পঞ্জাবের উইকেট পড়ার পরে উল্লাস চেন্নাইয়ের ক্রিকেটারদের। ছবি: আইপিএল।
আইপিএলে ব্যাটারদের দাপটে ভাগ বসাতে শুরু করেছেন বোলারেরা। অন্তত ধর্মশালায় চেন্নাই সুপার কিংস বনাম পঞ্জাব কিংসের ম্যাচে সেটা দেখা গেল। দু’দলের বোলারেরাই ভাল বল করলেন। বেশি ভাল করলেন চেন্নাইয়ের বোলারেরা। তাঁদের দাপটে পঞ্জাবকে তাদের ঘরের মাঠে হারাল চেন্নাই। আগের ম্যাচে পঞ্জাবের কাছে হারের বদলা নিল তারা। এই জয়ের ফলে ১২ পয়েন্ট হল চেন্নাইয়ের। আইপিএলের পয়েন্ট তালিকায় এক লাফে তিন নম্বরে উঠে এলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা।
চলতি আইপিএলে প্রথম বার কোনও ম্যাচ হল ধর্মশালায়। টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন পঞ্জাবের অধিনায়ক স্যাম কারেন। আরও একটি ম্যাচে ওপেন করতে নেমে ব্যর্থ অজিঙ্ক রাহানে। ৯ রান করে আরশদীপ সিংহের বলে আউট হন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে রুতুরাজের সঙ্গে জুটি হয় ড্যারিল মিচেলের। ভাল খেলছিলেন তাঁরা। পাওয়ার প্লে কাজে লাগিয়ে বড় শট খেলছিলেন। ৫৭ রানের জুটি হয় দুই ব্যাটারের মধ্যে।
চেন্নাইকে জোড়া ধাক্কা দেন রাহুল চাহার। নিজের প্রথম ওভারেই পর পর দু’বলে রুতুরাজ ও শিবমকে আউট করেন তিনি। রুতুরাজ করেন ২১ বলে ৩২ রান। শিবম আরও একটি ম্যাচে প্রথম বলে শূন্য রানে ফেরেন। বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পাওয়াপ পরে দু’টি ম্যাচেই শূন্য রানে আউট হলেন তিনি। হর্ষল পটেলের বলে ৩০ রান করে আউট হন মিচেল।
মইন আলি ও রবীন্দ্র জাডেজার মধ্যে জুটি হলেও রানের গতি খুব একটা বেশি ছিল না। নির্দিষ্ট ব্যবধানে উইকেট পড়ায় জুটি হচ্ছিল না। মইন ১৭ রান করেন। এই ম্যাচে সুযোগ পাওয়া মিচেল স্যান্টনারও রান পাননি। ৬ উইকেট পড়ার পরেও মহেন্দ্র সিংহ ধোনি নিজে না নেমে শার্দূল ঠাকুরকে নামিয়ে দেন। সেই সিদ্ধান্ত কাজে লাগে। প্রথম দু’বলেই একটি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি। ছক্কার ক্ষেত্রে অবশ্য ফিল্ডার শশাঙ্ক সিংহের দোষ। হাতের ক্যাচ ছেড়ে দেন তিনি।
শেষ চার ওভারে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন জাডেজা ও শার্দূল। কয়েকটি বড় শট খেলেন তাঁরা। ১৯তম ওভারের চতুর্থ বলে আউট হন শার্দূল। ব্যাট করতে নামেন ধোনি। প্রথম বলেই তাঁকেও বোল্ড করেন হর্ষল। এ বারের আইপিএলে এই প্রথম বার শূন্য রানে আউট হলেন ধোনি। শেষ ওভারে জাডেজা কয়েকটি বড় শট খেলেন। চেন্নাইয়ের রানকে ১৬০ পার করান তিনি। ৪৩ রান করে আরশদীপের বলে আউট হন জাড্ডু।
জবাবে দ্বিতীয় ওভারেই পঞ্জাবকে জোড়া ধাক্কা দেন তুষার দেশপাণ্ডে। একই ওভারে দুই বিদেশি জনি বেয়ারস্টো ও রিলি রুসোকে আউট করেন তিনি। চার নম্বরে নামা শশাঙ্ক সিংহ ও প্রভসিমরন সিংহ পাল্টা আক্রমণের পথে যান। পাওয়ার প্লে-র বাকি ওভারগুলিতে রান ওঠে। দু’জনেই বড় শট খেলছিলেন।
পাওয়ার প্লে শেষে চেন্নাইয়ের স্পিনারেরা বল করতে আসার পরে সমস্যায় পড়ল পঞ্জাব। মিচেল স্যান্টনারের বলে বড় শট খেলতে গিয়ে ২৭ রানে ফিরলেন শশাঙ্ক। পরের ওভারে একই ভুল করলেন প্রভসিমরন। জাডেজার বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ৩০ রান করে আউট হলেন তিনি।
জিতেশ শর্মা, কারেন ও আশুতোষ শর্মা এই ম্যাচে রান পাননি। ৬২ রানে ২ উইকেট থেকে ৭৮ রানে ৭ উইকেট পড়ে যায় পঞ্জাবের। বল হাতে নজর কাড়লেন এই মরসুমে প্রথম বার খেলতে নামা সিমরজিৎ সিংহ। তাঁর গতি সমস্যায় ফেলল ব্যাটারদের। ক্রমাগত উইকেট পড়লেও খেলার ধরন বদলায়নি পঞ্জাব। হর্ষল, রাহুলরাও বড় শট খেলার চেষ্টা করছিলেন।
হরপ্রীত ব্রার ও রাহুল চেষ্টা করলেও দলকে জেতাতে পারেননি। তাঁরা হারের ব্যবধান খানিকটা কমান। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৯ রানে শেষ হয় পঞ্জাবের ইনিংস। ২৮ রানে ম্যাচ জেতে চেন্নাই।