আইপিএলে লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে বিধ্বংসী মেজাজে ঋদ্ধিমান সাহা। ছবি: পিটিআই
প্রথম বল থেকেই মারমুখী মেজাজে ছিলেন তিনি। দেখে মনে হচ্ছিল, ব্যাট হাতে নির্বাচকদের বার্তা দিতেই মাঠে নেমেছেন। যত ক্ষণ মাঠে ছিলেন তত ক্ষণ ঋদ্ধিমান সাহা শো। অপর প্রান্তে থাকা শুভমন গিলকে দেখে মনে হচ্ছিল, ঋদ্ধির ব্যাটিং উপভোগ করতে নেমেছেন তিনি। মাত্র ২০ বলে অর্ধশতরান করেন ঋদ্ধি। সুযোগ ছিল আইপিএলে নিজের দ্বিতীয় শতরানের। কিন্তু অল্পের জন্য হাতছাড়া হল সেই শতরান।
ঋদ্ধিকে নিয়ে বার বার সমালোচনা হয়েছে। তাঁর উইকেটকিপিং নিয়ে কোনও প্রশ্ন না উঠলেও প্রশ্ন উঠেছে তাঁর ব্যাটিং নিয়ে। ভাল শুরু করলেও লম্বা ইনিংস খেলতে পারেন না বলে অভিযোগ উঠেছে ঋদ্ধির বিরুদ্ধে। ব্যাটিংয়ের জন্য ভারতের টেস্ট দল থেকে জায়গা হারিয়েছেন তিনি। সব সমালোচনা সাবরমতীর জলে ফেলে দিলেন ঋদ্ধি। সেই সঙ্গে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের আগে দলে জায়গা পাওয়ার দাবি আরও পাকা করলেন বাঙালি উইকেটরক্ষক। এ বার কি তাঁর দিকে তাকাবেন নির্বাচকরা? চোটে ছিটকে যাওয়া লোকেশ রাহুলের বদলে কি দলে জায়গা পাবেন ঋদ্ধি?
এ বারের আইপিএলে ঋদ্ধিকে লাইসেন্স দিয়ে রেখেছে গুজরাত টাইটান্স। তাঁর কাজ প্রথম বল থেকেই বড় শট খেলা। জুড়িদার শুভমনেই কাজ ইনিংস ধরে খেলা। লখনউয়ের বিরুদ্ধেও সেটাই শুরু করেন ঋদ্ধি। প্রথম ওভারে মহসিন খানকে পর পর দুটো চার মেরে শুরু। তার পরে আর থামানো গেল না শিলিগুড়ির পাপালিকে।
পেসার, স্পিনার কাউকে রেয়াত করলেন না ঋদ্ধি। একের পর এক বল উড়ে গেল নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে। কোনও স্লগ নয়, ক্রিকেটীয় শটে রান করতে থাকেন ঋদ্ধি। পাওয়ার প্লে-র সুবিধা কাজে লাগান তিনি। অপর প্রান্তে থাকা শুভমন তখন দর্শর। তিনিও উপভোগ করছেন ঋদ্ধি শো।
পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে যশ ঠাকুরকে লং অনের উপর দিয়ে ছক্কা মেরে অর্ধশতরান করেন ঋদ্ধি। এ বারের আইপিএলে বেশ কয়েকটি ম্যাচে শুরুটা ভাল করলেও ৫০ পার করতে পারেননি। এই ম্যাচে করলেন। সেই সঙ্গে দু’টি নজিরও গড়লেন তিনি। এ বারেরই আইপিএলে পাওয়ার প্লে-তে সব থেকে বেশি রান (বিনা উইকেটে ৭৮) করলেন ঋদ্ধি-শুভমন জুটি। যদি তার মধ্যে মাত্র ২২ রান শুভমনের। এ বারের আইপিএলে পাওয়ার প্লে-তে ব্যক্তিগত সব থেকে বেশি রানও করলেন ঋদ্ধি( ২৩ বলে ৫৪)।
শতরান করার সুযোগ ছিল ঋদ্ধির। সময়ও ছিল অনেক। কিন্তু দলের জন্য খেলছিলেন তিনি। আবেশ খানকে স্কোয়্যার লেগ অঞ্চলে ছক্কা মারতে গিয়ে ৪৩ বলে ৮১ করে আউট হন ঋদ্ধি। তিনি মারেন ১০টি চার ও চারটি ছক্কা। অর্থাৎ, ৮১ রানের মধ্যে ৬৪ রান এসেছে বাউন্ডারিতে। ঋদ্ধি দেখিয়ে দিয়েছেন, এখনও একার কাঁধে দলকে টেনে নিয়ে যেতে পারেন তিনি।