শেষ হাসি হাসলেন ধোনিই। ফাইল ছবি
চেন্নাইয়ের ওপেনিং জুটি যতক্ষণ খেলছিল, ততক্ষণ একটু চাপে পড়েছিল কলকাতা। বাকি সময়টা ম্যাচ নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু প্রসিদ্ধ কৃষ্ণের ১৯তম ওভার ম্যাচের রং পাল্টে দিল। ওই ওভারে ২২ রান দিলেন প্রসিদ্ধ। কলকাতার হাত থেকে ম্যাচ বেরিয়ে গেল ওখানেই। শেষ পর্যন্ত চেন্নাইয়ের (১৭২-৮) কাছে ২ উইকেটে হারল কলকাতা (১৭১-৭)। আমিরশাহি-পর্বে তাদের প্রথম হার। অন্যদিকে, মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই জয়ের হ্যাটট্রিক করে আইপিএল-এর শীর্ষে চলে গেল।
আগের দুটি ম্যাচে পরে ব্যাট করে জিতলেও রবিবার টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মর্গ্যান। গত দুই ম্যাচে ওপেনিং জুটি কাজে লাগলেও রবিবার তা দেখা যায়নি। চার বলে ১০ উঠে যাওয়ার পর সঙ্গী বেঙ্কটেশ আয়ারের দোষে রান আউট হন শুভমন গিল। সহজ রান ছিল। কিন্তু বেঙ্কটেশ ইতস্তত করায় ক্রিজে ফিরতে যান শুভমন। ততক্ষণে অম্বাতি রায়ডুর সরাসরি থ্রো স্টাম্প ভেঙে দেয়।
তিন নম্বরে নামা রাহুল ত্রিপাঠি এসে বেঙ্কটেশের সঙ্গে জুটি গড়েন। দু’জনে মিলে দ্বিতীয় উইকেটে ৪০ তোলার পর শার্দূল ঠাকুরের বলে ধোনির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বেঙ্কটেশ। আগের দুই ম্যাচের ছন্দ রবিবার তাঁর ব্যাটে দেখা গেল না। চারে নেমে অধিনায়ক মর্গ্যানও (৮) বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না। কেকেআর তবু যে লড়াই করার জায়গায় পৌঁছল তার পিছনে দায়ী নীতীশ এবং রাহুলের ব্যাট। তিনটি ম্যাচেই উল্লেখযোগ্য অবদান রাখলেন রাহুল। রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে জাডেজার বলে বোল্ড না হওয়ার আগে পর্যন্ত যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিল তাঁকে।
WHAT. A. MATCH! 👌 👌
— IndianPremierLeague (@IPL) September 26, 2021
Absolute scenes in Abu Dhabi as @ChennaiIPL win the last-ball thriller against the spirited @KKRiders. 👏 👏#VIVOIPL #CSKvKKR
Scorecard 👉 https://t.co/l5Nq3WwQt1 pic.twitter.com/Q53ym5uxtI
ধস আটকাতে নীতীশকে ধরে খেলতেই হত। রাসেল এবং দীনেশ কার্তিককে নিয়ে তিনি সেটাই করলেন। শেষের দিকে এসে রাসেল এবং কার্তিক দু’জনেই ঝোড়ো ইনিংস খেলে গেলেন। কেকেআর ১৭১-৬ তুললেও সেই রান খুব নিরাপদ কখনওই মনে হয়নি।
চেন্নাইয়ের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। এত দিনে রুতুরাজ গায়কোয়াড় এবং ফাফ দু’প্লেসি চেন্নাইয়ের ওপেনিং জুটি হিসেবে শক্তিশালী হয়ে উঠেছেন। রবিবারের ম্যাচে তার আরও একটি উদাহরণ দেখা গেল। প্রথম থেকেই কেকেআর বোলারদের উপর চড়াও হলেন তাঁরা। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, লকি ফার্গুসন, আন্দ্রে রাসেল কেউই বাদ যাননি। সুনীল নারাইনের অবস্থা হয় সব থেকে খারাপ। প্রথম দু’ওভারে তিনি ২৫ রান হজম করেন।
SOARING HIGH! ⚡️ ⚡️#VIVOIPL | #CSKvKKR | @imjadeja
— IndianPremierLeague (@IPL) September 26, 2021
Follow the match 👉 https://t.co/l5Nq3WwQt1 pic.twitter.com/hm850kJobu
রুতুরাজ এবং দু’প্লেসি কেউই অর্ধশতরান করতে পারেননি। শুরুটা ভাল করেও মাঝের দিকে ওভারগুলিতে খেই হারিয়ে ফেলেছিল চেন্নাই। রান তোলার গতি অনেকটাই কমে গিয়েছিল। তারই খেসারত দিতে হল। দোষ দিতে হবে চেন্নাইয়ের মিডল অর্ডারকেও। ওপেনারদের হারানোর পর দায়িত্ব নেওয়ার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু কেউই প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ। চালিয়ে খেলে মইন আলি তবু ৩২ করে গেলেন। কিন্তু ধোনি, রায়না, রায়ডু প্রত্যেকেই ব্যর্থ। ১৮তম ওভারে বরুণের দুরন্ত বলে বোল্ড হয়ে গেলেন ধোনি। শুধু তাই নয়, ব্যাট এবং প্যাডের মাঝে যে ফাঁক দিয়ে বল ঢুকে তাঁকে বোল্ড করল, তা দেখে অবাক হয়ে গিয়েছেন কট্টর ধোনিপ্রেমীরাই।
চেন্নাইয়ের মিডল অর্ডার ব্যর্থ হওয়ায় লাভ হয়েছিল কলকাতারই। ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। ১৮তম ওভারে বরুণ দুর্দান্ত বল করে ম্যাচ কলকাতার দিকে নিয়ে এসেছিলেন। সব ভেস্তে গেল প্রসিদ্ধের একটা ওভারে। ওই ওভারে জাডেজা তাঁকে দুটি ছয় এবং দুটি চার মারলেন। এক ওভারে প্রসিদ্ধ দিলেন ২২ রান। পরের ওভারে জাডেজা ফিরলেও ম্যাচ ততক্ষণে সিএসকে-র পকেটে। শেষ মুহূর্তে বাজিমাত করে গেলেন ধোনির দলের বিশ্বস্ত যোদ্ধা।
রবিবার বোলিংও করতে দেখা গেল বেঙ্কটেশকে। এক ওভারে মাত্র পাঁচ রান দিলেন। তাঁকে খেলতে সমস্যায় পড়েছিলেন চেন্নাই ব্যাটাররা। কেন যে মর্গ্যান পরের দিকে তাঁকে আনলেন না তা দুর্বোধ্য।