Tennis

French Open: খেলার মাঝেই প্যানিক অ্যাটাক, ঠিক কী হয়েছিল প্রাক্তন ফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়নের?

ফরাসি ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার মাঝেই প্যানিক অ্যাটাক হয় সিমোনা হালেপের। প্রথম সেট জিতেও পরের দু’সেট খুইয়ে ম্যাচ হারেন তিনি।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২২ ১১:৩০
এ বারের ফরাসি ওপেন থেকে বিদায় হালেপের।

এ বারের ফরাসি ওপেন থেকে বিদায় হালেপের। ছবি: টুইটার

প্রথম সেট জেতার পরে মনে হচ্ছিল সহজেই ফরাসি ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডে উঠবেন ২০১৮ সালের চ্যাম্পিয়ন রোমানিয়ার সিমোনা হালেপ। কিন্তু দ্বিতীয় সেটে হঠাৎ করেই দেখা যায়, খেলতে সমস্যা হচ্ছে হালেপের। বার বার জল খাচ্ছিলেন। চিকিৎসক এসে কয়েক বার তাঁকে দেখেও যান। তার পরেও সমস্যা কমেনি। শেষ পর্যন্ত চিনের কিনওয়েন ঝেংয়ের কাছে ৬-২, ২-৬, ১-৬ গেমে হেরে যান তিনি। শেষ ১২টি পয়েন্টের মধ্যে মাত্র একটি পয়েন্ট পান হালেপ। সেই সঙ্গে এ বারের ফরাসি ওপেন থেকে বিদায় নেন হালেপ। পরে জানা যায়, কোর্টের মধ্যে প্যানিক অ্যাটাক হয়েছিল তাঁর। ফলে শ্বাস নিতে পারছিলেন না মহিলাদের প্রাক্তন এক নম্বর তারকা। এই সমস্যার ফলে তিন মাস আগে নাকি টেনিসকে বিদায় জানাতেও চেয়েছিলেন তিনি।

প্রথম সেটে স্বাভাবিক ছন্দে খেলছিলেন হালেপ। প্রতিপক্ষকে দাঁড়াতে দেননি তিনি। দ্বিতীয় রাউন্ডের পঞ্চম পয়েন্ট থেকে সমস্যা শুরু হয় তাঁর। তার পর থেকে কোর্টে তাঁর গতি শ্লথ হয়ে যায়। শটে তেমন জোর পাচ্ছিলেন না। দেখে বোঝা যাচ্ছিল, ম্যাচের উপর থেকে তাঁর নিয়ন্ত্রণ চলে গিয়েছে। একের পর এক আনফোর্সড এরর, ভুল সার্ভিসের ফলে পর পর ব্রেক পয়েন্ট পান প্রতিপক্ষ। শেষ দিকে কোনও রকমে ম্যাচ শেষ করতে চাইছিলেন হালেপ। ফলে সহজে তৃতীয় সেট জিতে ম্যাচ জিতে নেন চিনের টেনিস ঝেং।

Advertisement

হালেপের ঠিক কী হয়েছে সেটা অনেকেই বুঝতে পারছিলেন না। দর্শকদের দেখে বোঝা যাচ্ছিল যে তাঁরা উদ্বিগ্ন। ম্যাচ শেষে হালেপ বলেন, ‘‘আমি ভাল খেলছিলাম। এগিয়ে ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ শ্বাস নিতে সমস্যা শুরু হয়। ফলে মনোযোগ দিতে পারছিলাম না। এই সমস্যা আগেও হয়েছে। তবে সব সময় হয় না। তাতে অবশ্য ভয়ের কিছু নেই। এখন অনেকটা ভাল লাগছে।’’

আগেও এই সমস্যায় পড়েন হালেপ। চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে কাতার ওপেনে এ ভাবেই প্যানিক অ্যাটাক হয় তাঁর। ম্যাচ হারেন তিনি। তার পরেই ভেবেছিলেন টেনিসকে বিদায় জানাবেন। কাছের মানুষদের সে কথা জানিয়েও দিয়েছিলেন। কিন্তু পারেননি। ফের টেনিসে ফিরেছেন। ফের লড়াই করছেন।

টেনিসে এই ধরনের সমস্যা আগেও দেখা গিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জেতার দু’মাস পরেই মাত্র ২৫ বছর বয়সে টেনিসকে বিদায় জানান অস্ট্রেলিয়ার অ্যাশ বার্টি। কারণ হিসাবে তিনি জানান, খেলার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। মানসিক দৃঢ়তাও পাচ্ছেন না। মানসিক অবসাদ থেকেই টেনিসকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত নেন বার্টি। গত বছর ফরাসি ওপেনের আগে সাংবাদিক সম্মেলন বয়কট করেন আর এক প্রাক্তন চ্যাম্পিয়ন জাপানের নাওমি ওসাকা। তিনি জানান, বেশ কিছু দিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছেন। তাই সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে সমস্যা হয় তাঁর। পুরুষদের প্রাক্তন তারকা আন্দ্রে আগাসি তাঁর আত্মজীবনী ‘ওপেন’-এ জানিয়েছেন, খেলা শুরু করার পর থেকেই একাকীত্বে ভুগতে শুরু করেন তিনি। ফলে টেনিসকে ঘৃণা করতে শুরু করেন। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন হালেপ। টেনিসে সিঙ্গলস তারকাদের কোর্টে একাই খেলতে হয়। প্রতিপক্ষ থেকে শুরু করে প্রত্যাশার চাপ, সব সমস্যার বিরুদ্ধে একাই লড়াই করতে হয়। সেখানে তাঁদের পরামর্শ দেওয়ার কেউ থাকেন না। সেই একাকীত্ব হয়তো কখনও কখনও তাঁদের মানসিক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

সমস্যায় ভুগলেও দু’টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক হালেপ অবশ্য এত সহজে হাল ছাড়তে নারাজ। নেটমাধ্যমে ভক্তদের বার্তা দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, ‘আমি প্রাক্তন চ্যাম্পিয়ন। প্রাক্তন এক নম্বর মহিলা টেনিস খেলোয়াড়। তাই আমার উপর প্রত্যাশার চাপ বেশি। সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে হলে আরও পরিশ্রম করতে হবে। কাল থেকে সেই লড়াই আবার শুরু করব। প্যানিক অ্যাটাকের মোকাবিলা করা কঠিন। কিন্তু আমি এখন ঠিক আছি। আমি এখন হাসছি।’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আরও পড়ুন
Advertisement