ক্লিফোর্ড মিরান্ডা (সামনে) ডাগ-আউটে বসলেও কলকাঠি নাড়বেন হাবাস (পিছনে)। ছবি: এক্স।
ডাগ-আউটে থাকবেন না তিনি। তার পরেও মাঠেই থেকে যাবেন আন্তোনিয়ো লোপেজ় হাবাস। মোহনবাগানের নতুন কোচ তাঁর উপস্থিতি জানান দেবেন ফুটবলারদের খেলায়। কারণ, এখনও দলের দায়িত্ব সরকারী ভাবে না নিলেও তিনি দল চালাচ্ছেন। পরিকল্পনা, অনুশীলন, দল নির্বাচন সবই হচ্ছে তাঁর হাত ধরেই। সামনে দেখা যাচ্ছে ক্লিফোর্ড মিরান্ডাকে। কিন্তু বাগানের আসল ‘মেঘনাদ’ হাবাস। মেঘের আড়াল থেকে আসল কাজ করছেন তিনি। তাঁর মন্ত্রেই শুক্রবার ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে সুপার কাপের ডার্বি খেলতে নামবে মোহনবাগান।
ভারতীয় ফুটবলে, বিশেষ করে কলকাতা ময়দানে হাবাস পরিচিত নাম। আইএসএলের প্রথম মরসুমে তাঁর হাত ধরেই ট্রফি জিতেছিল তৎকালীন এটিকে। পরে আরও এক বার কলকাতার ক্লাবকে চ্যাম্পিয়ন করিয়েছিলেন তিনি। মাঝে কলকাতা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন পুণেতে। কিন্তু যখনই কলকাতার ক্লাব তাঁকে ডেকেছে, তিনি এসেছেন। আইএসএলের চলতি মরসুমের আগে হাবাসকে টেকলিক্যাল ডিরেক্টর হওয়ার প্রস্তাব দেয় মোহনবাগান। তিনি সেই দায়িত্ব নেন। তখন বাগানের কোচ ছিলেন জুয়ান ফেরান্দো। আইএসএলে দলের খারাপ খেলার দায় নিয়ে তিনি পদত্যাগ করার পরে তাই কারও কথা না ভেবে সরাসরি হাবাসকে কোচ করা হয়।
ফেরান্দো যাওয়ার পরে হাবাস কোচ হলেও এই দল তাঁর কাছে নতুন নয়। টেকনিক্যাল ডিরেক্টর থাকাকালীন দলের ফুটবলারদের তিনি কাছ থেকে দেখেছেন। তিনি জানেন, কোন ফুটবলারের কাছ থেকে কোনটা বার করতে হবে। সেই পরিকল্পনা নিশ্চয় ডার্বিতেও করবেন হাবাস। তিনি দলের সরাসরি দায়িত্ব না নিলেও ভুবনেশ্বরে দলের সঙ্গে একই হোটেলে রয়েছেন। সেখানে হাবাসের নজরদারিতেই অনুশীলন সারছে বাগান। অনুশীলনে দেখা যাচ্ছে, মিরান্ডার সঙ্গে অনেকটা সময় কাটাচ্ছেন হাবাস। কারণ তিনি জানেন, তাঁর পরিকল্পনা মাঠে বাস্তবায়িত করা ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিতে হবে মিরান্ডাকে।
কলকাতার ফুটবলে বিশেষ করে ডার্বিতে যে জয়ই শেষ কথা তা জানেন হাবাস। তিনি এ-ও জানেন, সুপার কাপের সেমিফাইনালে যেতে হলে জিততেই হবে বাগানকে। ইস্টবেঙ্গল ড্র করলেও পৌঁছে যাবে শেষ চারে। কিন্তু বাগানের সামনে জেতা ছাড়া কোনও বিকল্প নেই। হাবাস সাধারণত, রক্ষণ মজবুত করে আক্রমণে ওঠায় বিশ্বাসী। আইএসএলে প্রথম মরসুমে তিনি দেখিয়েছিলেন, কী ভাবে রক্ষণের উপর নির্ভর করে চ্যাম্পিয়ন হওয়া যায়। কিন্তু সেই মনোভাব থেকে শুক্রবার বেরিয়ে আসতে হবে তাঁকে। আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে হবে।
হাবাস জানেন, তাঁর কাছে ফুটবলার সীমিত। কারণ, জাতীয় দলে খেলতে চলে গিয়েছেন দলের সাত ফুটবলার। এক জন চোটে রয়েছেন। অর্থাৎ, প্রথম সারির আট জন ফুটবলার ছাড়া নামতে হবে দলকে। যাঁরা আছেন তাঁরা গ্রুপের প্রথম দুই ম্যাচে খুব ভাল ফুটবল খেলতে পারেননি। সেই ফুটবল ডার্বিতে খেললে হবে না। প্রতিপক্ষ ইস্টবেঙ্গল আবার সুপার কাপে বেশ ভাল ফুটবল খেলছে। তাদের হারাতে হলে অন্য পরিকল্পনা করতে হবে। সেটা হয়তো ইতিমধ্যে করেও ফেলেছেন হাবাস। শুক্রবার মেঘের আড়াল থেকে সেই পরিকল্পনা মাঠে বাস্তবায়িত হতে দেখতে চান তিনি। তেমনটা হলে বাগানে তাঁর তৃতীয় অধ্যায়ের শুরুটা বেশ ভালই হবে।