মেরি কম। —ফাইল চিত্র।
গত বছর এশিয়ান গেমসে ভারতীয় ক্রীড়াবিদেরা রেকর্ড সংখ্যক ১০৭টি পদক জিতেছিলেন। তবু দেশের তরুণ খেলোয়াড়দের সমালোচনা শোনা গেল মেরি কমের মুখে। ছ’বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন মহিলা বক্সারের বক্তব্য, দেশের তরুণ খেলোয়াড়দের মধ্যে জেতার খিদে অনেক কম। তরুণদের মানসিকতায় তিনি হতাশ। নিজে খেলা চালিয়ে যেতে পেশাদার বক্সিংয়ে নামার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তরুণ খেলোয়াড়দের সমালোচনা করে নিজের উদাহরণ দিয়েছেন মেরি। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাকে দেখুন। ৪১ বছর বয়সেও আমি দারুণ ফিট। আরও আরও সাফল্য চাই আমি। এখনও পদক জেতার খিদে রয়েছে আমার মধ্যে। অথচ তরুণ প্রজন্ম ওরা একটা পদক জিতেই সন্তুষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এক বার চ্যাম্পিয়ন হয়েই শেষ হয়ে যাচ্ছে ওদের খিদে। এটাই পার্থক্য। ওদেরও উচিত আমার মতো খিদে ধরে রাখা। চেষ্টা করলে ওরা কিন্তু দেশকে আরও পদক দিতে পারে।’’ মেরির মতে যাঁরা আন্তর্জাতিক এবং বিশ্ব পর্যায়ে সাফল্য পাচ্ছেন, তাঁদের উচিত আরও উন্নতি করা। যত দিন সম্ভব দেশের জন্য পদক জেতার চেষ্টা করা। কিন্তু সেই চেষ্টাটাই তিনি দেখছেন না তরুণ প্রজন্মের মধ্যে।
পেশাদার বক্সিংয়ে নাম লেখানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন মেরি। তিনি বলেছেন, ‘‘এই বয়সেও আমি লড়াই করতে চাই। লড়াইয়ের জন্য আমি প্রস্তুত। বাকি খেলোয়াড়দের থেকে আলাদা হওয়াই লক্ষ্য আমার। ৪১ বছর বয়স হয়ে গিয়েছে আমার। এ বছর থেকে আর কোনও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারব না। প্রতিযোগিতায় নামার ক্ষেত্রে বয়সের বাধা রয়েছে। তবে পেশাদার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারব। আরও দু’তিন বছর খেলতে চাই আমি।’’ মেরি মনে করেন বিশ্ব পর্যায়ে তাঁর সাফল্যে ভারতের বহু মেয়েকে বক্সিংয়ে আকৃষ্ট করেছে। প্রাক্তন বিশ্বজয়ী বলেছেন, ‘‘আমি কঠোর পরিশ্রমের পুরস্কার পেয়েছি। কত মেরি কম উঠে আসার জন্য লড়াই করছে। উঠেও আসছে। ওদের দেখলে আমার গর্ব হয়। বহু মেয়ে আমার দেখানো পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এক জন মহিলা, এক জন মা এবং এক জন ভারতীয় হিসাবে গর্ব অনুভব করি।’’
মেরির বক্তব্য, গত দু’দশকে দেশের ক্রীড়া পরিকাঠামো অনেক উন্নত হয়েছে। সেই সুযোগ কাজে লাগানো উচিত তরুণ খেলোয়াড়দের। তিনি বলেছেন, ‘‘২০০১ সালে যখন শুরু করেছিলাম, তখন মহিলাদের বক্সিং সম্পর্কে কেউ জানত না। এখন তো সুযোগ-সুবিধা অনেক বেড়েছে। সাফল্যের জন্য কঠোর প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ সাফল্যের খিদে এবং ইচ্ছা।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘ক্রিকেট, ফুটবল বা বাস্কেটবলের মতো খেলায় লড়াইয়ে ফেরার সুযোগ পাওয়া যায়। কিন্তু ব্যক্তিগত খেলায় অনেক সময় এক সেকেন্ডেই জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়ে যায়। তাই মাথায় রাখতে হয়, যাই হোক না কেন পদক জিততেই হবে। কারণ জিততে না পারলে কোনও কিছুর দাম নেই।’’