Vinesh Phogat

‘মৃত্যুও হতে পারত বিনেশের’! অলিম্পিক্স ফাইনালের আগে ওজন কমানো নিয়ে মুখ খুললেন কুস্তিগিরের কোচ

বিনেশ কেন ওজন কমাতে পারেননি, তা নিয়ে মুখ খুলেছেন তাঁর কোচ অ্যাকোস। তাঁর দাবি, যত রকম চেষ্টা করা সম্ভব ছিল, সব করা হয়েছিল। আরও চেষ্টা করলে বড় বিপদ হয়ে যেতে পারত।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২৪ ১৫:২৯
picture of Vinesh Phogat

বিনেশ ফোগাট। —ফাইল চিত্র।

অলিম্পিক্স ফাইনালের আগের রাতে শরীরের ওজন কমানোর জন্য সব রকম চেষ্টা করেছিলেন বিনেশ ফোগাট। সাড়ে ৫ ঘণ্টা অক্লান্ত পরিশ্রম করার পরেও বিনেশ ১০০ গ্রামের জন্য বাতিল হয়ে যান প্রতিযোগিতা থেকে। তাঁর কোচ উলার অ্যাকোস জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছিল। তার পরও চেষ্টা করলে কুস্তিগিরের মৃত্যু হতে পারত বলে জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

বিনেশ কেন ওজন কমাতে পারেননি, তার উত্তর কুস্তিগিরের কোচ এবং ট্রেনার বলতে পারবেন বলে জানিয়েছিলেন ভারতীয় অলিম্পিক সংস্থার (আইওএ) সভাপতি পিটি ঊষা। সেই প্রসঙ্গে অ্যাকোস বলেছেন, ‘‘সেমিফাইনালের পর বিনেশের ওজন ২.৭ কিলোগ্রাম বৃদ্ধি পেয়েছিল। ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট বিভিন্ন শারীরিক কসরতের পরও দেখা যায় বিনেশের ওজন ১.৫ কেজি বেশি। তার পর ৫০ মিনিট সওনা নেয় বিনেশ। ওর শরীরে যাতে কোনও অতিরিক্ত জল না থাকে, তা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলাম আমরা। মধ্য রাত থেকে সকাল ৫.৩০ পর্যন্ত সব রকম চেষ্টা করেছিলাম। ওজন কমানোর জন্য যা যা করা সম্ভব, সব করা হয়েছিল। ২০ মিনিট পরিশ্রম করার পর ২-৩ মিনিটের বিশ্রাম নিয়েছিল। আবার পরিশ্রম শুরু করেছিল। অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে একটা সময় অসুস্থ হয়ে পড়ে বিনেশ। ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। তবে অল্প সময়ের মধ্যে সামলে নিয়ে আবার ওজন কমানোর চেষ্টা শুরু করেছিল। তার বেশি সম্ভব ছিল না। আমার মনে হয়েছিল, আরও কিছু করতে গেলে বিনেশ মারাও যেতে পারে।’’

কোচ জানিয়েছেন, প্রতিযোগিতা থেকে বাতিল হওয়ার পর কান্না ভেঙে পড়েছিলেন বিনেশ। অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালেও ভর্তি করাতে হয় সে প্রসঙ্গে অ্যাকোস বলেছেন, ‘‘হাসপাতাল থেকে ফেরার পর সে দিন রাতে বিনেশের সঙ্গে কথা হয়েছিল। বিনেশ বলেছিল, ‘কোচ দুঃখ পাবেন না। আপনিই তো আমাকে বলেছিলেন, কোনও কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হলে বা বাড়তি শক্তির প্রয়োজন হলে একটা কথা ভাবতে। আমি বিশ্বের সেরা মহিলা কুস্তিগিরকে (জাপানের ইউ সুসাকি) হারিয়েছি। আমি আমার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পেরেছি। বিশ্বের অন্যতম সেরা হিসাবে নিজেকে প্রমাণ করতে পেরেছি। আমরা প্রমাণ করেছি সঠিক পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে পারলে ফল পাওয়া যায়। পদক বা মঞ্চ গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারোও পারফরম্যান্স ছিনিয়ে নেওয়া যায় না।’ মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত লাগছিল। অথচ বিনেশ আমাকে এই কথাগুলো বলে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেছিল রাতে!’’

বিনেশের কাছে অলিম্পিক্স পদকের গুরুত্ব কতটা বোঝাতে তাঁর কোচ একটি ঘটনার কথা বলেছেন। অ্যাকোস বলেছেন, ‘‘গত বছর আন্দোলনের সময় পদক বিসর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ওরা। সে সময় বজরং পুনিয়া এবং সাক্ষী মালিককে অলিম্পিক্স পদক বিসর্জন না দেওয়ার কথা বলেছিল বিনেশ। এই পদকের পিছনে কঠোর পরিশ্রমের কথা মনে করিয়ে দিয়েছিল ওদের। আবেগের বশে যাতে ওরা অলিম্পিক্স পদক বিসর্জন দিয়ে না ফেলে, তা নিশ্চিত করতে ওদের পদক দু’টি নিয়ে নিজের ব্যাগে আলাদা করে রেখে দিয়েছিল বিনেশ। বুঝতেই পারছেন ফাইনালে উঠেও অলিম্পিক্স পদক না পাওয়া কতটা ধাক্কা দিয়েছে ওকে। এই পরিস্থিতির মধ্যেও আমাকে ঠিক রাখার চেষ্টা করে গিয়েছিল।’’

ছাত্রীর মনের জোর বিস্মিত করেছিল অ্যাকোসকে। অলিম্পিক্স পদক জিততে না পারার আফশোস থাকলেও ভারতীয় কুস্তিগিরের লড়াইয়ে খুশি তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement