Monsoon Trek

কাশ্মীর, হিমাচল, উত্তরাখণ্ড! বর্ষাতে এক টুকরো স্বর্গ মনে হবে এমন ৩ পথে ট্রেকিংয়ে গেলে!

বর্ষা মানেই সজীব, সবুজ, অনাবিল সৌন্দর্যে মোড়া দরাজ প্রকৃতি। এই সময়ে যদি ট্রেকে যেতে চান, তা হলে বেছে নিতে পারেন হিমালয়ের বেশ কয়েকটি জায়গা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৪ ১৮:১২
বর্ষায় হিমালয়ের সৌন্দর্য উপভোগে চলুন ট্রেকিংয়ে।

বর্ষায় হিমালয়ের সৌন্দর্য উপভোগে চলুন ট্রেকিংয়ে। ছবি: সংগৃহীত।

বেড়াতে ভালবাসেন অনেকেই। সেই বেড়ানোরও রকমফেরও হয়। তবে অনেকেই মনে করেন প্রকৃতিকে নিবিড় ভাবে কাছে পেতে গেলে হাঁটা ছাড়া গতি নেই। যাকে বলা হয় ট্রেকিং। পাহাড়ি চড়াই-উতরাই পেরিয়ে হাঁটার সঙ্গে সঙ্গে খুব কাছ থেকে অনুভব করা যায় প্রকৃতির সৌন্দর্য।

Advertisement

যে পথে গাড়ি যায় না, সেই পথে যেতে গেলে ভরসা ট্রেকিং। অনেক দুর্গম পার্বত্য এলাকা শুধু হাঁটা পথেই পাড়ি দেওয়া যায়। অনুভব করা যায় তার অপার্থিব রূপ। সেই রূপের টানে বর্ষায় কোথায় পাড়ি দেবেন, ভেবেছেন কি?

এই ঋতুতে প্রকৃতির বুকে যেন নতুন করে প্রাণ সঞ্চার হয়। ঘন সবুজে ঢাকা পড়ে চারপাশ। পাহাড়ি পথে মেঘের আনাগোনা দেখতে অনেকেই ছুটে যান হিমালয়ের কোলে। জেনে নিন হিমালয়ের কোন পার্বত্য পথে বর্ষাকালেও ট্রেকিং করা যায়।

ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স, উত্তরাখণ্ড

উত্তরাখণ্ডের চমোলিতে বন্য পাহাড়ি ফুলের টানে ছুটে আসেন বহু পর্যটক। এই জায়গা ‘ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স’ নামে পরিচিত। নামেই মালুম হয়, এই উপত্যকা জুড়ে থাকে রকমারি ফুল। জুন মাসে শুরু হয় এই ট্রেকিং। রাস্তা খোলা থাকে জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত। শুধু হিমালয় ও ফুলের রূপ নয়, এই জায়গার আকর্ষণের অন্যতম কারণ, এশীয় কালো ভল্লুক, স্নো লেপার্ড-সহ নানা রকমের বন্যপ্রাণী। উপত্যকায় বয়ে চলেছে পুষ্পবতী নদী। পুষ্পবতী নদীর লাগোয়া পথ ধরে পৌঁছে যাওয়া যায় হেমকুণ্ড সাহিবে। শিখ সম্প্রদায়ের কাছে যা পবিত্র তীর্থক্ষেত্র। এ পথের রূপ মন ভোলানো। আর রয়েছে পাহাড়ি গ্রাম। হাঁটা পথে হিমালয়কে নিজের মতো করে উপভোগ করতে পারেন ট্রেকার্সরা।

কী ভাবে যাবেন: জোশীমঠ থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে গোবিন্দঘাট। এখান থেকেই শুরু হয় ‘ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ারর্স’-এর উদ্দেশ্যে যাত্রা। যাত্রা পথ ৪৭ কিলোমিটার। ট্রেকিং ও যাতায়াত মিলিয়ে ৬ দিনের মতো সময় লাগে।

কাশ্মীর গ্রেট লেকস

‘কাশ্মীর গ্রেট লেকস’ ট্রেক।

‘কাশ্মীর গ্রেট লেকস’ ট্রেক। ছবি: সংগৃহীত।

সবুজ ঘাসে ঢাকা দীর্ঘ উপত্যকা, তার মধ্যে ফুটে রয়েছে রকমারি রঙিন ফুল, কোথাও চরছে ভেড়ার দল। সেই পথে হেঁটেই পৌঁছনো যায় বরফঢাকা পাহাড়ের কোলে টলটলে জলের জলাশয়ে।

একটা নয়, একাধিক হ্রদ রয়েছে এখানে। চারপাশ যেন ক্যালন্ডারের পাতার কোনও ছবি। নীল আকাশ, পাহাড়, ফুল সব মিলিয়ে এ পথের আকর্ষণ অমোঘ। ডাল লেক, হাউজ বোট, সোনমার্গ, গুলমার্গের সৌন্দর্য দেখে যদি পর্যটক ভাবেন স্বর্গ এখানেই, তা হলে বলতে হবে, তিনি কাশ্মীরের সেই রূপ দেখেননি। কাশ্মীর গ্রেট লেকস-এর ট্রেকিং শুরু করলে, মনে হবে, পৃথিবীতে স্বর্গ বলে যদি কিছু থাকে, তবে তা এখানেই।

ঘণ্টার পর ঘণ্টা পাহাড়ি চড়াই পেরোনোর ধকল নেওয়া সহজ কথা নয়। অনেকেই ক্লান্ত হয়ে ভাবেন আর বোধহয় পারবেন না। তবে সেই কষ্ট সহ্য করতে পারলে অপেক্ষা করবে প্রকৃতির অসীম, অনন্ত সৌন্দর্য। শ্রীনগর থেকে ৭৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে পাহাড়ের বুকে রয়েছে স্ব্চ্ছ জলের একাধিক জলাশয়। সোনমার্গ হয়ে যেতে হয় এই পথে। সাত দিনের ট্রেকে দেখে নেওয়া যায় বিশনসর হ্রদ, গাডসর হ্রদ, সৎসর হ্রদ, গঙ্গাওল হ্রদ।

কী ভাবে যাবেন: সোনমার্গ থেকে ট্রেকিং শুরু হয়। ৭-৮ দিন সময় লাগে। জুন থেকে সেপ্টেম্বর এই ট্রেকের জন্য ভাল সময়।

হাম্পতা পাস, হিমাচল প্রদেশ

ট্রেক করতে পারেন হাম্পতা পাস।

ট্রেক করতে পারেন হাম্পতা পাস। ছবি: সংগৃহীত।

লাহৌল ও কল্লু উপত্যকার নৈসর্গিক রূপ উপভোগে বর্ষার সেরা ট্রেক হতে পারে হাম্পতা পাস। সরু আঁকাবাঁকা পথ ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তবে লাহৌলের সৌন্দর্য ভুলিয়ে দেবে সমস্ত কষ্ট। রুক্ষ ঊষর ভূমিতে নীল রঙের নদীর বয়ে যাওয়া দেখে মনে হবে, এই রূপের জন্যেই তো ট্রেকে আসা! ৫ দিনের ট্রেক শুরু হয় মানালি থেকে। হাম্পতা পাস থেকে অনেকেই চন্দ্রতাল লেক পর্যন্ত ট্রেক করেন।

কী ভাবে যাবেন: মানালি বেস ক্যাম্প থেকে ট্রেকিং শুরু হয়। দূরত্ব ৩৫ কিলোমিটার। জুনের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বর, হাম্পতা পাস ট্রেকের জন্য আদর্শ সময়।

আরও পড়ুন
Advertisement