চেন্নাইয়ের ২২ গজে নীতীশ এবং রিঙ্কুর জুটি জয় এনে দিল কলকাতাকে। ছবি: আইপিএল।
একটা ম্যাচ জিতলেই আইপিএলের প্লে-অফে জায়গা পাকা হয়ে যাবে। এই অবস্থায় ঘরের মাঠে টস জিতে প্রথম ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন চেন্নাই সুপার কিংস অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। তবু কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে বড় রান তুলতে পারল না চেন্নাই। ৬ উইকেটে ১৪৪ রানেই শেষ হল ধোনিদের ইনিংস। জবাবে ৯ বল বাকি থাকতে কেকেআর করল ৪ উইকেটে ১৪৭ রান। মরণবাঁচন ম্যাচে ২ পয়েন্ট তুলে নিয়ে আইপিএলের প্লে-অফের আশা বাঁচিয়ে রাখলেন নীতীশ রানারা।
জয়ের জন্য ১৪৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে দীপক চাহারের অনবদ্য বোলিংয়ে শুরুতেই কোণঠাসা হয়ে যায় কেকেআর। পর পর ফিরে যান রহমানুল্লাহ গুরবাজ (১), বেঙ্কটেশ আয়ার (৯) এবং জেসন রয় (১২)। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও কলকাতাকে ভোগাল টপ অর্ডারের ব্যর্থতা। ৩৩ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর দলের ইনিংসের হাল ধরেন অধিনায়ক নীতীশ এবং রিঙ্কু সিংহ। চাপের মুখে কিছুটা ধরে খেলার চেষ্টা করেন তাঁরা। তুলনায় কিছুটা আগ্রাসী ছিলেন রিঙ্কু। প্রথম দিকে নীতীশ মূলত ২২ গজের এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন। চাপের মুখে মাথা ঠান্ডা রেখে তাঁরাই দলকে পৌঁছে দিলেন জয়ের দরজায়।
চাহার ছাড়া চেন্নাইয়ের কোনও বোলার তেমন কার্যকর বোলিং করতে পারলেন না। ফলে চাহারের তৈরি করা শুরুর চাপ সহজেই সামলে নিলেন নীতীশ, রিঙ্কুরা। দলকে প্রায় জয়ের দরজায় পৌঁছে দিয়ে আউট হলেন রিঙ্কু। ৪৩ বলে ৫৪ রান এল তাঁর ব্যাট থেকে। মারলেন ৪টি চার এবং ৩টি ছক্কা। চতুর্থ উইকেটে তাঁদের জুটিতে উঠল ৯৯ রান। রিঙ্কু রান আউট হলেন ৫৪ রান করে। নীতীশ অপরাজিত থাকলেন ৪৪ বলে ৫৭ রান করে। মারলেন ৬টি চার এবং ১টি ছক্কা। চাহার ২৭ রানে ৩ উইকেট নিলেও চেন্নাইয়ের আর কোনও বোলার উইকেট পেলেন না।
ইনিংসের শুরুটা খারাপ করেননি দুই ওপেনার রুতুরাজ গায়কোয়াড় এবং ডেভন কনওয়ে। তবে বড় রান করতে পারলেন না কেউই। রুতুরাজ আউট হলেন ১৩ বলে ১৭ রান করে। কনওয়ের ব্যাট থেকে এল ২৮ বলে ৩০ রান। অজিঙ্ক রাহানে (১৬) এবং অম্বাতি রায়ডুও (৪) দলের ইনিংসকে ভরসা দিতে পারলেন না। ভাল শুরুর পরেও ধারাবাহিক ব্যবধানে উইকেট হারানোয় চেন্নাইয়ের রান তোলার গতি কমে যায়। দ্রুত ফিরলেন মইন আলিও (১)। কলকাতার দুই স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী এবং সুনীল নারাইন এমএ চিদম্বরম স্টেডিয়ামের মন্থর ২২ গজে চাপে রাখলেন চেন্নাইয়ের ব্যাটারদের।
ধোনির দলকে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছে দেয় শিবম দুবে এবং রবীন্দ্র জাডেজার ইনিংস। জাডেজা করলেন ২৪ বলে ২০ রান। শিবম শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৩৪ বলে ৪৮ রান করে। তাঁর সঙ্গে শেষে উইকেটে ছিলেন ধোনি (অপরাজিত)। চেন্নাইয়ের ইনিংসের ১৯.৪ ওভারে জাডেজা আউট হতেই গর্জে ওঠে স্টেডিয়ামের গ্যালারি। ব্যাটার ধোনিকে দেখার উচ্ছ্বাসে ঢাকা পড়ে যায় জাডেজার আউটের হতাশা। চেন্নাই জনতা যেন খুশিই হল জাডেজা আউট হওয়ায়!
রবিবার কলকাতার সফলতম বোলার নারাইন। প্রতিযোগিতার শেষ পর্যায় এসে অবশেষে চেনা ছন্দে দেখা গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের অলরাউন্ডারকে। ১৫ রান দিয়ে ২ উইকেট নিলেন চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে। ৩৬ রান ২ উইকেট বরুণেরও। তবে কেকেআরের আর এক স্পিনার সুযশ শর্মার রহস্য ধরা পড়ে যাচ্ছে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের সামনে। একটি করে উইকেট নিলেন শার্দূল ঠাকুর এবং বৈভব অরোরা।