আইপিএলের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচের আগে ঘরের মাঠ নিয়ে মুখ খুললেন কেকেআর কোচ। —ফাইল ছবি।
শনিবার আইপিএলের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ খেলবে কলকাতা নাইট রাইডার্স। প্রতিপক্ষ লখনউ সুপার জায়ান্টস। শনিবার ইডেনে জিততে পারলে প্লে-অফে যাওয়ার আশা বেঁচে থাকবে কলকাতার। হার মানেই এ বারের মতো আইপিএল অভিযান শেষ হয়ে যাবে কেকেআরের। এই ম্যাচের আগে, ‘যত ক্ষণ শ্বাস, তত ক্ষণ আশ’— এই নীতিতে ভরসা রাখছেন চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতরা।
শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন কেকেআর কোচ। জানালেন প্লে-অফের কথা মাথায় রেখেই মাঠে নামবে তাঁর দল। পণ্ডিত বলেছেন, ‘‘আইপিএলে যে কোনও দলের প্রাথমিক লক্ষ্য থাকে প্লে-অফ পর্বে খেলা। আমরাও আলাদা নই। আমাদের হাতে আর একটাই ম্যাচ রয়েছে। আমরা পয়েন্ট টেবিলের দিকে তাকাতে চাইছি না। শুধু ম্যাচ জেতার কথা ভাবছি। আগের ম্যাচের ছন্দ ধরে রাখতে চাই। জয় দিয়ে লিগ পর্ব শেষ করাই লক্ষ্য আমাদের।’’ এই ম্যাচের জন্য কি আলাদা কোনও পরিকল্পনা রয়েছে আপনার? কেকেআর কোচ বলেছেন, ‘‘অবশ্যই আমাদের কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। ইতিবাচক ভাবনা নিয়ে খেলতে নামব আমরা।’’
অধিনায়ক নীতীশ রানা বলেছেন, ইডেনে ঘরের মাঠের সুবিধা পাচ্ছে না কেকেআর। আপনার এ ব্যাপারে কী বক্তব্য? পণ্ডিত বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয়, আপনাদের বুঝতে কোথাও ভুল হয়েছে। ঘরের মাঠে আমরা কিছু প্রত্যাশা করি। বহু বছর ধরে কোচিং করাচ্ছি। সব কোচ বা অধিনায়কেরই এই প্রত্যাশা থাকে। ঘরের মাঠে সবাই জিততে চায়। আমরা ইডেনের পিচ বা অন্য বিষয় নিয়ে কথা বলছি না। আমরা এখানে কিছু ম্যাচ জিততে না পারার কথা বলছি। দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটা সত্যি যে, আমরা ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা কাজে লাগাতে পারিনি। পুরো প্রতিযোগিতার দিকে তাকালে দেখবেন, অনেক দলই ঘরের মাঠের সুবিধা কাজে লাগাতে পারেনি।’’
ইডেনে আপনারা যেমন উইকেট পেয়েছেন, তাতে কি সন্তুষ্ট? পণ্ডিত বলেছেন, ‘‘আপনারা একই প্রশ্ন করছেন। আগেই বললাম, আমরা এখানে যে ম্যাচগুলো খেলেছি, সেগুলোতে ঘরের মাঠের সুবিধা আমাদের নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু পারিনি আমরা। ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা নিতে না পারা আমাদেরই ব্যর্থতা। আর উইকেটের কথা যদি বলেন, তা হলে বলব সব মাঠের উইকেটেই হঠাৎ পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের উইকেটের চরিত্রও বদলে গিয়েছে। অনেক সময় এ রকম হয়। পিচ নিয়ে কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারে না।’’
গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচের আগে কেকেআর কোচের কাছে প্রশ্ন ছিল, এই পর্যায়ে দাঁড়িয়ে এই মরসুমকে কী ভাবে দেখছেন? আইপিএলে প্রথম বার কোচিং করিয়ে কেমন অভিজ্ঞতা হল? পণ্ডিত বলেছেন, ‘‘আমাদের একটা খেলা বাকি রয়েছে। দু’টি দল ছাড়া বাকি সব দলেরই প্লে-অফ খেলার সম্ভাবনা রয়েছে। বেশ কঠিন প্রতিযোগিতা হয়েছে। আমরা এখনও পর্যন্ত যে পারফরম্যান্স করেছি, তার থেকে অনেক ভাল করা উচিত ছিল। এখনও আমরা ভাল পারফরম্যান্স করার চেষ্টা করব। আমাদের দলের সেই ক্ষমতা রয়েছে। ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে ভাবছি আমরা। প্লে-অফে জায়গা পাওয়া নিয়ে আমরা আশাবাদী।’’
শেষ ম্যাচে দলে কি পরিবর্তন হবে? কেকেআর কোচ বলেছেন, ‘‘এই ম্যাচেও আমাদের কিছু ভাবনা রয়েছে। ম্যাচ শুরু আগে আমাদের হাতে বেশ কিছু সময় আছে। সব রকম সম্ভাবনার কথা মাথায় রাখছি।’’ প্রতিপক্ষ শিবিরে থাকবেন গৌতম গম্ভীর। তিনি কেকেআরকে দু’বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন করেছেন। ইডেন সম্পর্কে অভিজ্ঞ। এটা কি কোনও সমস্যা? পণ্ডিত বলেছেন, ‘‘দেখুন অভিজ্ঞতা অনেকেরই আছে। অনেকেই অনেক বছর ক্রিকেট খেলেছে। সবার প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে। গম্ভীর একটা সময় কেকেআরের অংশ ছিল। কিন্তু এখন সব কিছুই বদলে গিয়েছে। নতুন দিন। নতুন দল। নতুন ম্যাচ। আমার মনে হয় না গম্ভীরের উপস্থিতি দারুণ কিছু প্রভাব ফেলবে। আমরা ওকে নিয়ে ভাবছি না। নিজেদের খেলা নিয়ে ভাবছি। দীর্ঘ দিন ঘরোয়া ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত আছি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জন প্রতিপক্ষ শিবিরে থাকে। আমি প্রতিপক্ষ শিবিরে থাকলে কি এর পর বাংলার দল আমাকে নিয়ে ভাববে?’’
শার্দূল ঠাকুরকে অনেক টাকা দিয়ে কেনা হয়েছিল। তাঁকে কি ঠিক মতো ব্যবহার করা গেল না? আপনারা কি শার্দূলের ভূমিকা কি হবে, সেটাই ঠিক করতে পারেননি? পণ্ডিত বলেছেন, ‘‘এটা আপনাদের মনে হচ্ছে। আগে এক জন কী করেছে, সেটা দিয়ে বিচার করলে হবে না। খেলায় কখনও পারফরম্যান্স ভাল হবে, কখনও খারাপ। সব সময় এক রকম হওয়া সম্ভব নয়। শার্দূল ইডেনে ব্যাট হাতে আমাদের জিতিয়েছে। বল হাতেও সাফল্য পেয়েছে। শার্দূলকে যে কাজ দেওয়া হয়েছিল, সেটা ও করেছে। আমাদের দলে যথেষ্ট ভাল ক্রিকেটাররা রয়েছে। তা-ও প্রত্যাশিত সাফল্য আসেনি। তবে আমরা একটা দল হিসাবে খেলতে পারছি। দলের মধ্যে বোঝাপড়া ভাল। আশা করছি, শনিবার আমরা জয় পাব।’’ পণ্ডিতের বক্তব্য, তাঁদের কিছু পরিকল্পনা কাজে লাগেনি। আবার কিছু পরিকল্পনা কার্যকর হয়েছে। খেলায় এমন হয়।