Electronic Vehicles

ইলেকট্রিক স্কুটার বা বাইক কেনার কথা ভাবছেন? যে ভুলগুলো করলে পস্তাতে হতে পারে

পেট্রল শুষে নিচ্ছে সংসারের বাজেট? সমাধান ইলেকট্রিক দ্বিচক্রযান। কিন্তু তার জন্য চাই অনেক বিনিয়োগ। পদে পদে ভুল সিধান্ত নিয়ে ঠকে যাওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। রইল দু’চাকা কেনার ১০টি গাইড।

Advertisement
অভ্র রায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০০
Electric two wheeler buying guide

—প্রতীকী ছবি।

মাসের বাজেটের অনেকটাই চলে যায় পেট্রল কিনতে গিয়ে। এই নিয়মিত খরচ বাঁচানোর সব থেকে ভাল উপায় দু’চাকার ইলেকট্রিক বাহনে ভরসা করা। কিন্তু ইলেকট্রিক স্কুটি বা বাইক কিনতে গেলে অনেক বিকল্প, প্রচুর বিভ্রান্তি, খরচ কমার বদলে বেড়ে যাওয়ার ভয়। না, দুশ্চিন্তার বাজেট বাড়াতে হবে না। আপনার জন্য রইল ইলেকট্রিক দ্বিচক্রযান কেনার ১০ গাইড।

Advertisement

১) প্রথমেই দেখুন আপনি যেখানে থাকেন সেখানে আপনার ইভি বা ইলেকট্রিক ভেইকেলটি চার্জ দেওয়ার কি সুবিধা আছে। যদি এমন পরিস্থিতি হয় যে চার্জ দেওয়ার জন্য স্কুটির ব্যাটারি খুলে বাড়ি নিয়ে এসে চার্জ দিতে হবে, তা হলে কেনার আগেই সিদ্ধান্ত নিন। রিমুভেবল ব্যাটারি চালিত স্কুটি নিন। হিরো ও অন্যান্য দু’একটা সংস্থার এমন মডেল বাজারে আছে।

২) ইভি আপনি কতটা ব্যবহার করবেন? দেখা গিয়েছে, আমাদের গড় ব্যবহার ২০-২৫ কিমি প্রতি দিন। কিন্তু বাজারে এক চার্জে ১০০ কিমি বা তার বেশি চলতে পারে এমন স্কুটার সহজলভ্য। আপনার যদি ৮০-৯০ কিমি রেঞ্জ প্রয়োজন হয়, তা হলে দেখে নেবেন তিন কিলোওয়াটের ব্যাটারি প্যাক আছে কি না। কিন্তু যদি ১০০ কিমির বেশি চান, তা হলে চার কিলোওয়াট ব্যাটারি প্যাক আপনার জন্য আদর্শ। তবে একচার্জে আপনার ইভি কত দূর যাবে সেটা অনেকটাই নির্ভর করবে আপনার চালানোর ধরনের উপর।

৩) আজকাল প্ল্যাস্টিকের ব্যবহার সব জায়গায় বাড়ছে। তা হলে ইভিতে বাড়বে না কেন? স্কুটার হালকা রেখে পাল্লা বাড়ানোর মতো চেষ্টা প্রায় সব সংস্থাই করে। তাই এত প্লাস্টিক। কিন্তু যত বেশি প্লাস্টিক তত বেশি সমঝোতা। মেটালিক বিল্ডের স্কুটি খোঁজার চেষ্টা করেই দেখুন না। কম সংখ্যক মডেল হলেও পেয়ে যাবেন।

৪) আর একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্কুটারের মোটর বুঝে নেওয়া। অনেকে সময় দাম কম রাখার জন্য ‘হাব মোটর’ ব্যবহার করা হয়। এই মোটর টায়ারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এটা ব্যবহার করলে ভরকেন্দ্র পিছনের দিকে চলে যায়। এ ছাড়া ব্রেকডাউন বা গরম হয়ে যাওয়ার সমস্যা হতে পারে। এর সমাধান মিড ড্রাইভ মোটর। এক লাখের কমে ইভি নিলে এত না ভাবলেও চলবে। কিন্তু বাজেট বাড়ালে মিড ড্রাইভ মোটর খুঁজুন।

৫) যত দিন যাচ্ছে মানুষ ইভিতে নানা রকম সুবিধা ফিচার চাইছেন। সংস্থাগুলিও দিচ্ছে। কিন্তু মনে রাখবেন যত বেশি ফিচার তত দামের পাল্লা ভারী হবে। তাই চমকপ্রদ ফিচারের দিকে ঝুঁকবেন না, জরুরি ফিচারগুলো আছে কিনা দেখে নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুন।

৬) যে কোনও জিনিস কেনার আগে আফটার সেলস সার্ভিস দেখে নেন তো? মানে আপনার এলাকায় নির্দিষ্ট সংস্থার সার্ভিস সেন্টার আছে কিনা, প্রয়োজনে তাড়াতাড়ি সার্ভিস দেয় কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি। এই জিনিসগুলো স্কুটি কেনার আগে যাচাই করে নিন।

৭) সব থেকে জরুরি জিনিস হল দাম। ইভির জন্য কিছু ইএমপিএ ভর্তুকি আছে। ফলে দাম কমে যায়। তবে হ্যাঁ, এখনও ইলেকট্রিক স্কুটারের দাম পেট্রলচালিত স্কুটারের থেকে বেশি।

৮) ইলেকট্রিক স্কুটির ব্যাটারি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাটারি ওয়ারেন্টি তিন থেকে আট বছরের হয়। এই সময়ের মধ্যে যদি ব্যটারি হেল্‌থ ৮০% এর নীচে চলে যায়, তা হলে কোম্পানি সেটা ওয়ারেন্টির মধ্যে পাল্টে দেবে। এটা কিন্তু আগামী কয়েক বছর মনে রাখতে হবে।

৯) কেনার আগেই জেনে নিন আপনার বাহনের গতি কত হবে? ঘণ্টায় ২৫-৯০ কিমি গতির ইভি পাওয়া যায়। কিন্তু যত গতি বাড়বে, দামও তত বাড়বে।

১০) আপনার বাহন কতটা ওজন নিতে পারে সেটাও জেনে নেবেন। দু’জন মানুষ, ওজন বেশি হলেও বহন করতে পারে তো?

ইলেকট্রিক দু’চাকার অনেক সুবিধা। লাইসেন্স লাগে না, রক্ষণাবেক্ষণের খরচ নামমাত্র ইত্যাদি। কিন্তু অসুবিধাও আছে। পাঁচ-সাত বছর বাদে ব্যাটারি বদলের সময় অনেক খরচ, বেশি জোরে চালানো যায় না ইত্যাদি। সব জিনিসেরই ভাল-মন্দ থাকে। বিষয়গুলি মনে রেখে দোকানে যান, ঠকবেন না।

আরও পড়ুন
Advertisement