ভারত-কাতার ম্যাচে বল দখলের লড়াই। ছবি: এআইএফএফ।
২০২৬ সালের বিশ্বকাপ এবং এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের প্রথম ম্যাচে দুরন্ত জয় পেয়েছিলেন সুনীল ছেত্রীরা। অ্যাওয়ে ম্যাচে কুয়েতকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল ভারত। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে ঘরের মাঠে কাতারের বিরুদ্ধে ছন্নছাড়া ইগর স্তিমাচের ছেলেরা। মঙ্গলবার ভুবনেশ্বরে কাতারের কাছে ভারত হারল ০-৩ ব্যবধানে। ঘরের মাঠে টানা ১৫ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর হারলেন সুনীলেরা।
শক্তির বিচারে ভারতের থেকে অনেকটাই এগিয়ে গত বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজকেরা। ঘরের মাঠ হলেও সুনীলেরা ৩ পয়েন্ট পাবেন, এমন আশা হয়তো খুব বড় সমর্থকও করেননি। তবে গ্যালারিতে উপস্থিত আর্সেন ওয়েঙ্গারের সামনে ভারতীয় দল এক পয়েন্ট ছিনিয়ে নিতে পারবে বলে আশা করেছিলেন অনেকেই। কিন্তু কার্যত সাত জনে (কখনও কখনও আট জনে) রক্ষণ সামলেও কাতারকে আটকাতে পারল না ভারত। তার মধ্যেও দুই অর্ধে গোল করার দু’টি সুযোগ পেয়েছিলেন সুনীলেরা। তাও কাজে লাগাতে পারেননি।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব আর্সেনালের প্রাক্তন ফরাসি কোচ ওয়েঙ্গার, সোমবার ভারতীয় ফুটবলকে সোনার খনির সঙ্গে তুলনা করে প্রশংসা করেছিলেন। মঙ্গলবার সুনীলদের খেলায় তাঁর পক্ষে কষ্ট করেও সোনা খুঁজে পাওয়া কঠিন। প্রথমার্ধের খেলা দেখার পর তিনি বলেন, ‘‘ভারতের উচিত আরও গতিশীল ফুটবল খেলা। খেলার গতি কমালে হবে না। প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের আরও বেশি নজরে রাখতে হবে। তাদের জায়গা বদল খেয়াল করতে হবে।’’
ম্যাচের ৪ মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে ভারত। কর্ণার থেকে কাতারের পক্ষে প্রথম গোল করেন মুস্তাফা মিশেল। তার আগেই ম্য়াচের ২ মিনিটে একটি গোলের একটি সহজ সুযোগ নষ্ট করে কাতার। প্রথম থেকে কাতারের ফুটবলারেরা চাপে রেখেছিলেন ভারতীয় দলকে। সেই চাপের মুখেই বার বার ভুল করলেন রাহুল বেকে, শুভাশিস বোসেরা। অন্য দিকে, ভারতীয় দলের আক্রমণের চেষ্টা মাঝ মাঠের কাছাকাছিই নির্বিষ করে দিলেন কাতারের ফুটবলারেরা।
কাতারের বেশ কয়েকটি গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করল কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে। গোটা দুয়েক ভাল সেভ করলেন ভারতের গোলরক্ষক অমরিন্দর সিংহ। না হলে সুনীলদের আরও বড় ব্যবধানে হারের লজ্জা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হত। তার মধ্যেও দুই অর্ধে গোল করার দু’টি সুযোগ পেয়েছিলেন সুনীলেরা। তাও কাজে লাগাতে পারেননি। ৬৫ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে সুরেশ বক্সে ভাল বল বাড়ান সাহালকে। কিন্তু সহজ সুযোগ নষ্ট করেন তিনি। প্রথম সুযোগটি নষ্ট হয় প্রথমার্ধের ৩৬ মিনিটে। ৬০ মিনিটেও একটি সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি মহেশ সিংহ।
প্রথমার্ধে কাতার অবশ্য আর গোল দিতে পারেনি। তবে দ্বিতীযার্ধের শুরুতেই তারা ব্যবধান বাড়িয়ে নেয়। ম্যাচের ৪৭ মিনিটে গোল করেন মোয়েজ আলি। ৮৬ মিনিটে তৃতীয় গোল করেন ইউসুফ আবদুরিসগ। শেষ পর্যন্ত গত বিশ্বকাপের আয়োজকেরা ৩-০ ব্যবধানে ম্যাচ দিতে নেয়।