Wriddhiman Saha

Wriddhiman: গেল-গিলক্রিস্টের মতোই আক্রমণাত্মক ওপেনিং ব্যাটার ঋদ্ধিমান, এগিয়ে রোহিত-ধবনদের থেকে

ঋদ্ধিমান সাহার ব্যাটিং নিয়ে অনেকে সমালোচনা করেন। আপাত শান্ত স্বভাবের ঋদ্ধিমানের আইপিএল পরিসংখ্যান কিন্তু লজ্জা দেবে রোহিত, ধবনদেরও।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২২ ১৫:২৬
ঋদ্ধিমান সাহা।

ঋদ্ধিমান সাহা। ছবি: আইপিএল

কুড়ি ওভারের ক্রিকেট মানেই রানের বন্যা। পাওয়ার প্লে-র সময় রান ওঠে আরও দ্রুত। যে সব ব্যাটাররা বড় শট নিতে পারেন সাধারণত তাঁরাই টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ইনিংস শুরু করার দায়িত্ব পান। যাঁরা এই দায়িত্ব পান, তাঁরা সকলেই কিন্তু দারুণ আগ্রাসী ব্যাটিং করতে পারেন না। যাঁরা পারেন, তাঁদের মধ্যেই রয়েছেন বাংলার ঋদ্ধিমান সাহা।

আইপিএলের পরিসংখ্যান বলছে ইনিংস শুরু করতে নেমে ঋদ্ধিমানের আগ্রাসন অবাক করতে পারে অনেককেই। আপাত শান্ত স্বভাবের ব্যাটার ঋদ্ধিমান কম যান না ক্রিস গেল, অ্যাডাম গিলক্রিস্টদের থেকে। আইপিএলের প্রথম ছয় ওভারের মধ্যে অর্থাৎ পাওয়ার প্লে-তে যে ব্যাটাররা কমপক্ষে ৫০০ বল খেলেছেন, তাঁদের নিয়ে করা হয়েছে একটি সমীক্ষা। এমন ব্যাটারদের মধ্যে মাত্র ১০ জন ওভার প্রতি আট বা তার বেশি রান করতে পেরেছেন। তালিকার নবম স্থানে রয়েছে বাংলার উইকেটরক্ষক-ব্যাটারের নাম। অষ্টম স্থানে গেল এবং দশম স্থানে গিলক্রিস্ট। এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে ঋদ্ধিমান কতটা আক্রমণাত্মক ব্যাটার।

Advertisement

আইপিএলের পাওয়ার প্লে-তে ভারতীয় ব্যাটারদের মধ্যে ঋদ্ধিমানের থেকেও দ্রুত গতিতে রান করেছেন পৃথ্বী শ, বীরেন্দ্র সহবাগ, রাহুল ত্রিপাঠি এবং সূর্যকুমার যাদব। ২০২০ আইপিএলের শেষ দিকে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের প্রথম একাদশে সুযোগ পান তিনি। কেন উইলিয়ামসনকে খেলানোর জন্য আক্রমণাত্মক উইকটরক্ষক-ব্যাটার জনি বেয়ারস্টোর জায়গায় ঋদ্ধিমানকে খেলানো হয়। দুরন্ত ছন্দে থাকা বেয়ারস্টোর বদলে ঋদ্ধিমানকে খেলানো নিয়ে দলের মধ্যে একাধিক মত ছিল। কিন্তু নিজের দ্বিতীয় ম্যাচেই ঋদ্ধিমান ৪৫ বলে ৮৭ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে দলের সংশয় দূর করেন।

এই ঋদ্ধিমানকে নিয়েই এ বার আইপিএল নিলামের প্রথম দিন কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি আগ্রহ দেখায়নি। দ্বিতীয় দিন তাঁকে নেয় দ্বিতীয় উইকেটরক্ষকের খোঁজে থাকা গুজরাত টাইটান্স। প্রতিযোগিতার প্রথম দিকে ম্যাথু ওয়েডই ছিলেন উইকেটের পিছনে হার্দিক পাণ্ড্যদের প্রথম পছন্দ। কিন্তু তিনি কয়েকটি ম্যাচে রান না পাওয়ায় সুযোগ পান ঋদ্ধিমান। সেই সুযোগ দুর্দান্ত ভাবে কাজেও লাগিয়েছেন তিনি। এখনও পর্যন্ত ৯ ম্যাচে করেছেন ৩১২ রান। এ বারের প্রতিযোগিতায় পাওয়ার প্লে-তে ঋদ্ধিমানের স্ট্রাইক রেট ১৩৮.৫৬। আইপিএলে সব মিলিয়ে তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৩৪.৬৭। তা হলে কেন কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে দলগুলির প্রথম পছন্দ হতে পারেন না দক্ষ উইকেটরক্ষক ঋদ্ধিমান! সমীক্ষা অনুযায়ী মাঝের ওভারগুলোয় এই আগ্রাসন দেখা যায় না ঋদ্ধিমানের ব্যাটিংয়ে। এ বারের আইপিএলে মাঝের ওভারগুলোয় তাঁর স্ট্রাইক রেট ১০১.১৩। আইপিএলে সব মিলিয়ে ১১৩.৯৩।

সমীক্ষা বলছে, পাওয়ার প্লে-তে ১৫৩টি বল খেলে ৬০টি আক্রমণাত্মক শট নিয়েছেন ঋদ্ধিমান। শতাংশের হিসেবে ৩৯। পাওয়ার প্লে-তে অন্তত ১০০ রান করেছেন এমন ব্যাটারদের মধ্যে আক্রমণাত্মক শট খেলার ক্ষেত্রে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন তিনি। প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থানে যশস্বী জায়সবাল (৫২শতাংশ) এবং রাহুল ত্রিপাঠি (৪২ শতাংশ)।

পাওয়ার প্লে-তে বেশি সফল কেন ঋদ্ধিমান। সে উত্তর নিজেই দিয়েছেন বাংলার উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। ঋদ্ধিমান বলেছেন, ‘‘পাওয়ার প্লে-তে ব্যাটিং আমার খেলার ধরনের সঙ্গে বেশি মেলে। সব সময়ই আমি প্রথম ছয় ওভারের ব্যাটিং উপভোগ করি। ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলতে ভাল লাগে। এটা দলকেও সাহায্য করে আর আমিও কিছু অবদান রাখতে পারি। প্রথম ছয় ওভারে একটা জুটি গড়ে কিছু রান করতে পারলে পরের ব্যাটারদেরও সুবিধা হয়। উইকেটে থিতু হওয়ার জন্য ২-৩টে বল বেশি খেলতে পারে ওরা। তাতে দলের বড় রান করার সম্ভাবনা বাড়ে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement