মুলারের মৃত্যুর রেশ কাটেনি ফুটবলবিশ্বে
Gerd Muller

Gerd Muller: আমার ভাইকে হারালাম, শোক বেকেনবাউয়ারের

বিশ্বফুটবলে ‘ডের বম্বার’ নামেই বেশি পরিচিত মুলারের অবিশ্বাস্য গোলের খিদে বিশ্বের সমস্ত দলের কাছে ছিল রীতিমতো ত্রাসের।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২১ ০৫:১৯
কিংবদন্তি: সোনার বুট নিয়ে গার্ড মুলার।

কিংবদন্তি: সোনার বুট নিয়ে গার্ড মুলার। ফাইল চিত্র

শেষ হয়ে গেল এক সোনালি অধ্যায়ের। রবিবার প্রয়াত হলেন জার্মান কিংবদন্তি গার্ড মুলার। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। গত ছ’বছর ধরে অ্যালজ়াইমার্স আক্রান্ত হয়ে তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ শয্যাশায়ী। রেখে যান স্ত্রী উসসি এবং কন্যা নিকোলকে।

বিশ্বফুটবলে ‘ডের বম্বার’ নামেই বেশি পরিচিত মুলারের অবিশ্বাস্য গোলের খিদে বিশ্বের সমস্ত দলের কাছে ছিল রীতিমতো ত্রাসের। দীর্ঘসময় এক সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করা প্রাক্তন সতীর্থ ফ্রানৎজ় বেকেনবাউয়ার সোমবার বলেছেন, “একইসঙ্গে এক দুর্দান্ত ফুটবলার এবং মাঠের বাইরে প্রিয় ভাইকে হারালাম। যে কোনও দূরূহ জায়গা থেকে ওর গোল দেখে অনেক সময় আমিও চমকে উঠেছি। ওই ভাবেও কী গোল করা যায়! বায়ার্ন মিউনিখের বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তার প্রেক্ষিতে তো ছিল মুলারের অবিশ্রান্ত গোলের ঝড়। তা বাদ দিলে আর কিছুই তো বলার থাকে না। সেই বম্বারের গর্জনটাই থেমে গেল।”

Advertisement

২০১৫ সালে অ্যালজ়াইমার্স ধরা পড়ার পরেই ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন ১৯৭৪ বিশ্বকাপ ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে গোলদাতা। গত বছরের নভেম্বরে জার্মানির এক সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্ত্রী বলেছিলেন, “চব্বিশ ঘণ্টা একটা মানুষ চুপ করে বিছানায় শুয়ে থাকে! শুধুমাত্র চোখের ইশারায় হ্যাঁ অথবা না কথাটা বলে আর মিষ্টি করে হাসে। যত বার ওর দিকে তাকিয়েছি, আমি যেন স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছি। এই কী সেই মুলার, যে কি না প্রতিপক্ষ শিবিরের কাছে ছিল সাক্ষাৎ এক দুঃস্বপ্ন।” রবিবার শেষ হয়ে যায় সেই লড়াই।

কলকাতার সঙ্গেও ছিল মুলারের সম্পর্ক। ২০০৫ সালে আইএফএ শিল্ড এবং ২০০৯ সালে বায়ার্ন মিউনিখের অনূর্ধ্ব-২৩ দল নিয়ে মুলার এসেছিলেন। সেই দলে ছিলেন থোমাস মুলার।

ফুটবলার মুলারের পরিসংখ্যান নিয়ে এখনও গবেষণা চলে ফুটবল পরিমণ্ডলে। বিশ্বকাপে ইতিহাসে মিরোস্লাভ ক্লোসে (১৬) এবং ব্রাজিলের রোনাল্ডোর (১৫) পরেই গোলসংখ্যার বিচারে রয়েছেন মুলার (১৪)। ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে ১০টি গোল করে সোনার বুটও পেয়েছিলেন তিনি।

বায়ার্নের হয়ে পরিসংখ্যান আরও বেশি ঈর্ষণীয়। ৬০৭ ম্যাচে ৫৪২ গোল করার সঙ্গে ক্লাবকে দিয়েছেন চারবার বুন্দেশলিগা ট্রফি। এ ছাড়া সাফল্যের তালিকায় রয়েছে ডিএফবি পোকাল কাপ (৪বার), ইউরোপিয়ান কাপ (৩বার), ইউরোপিয়ান কাপ উইনার্স কাপ, ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ। দু’বার জার্মানির বর্ষসেরা ফুটবলারের সম্মান পেয়েছেন। ১৯৭০ সালে পান বালঁ দ্যর খেতাব। এমনই ঝলমলে পরিসংখ্যান সম্পর্কে প্রাক্তন জার্মান তারকা কার্ল হেইঞ্জ রুমেনিগে বলেছিলেন, “সর্বকালের সেরা স্ট্রাইকার তো বটেই, মুলার প্রতিপক্ষের পেনাল্টি বক্সের মধ্যে ছিল মহম্মদ আলির মতো হিংস্র এবং ভয়ঙ্কর।” ফুটবল সম্রাট পেলে গণমাধ্যমে লিখেছেন, “যাঁরা খেলাধুলো ভালবাসেন, তাঁদের কাছে এই দিন শোকের হয়ে থাকবে। বিশেষ করে, গার্ডের মতো উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক যখন আমাদের ছেড়ে চলে যায়, সেই শূন্যস্থান আর কখনও ভরাট হতে পারে না। যাঁরা ফুটবলকে ভালবাসেন, প্রশ্নাতীত ভাবে মুলার তাঁদের কাছে সেরা পথপ্রদর্শক ছিল, আছে এবং থেকেও যাবে। ওর নাম ফুটবলের ইতিহাসে থেকে যাবে অমর।”

Advertisement
আরও পড়ুন