আইপিএলে দর্শকদের মেনে চলতে হবে নানা বিধিনিষেধ। ছবি: টুইটার।
আইপিএলের দর্শকদের উপর চাপল বিধিনিষেধ। নির্দেশিকা না মানলে সমস্যায় পড়তে হতে পারে ক্রিকেটপ্রেমীদের। দর্শকরা সঙ্গে কী কী রাখতে পারবেন না, তার তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলিকে। কারণ তারাই ম্যাচের আয়োজক হিসাবে টিকিট বিক্রি করে।
আইপিএলকে রাজনীতি মুক্ত রাখতে চায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। তাই সিএএ এবং এনআরসি বিরোধী কোনও পোস্টার বা ব্যানার নিয়ে আইপিএল দেখতে যাওয়া যাবে না। রাজনৈতিক এবং সামাজিক ভাবে স্পর্শকাতর কোনও বিষয়ের উপরই পোস্টার বা ব্যানার নিয়ে ক্রিকেট মাঠে ঢোকার অনুমতি দেয় না বিসিসিআই। তবু এ বারের নির্দেশিকায় বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে সিএএ এবং এনআরসির কথা। শনিবার পর্যন্ত দিল্লি, আমদাবাদ, মোহালি এবং লখনউয়ে আয়োজিত হয়েছে আইপিএলের ম্যাচ। সব ক্ষেত্রেই বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হয়েছিল।
২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর সংসদে পাশ হয়েছিল সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। এই আইনের বলে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তানের মতো দেশগুলির সংখ্যালঘুরা ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের আগে ভারতে বসবাসের জন্য এলে, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এই সব দেশের সংখ্যাগুরুরা অবশ্য এই সুযোগ পাবেন না। অন্য দিকে, এনআরসি বা জাতীয় নাগরিক পঞ্জি সংসদে গৃহীত হয়েছিল ২০০৩ সালে। ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করা হয় এর মাধ্যমে। এনআরসি করা হয়েছে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিতকরণের জন্য। কেন্দ্রের এই দুই পদক্ষেপ নিয়েই রাজনৈতিক বিতর্ক রয়েছে। একাধিক রাজনৈতিক দল সিএএ এবং এনআরসির বিরোধী। দেশের বিভিন্ন অংশে এই দুই ইস্যুতে চলছে আন্দোলন।
কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় এ বছর আবার নিজেদের শহরে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছে ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলি। তা ছাড়া গুয়াহাটি এবং ধরমশালাতেও এ বার আইপিএলের কয়েকটি ম্যাচ হবে। এ বছর ছ’টি রাজ্যে রয়েছে বিধানসভার নির্বাচন। রাজ্যগুলি হল কর্নাটক, ছত্তীসগঢ়, মিজোরাম, মধ্যপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা এবং রাজস্থান। জম্মু-কাশ্মীরেও হতে পারে নির্বাচন। স্বভাবতই রাজনৈতিক আন্দোলন বা কর্মকাণ্ড বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রচারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলি ব্যবহার করতে পারে আইপিএলের মঞ্চ। সেই রাজনীতির আঁচ থেকে ক্রিকেটকে মুক্ত রাখতে সচেষ্ট বিসিসিআই। দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার এক কর্তা বলেছেন, ‘‘আইপিএলের টিকিটের স্বত্ব বা অধিকার সম্পূর্ণ ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলির। এ ব্যাপারে আমাদের কোনও ভূমিকা নেই। স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ হিসাবে আমরা শুধু কিছু পরামর্শ দিতে পারি মাত্র।’’
গত কাতার বিশ্বকাপেও এমন নির্দেশিকা জারি করেছিল ফিফা। রাজনৈতিক বা সাম্প্রদায়িক বক্তব্য যুক্ত যে কোনও ব্যানার, পোস্টার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ব্যক্তিগত আক্রমণ করে এমন ব্যানার বা পোস্টারও। আইপিএলে সে পথেই হেঁটেছে বিসিসিআই। মনে করা হচ্ছে এক দিনের বিশ্বকাপের সময়ও এই নির্দেশিকা জারি করা হতে পারে ক্রিকেটপ্রেমীদে জন্য। শর্ত ভঙ্গ করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কী শাস্তি হতে পারে, তা নিয়ে অবশ্য নির্দিষ্ট ভাবে কিছু জানানো হয়নি। ক্রিকেট কর্তারা চাইছেন, এমন কোনও পরিস্থিতি যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করতে।