ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ শুভমন গিল (বাঁ দিকে)। তিনিই কি পরবর্তী বিরাট কোহলি? —ফাইল চিত্র
এক জন দলের ওপেনার। দেশের হয়ে হোক বা আইপিএলে, ওপেন করতে নামেন। অন্য জন দেশের হয়ে তিন বা চার নম্বরে খেললেও আইপিএলে ওপেন করেন। শুভমন গিল ও বিরাট কোহলি। এ বারের আইপিএলে দু’জনেই ছন্দে খেলেছেন। তবে বিরাটকে ছাপিয়ে গিয়েছেন শুভমন। তিনি মনে করাচ্ছেন, ২০১৬ সালের বিরাটকে। ভরসা দিচ্ছেন। তবে কি পরবর্তী বিরাট পেয়ে গেল ভারতীয় ক্রিকেট!
২০১৬ সালের আইপিএল বিরাটের সব থেকে ভাল গিয়েছিল। এক মরসুমে ৯৭৩ রান করেছিলেন তিনি। মরসুমে ৪টি শতরান ও ৭টি অর্ধশতরান এসেছিল বিরাটের ব্যাট থেকে। তার মধ্যে হাতে সেলাই নিয়েও একটি শতরান করেছিলেন বিরাট। সে বার কমলা টুপি পেয়েছিলেন বিরাট। গোটা মরসুমে মেরেছিলেন ৮৩টি চার ও ৩৮টি ছক্কার। এখনও পর্যন্ত কোনও মরসুমে সেই রান কেউ টপকাতে পারেননি।
সুযোগ রয়েছে শুভমনের। ২০২৩ সালে তিনি যেন কোহলির সাত বছর আগের সেই খেলাটা খেলছেন। ইতিমধ্যে ৮৫১ রান করে ফেলেছেন শুভমন। ৩টি শতরান ও ৪টি অর্ধশতরান করেছেন। শুক্রবার গুজরাত যদি মুম্বইকে হারায় তা হলে ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে আরও একটি ইনিংস পাবেন শুভমন। কোহলির থেকে ১২২ রান পিছিয়ে তিনি। সেই রান টপকানো কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। এ বারের আইপিএলে শুভমন মেরেছেন ৭৮টি চার ও ৩৩টি ছক্কা। সেই হিসাবেও কোহলির কাছেই রয়েছেন তিনি।
এ তো গেল পরিসংখ্যান। দু’জনের মিল রয়েছে খেলার ধরনেও। সে বার ওপেন করতে নেমে গোটা ইনিংস ধরে খেলার চেষ্টা করতেন কোহলি। শুভমনও এ বার সেটা করছেন। ২০ ওভার ক্রিজে থাকার চেষ্টা করছেন। দায়িত্ব নিয়ে দলকে বড় রানের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। অতিরিক্ত ঝুঁকি নিচ্ছেন না। বল দেখে খেলছেন। যে বল মারার, সেই বল মারছেন। ভাল বলে সিঙ্গল-ডাবলসে স্কোরবোর্ড সচল রাখছেন। এই বয়সেই অনেক পরিণত শুভমন।
কোহলিকে বলা হয় ‘চেজ় মাস্টার।’ রান তাড়া করতে নেমে তাঁর মাথায় ক্যালকুলেটর চলতে থাকে। কী ভাবে শেষ পর্যন্ত দলকে জয়ে নিয়ে যাবেন সেটাই ভাবতে থাকেন। শুভমনও কিন্তু শুধু প্রথম ইনিংসে শতরান করছেন তা নয়, রান তাড়া করতে নেমেও তিন অঙ্কে পৌঁছেছেন। তিনটি শতরানের মধ্যে একটি বিরাটদের বিরুদ্ধেই রান তাড়া করতে নেমে। সেই শতরানের দাপটে এ বারের আইপিএল থেকে ছিটকে গিয়েছেন বিরাটরা। বড় ম্যাচে খেলার ক্ষমতা রয়েছে শুভমনের। যা তাঁকে বাকিদের থেকে আলাদা করেছে।
বিরাটের সঙ্গে মিলও রয়েছে শুভমনের। দু’জনেই ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছেন। ভারতীয় দলে দু’জনের উত্থানই হয়েছে একটি নির্দিষ্ট ক্রমে। কিন্তু এক বার নিজের জায়গা পাকা করার পরে আর পিছনের দিকে তাকাতে হয়নি। বিরাট দলের মধ্যমণি হয়ে উঠেছেন। শুভমনও সেই পথেই হাঁটছেন। সত্যিই হয়তো শুভমনের ব্যাটে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন সমর্থকরা। সত্যিই হয়তো ভারতীয় ক্রিকেটের পরবর্তী বিরাট পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা। বিরাটও শুভমনকে ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যতের বলে মনে করছেন। কারণ, শুভমন শতরান করার পরে সমাজমাধ্যমে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিরাট। তাঁকে ভবিষ্যতের তারকা হিসাবে উল্লেখ করেছেন তিনি।