওয়া যাবে না।

আরও পড়ুন
Advertisement