Lionel Messi

সতীর্থদের মদ্যপানে নিষেধাজ্ঞা মেসির, মানেননি দলের সঙ্গে থাকা এক জন

বিশ্বকাপ জয়ের পরে আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা সারা রাত ধরে উৎসব করেন। সেখানে মদ্যপানে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন মেসি। মানেননি এক জন।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:৩৮
বিশ্বকাপ জয়ের পর সতীর্থদের মদ্যপান না করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মেসি।

বিশ্বকাপ জয়ের পর সতীর্থদের মদ্যপান না করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মেসি। ছবি: টুইটার।

তৃতীয় বার বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ যেন শেষই হচ্ছিল না আর্জেন্টিনার ফুটবলারদের। ১৮ ডিসেম্বর সারা রাত ধরে পার্টি করেন তাঁরা। সেই উচ্ছ্বাসের মধ্যেই মেজাজ হারান লিয়োনেল মেসি। তীব্র ভর্ৎসনা করেন প্রাক্তন সতীর্থ সার্জিয়ো আগুয়েরোকে।

বিশ্বজয়ের উদ্দাম আনন্দের সুর কেন কেটেছিল, তা নিজেই জানিয়েছেন দিয়েগো মারাদোনার প্রাক্তন জামাই। আনন্দে আত্মহারা আগুয়েরো বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে প্রচুর মদ্যপান করে ফেলেন। এতটাই মদ্যপান করেছিলেন যে তিনি স্বাভাবিক থাকতে পারছিলেন না। প্রিয় বন্ধুর ওই অবস্থা দেখে নিজের রাগ সামলাতে পারেননি আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। সকলের সামনেই তিনি ভর্ৎসনা করেন আগুয়েরোকে। মেসির রেগে যাওয়ার আরও কারণ, দলের সকলকে আগেই তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে মদ্যপান করা যাবে না। তাঁর নির্দেশ আগুয়েরো অমান্য করায় রেগে গিয়েছিলেন মেসি।

Advertisement

আর্জেন্টিনার প্রাক্তন ফুটবলার বলেছেন, ‘‘প্রচুর পান করে ফেলেছিলাম। খাবার খাওয়ার মতো অবস্থাও ছিল না আমার। কিছু খেতেই পারছিলাম না। তখন আমি বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে প্রায় পাগল। তখন আমার কিছু হয়ে গেলেও কোনও আক্ষেপ থাকত না। কিন্তু আমাকে ওই অবস্থায় দেখে প্রচণ্ড রেগে গিয়েছিল মেসি। চিৎকার করে আমাকে বলেছিল, ‘এ বার থামো।’ কিন্তু বললেই কি থামা যায়? আরে আমরা তখন সদ্য বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। আনন্দের কোনও সীমা ছিল না।’’

আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা তাঁকে দলের সঙ্গে একই বিমানে কাতার থেকে বুয়েনস আইরেসে ফেরার অনুরোধ করেছিলেন। তা নিয়ে আগুয়েরো বলেছেন, ‘‘ছেলেরা সকলেই চাইছিল আমাকে নিয়ে দেশে ফিরতে। ওরা আমাকে এসে বলে, ‘তাড়াতাড়ি করো। বিমান ছাড়ার সময় হয়ে যাচ্ছে।’ ওরা আমার কাছ থেকে পাসপোর্টও নিয়ে নিয়েছিল। কারণ সেটা দেখানোর মতো অবস্থাতেও ছিলাম না পরের দিন।’’ আগুয়েরোর অবশ্য মেসিদের সঙ্গে দেশে ফেরা হয়নি। কেন ফেরেননি বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে? আগুয়েরো বলেছেন, ‘‘আমি ওদের সঙ্গে বিমানবন্দরে চলেই যাচ্ছিলাম। হঠাৎ আমার মনে পড়ে কাতারের অ্যাপার্টমেন্টে আমার ছেলে রয়েছে। সেটা মনে পড়ার পরেই আমার টনক নড়ে। ওদের বলি, আমাকে ছেলের কাছে যেতে হবে। বিশ্বজয়ের আনন্দে এতটাই আত্মহারা ছিলাম যে সব ভুলে গিয়েছিলাম।’’

বিশ্বকাপ জয়ের পর মাঠেই মেসিকে ঘাড়ে তুলে নিয়েছিলেন আগুয়েরো। সেই মুহূর্ত নিয়ে বলেছেন, ‘‘আমি বিশ্বের সেরাকেই তুলেছিলাম। একটু নীচু হয়েছিলাম, যাতে মেসি লাফিয়ে আমার ঘাড়ে উঠতে পারে। আমার পিঠে সেলাই আছে। তাই বেশি ক্ষণ ঘাড়ে নিয়ে থাকতে পারিনি। আমি ঘুরতেও পারছিলাম না ওকে নিয়ে। ঘুরতে গেলে মাঠ থেকে আমাকে সোজা হাসপাতালে যেতে হত।’’

মেসি কি বুঝতে পেরেছিলেন, আপনার কষ্ট হচ্ছে? আগুরেয়ো বলেছেন, ‘‘হ্যাঁ, ও বুঝতে পেরেছিল। আমি ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম। আমাদের দৃষ্টি বিনিময় হয়েছিল। তা-ও ওকে বলেছিলাম, সব ঠিক আছে। তুমি এখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। জানি আমার পিঠে আঘাত আছে।’’ এর পর মেসি আর সময় নষ্ট না করে আগুয়েরোর পিঠ থেকে নেমে পড়েছিলেন।

উল্লেখ্য, হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যার কারণে ২০২১ সালে অবসর নিতে বাধ্য হন ম্যাঞ্চেস্টার সিটির প্রাক্তন তারকা। ফুটবলার হিসাবে তাই এ বার আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপের দলে থাকতে পারেননি আগুয়েরো। কিন্তু প্রিয় বন্ধু মেসির বিশ্বকাপ জয়ের সময় পাশে থাকতে চেয়েছিলেন তিনি। তাঁর আবেদন মেনে আর্জেন্টিনার ফুটবল ফেডারেশন তাঁকে সহকারী কোচ করে দলের সঙ্গে কাতারে পাঠিয়েছিল।

আরও পড়ুন
Advertisement