আরও সঙ্কটজনক অবস্থায় রয়েছেন পেলে। হাসপাতালে তাঁকে রাখা হয়েছে ‘প্যালিয়াটিভ কেয়ার’-এ। —ফাইল চিত্র
শারীরিক অবস্থা আরও সঙ্কটজনক হয়েছে পেলের। ব্রাজিলের সংবাদপত্র ‘ফোলহা ডে সাও পাওলো’ জানিয়েছে, কেমোথেরাপি কাজ করছে না পেলের শরীরে। কোনও চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন না ব্রাজিলের হয়ে তিন বার বিশ্বকাপ জেতা ফুটবলার। তাঁকে রাখা হয়েছে ‘প্যালিয়াটিভ কেয়ার’-এ।
কী এই প্যালিয়াটিভ কেয়ার?
ক্যানসার বিশেষজ্ঞ সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, ‘‘যখন রোগীর শরীরে কোনও চিকিৎসা কাজ করে না, তখনই তাঁকে প্যালিয়াটিভ কেয়ারে রাখা হয়। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে উপসর্গ উপশম করা হয়। অর্থাৎ, রোগীর শরীরে যে যে সমস্যা দেখা যাচ্ছে তা থেকে তিনি যাতে কষ্ট না পান সেই বন্দোবস্ত করেন চিকিৎসকেরা। যত দিন সেই রোগী বেঁচে থাকবেন তত দিন যেন তিনি আরামে থাকতে পারেন তার জন্যই রয়েছে প্যালিয়াটিভ কেয়ার।’’ তবে প্যালিয়াটিভ কেয়ারে কোনও রোগীকে রাখার মানে যে তিনি কিছু দিনের মধ্যেই প্রয়াত হবেন, তা ও নয়। তিনি আরও বললেন, ‘‘ওই অবস্থায় রোগী এক বছরও বাঁচতে পারেন। সেটা নির্ভর করছে রোগীর শরীর কতটা সহ্য করতে পারছে তার উপর।’’
গত মঙ্গলবার হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা ও শরীর ফুলে যাওয়ায় সাও পাওলোর একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল পেলেকে। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী মার্সিয়া আওকি এবং এক জন আয়া। তার পর থেকে সেখানেই রয়েছেন তিনি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এর আগে বিভিন্ন কারণে পেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও শরীর ফুলে যাওয়ার ঘটনা এই প্রথম হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জানা গিয়েছিল, পেলের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তাঁর মেয়ে জানিয়েছিলেন, ভয়ের কোনও কারণ নেই। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছিলেন পেলে। কিন্তু তার মধ্যেই নতুন করে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ার খবর পাওয়া গেল।
দীর্ঘ দিন ধরে মলাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত পেলে। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল তাঁর। কিন্তু তাতে সমস্যার সমাধান হয়নি। কেমোথেরাপি চলছিল পেলের। সেটাই আর নিতে পারছেন না তিনি।
বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে ২০১০ সালে কাতারের নাম ঘোষণার পরেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন পেলে। ইচ্ছে ছিল ১৮ ডিসেম্বর দোহার লুসাইল স্টেডিয়ামে বসে ব্রাজিলের ষষ্ঠ বার বিশ্বকাপ জয় দেখবেন। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে কাতার যাওয়ার অনুমতি দেননি। তিনি ব্রাজিলে নিজের বাড়িতেই ছিলেন। সেখানেই আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।