Mohun Bagan

সবুজ-মেরুন জনতার কাঁধে চড়ে ট্রফি ফিরল তাঁবুতে, উচ্ছ্বাস বাড়ল মঞ্চে ইস্টবেঙ্গলকে দেখে

সোমবার কাজের দিন সকালে প্রায় হাজার খানেক সমর্থক এসেছিলেন মোহনবাগান তাঁবুতে। ফুটবলারদের নিয়ে আবেগে ভাসলেন তাঁরা। তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করলেন, প্রথম বার আইএসএল জয়ের উৎসব।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৩ ১৭:৩০
picture of Mohun Bagan

আইএসএল জয়ের পর মোহনবাগান মাঠের অনুষ্ঠানে ট্রফি দেখতে এলেন মুখ্যমন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।

আইএসএল ট্রফি ঘুরল জনতার কাঁধে। অনুষ্ঠান শেষে ভাঙা হাটে মোহনবাগান মাঠ তখন সবুজ-মেরুন জনতার দখলে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চ ছাড়ার পর কর্তারা ক্লাব তাঁবুতে নিয়ে যান কোচ, ফুটবলারদের। মঞ্চে তখনও রাখা ছিল আইএসএল ট্রফি। সেই ট্রফি তাঁবুতে ফিরল সমর্থকদের কাঁধে চেপে।

ফাঁকা মঞ্চে প্রথমে কয়েক জন আধা, মাঝারি কর্তা উঠছিলেন ট্রফি দেখতে, ছবি তুলতে। তাঁদের দেখাদেখি সমর্থকরাও গ্যালারি থেকে মাঠে ঢুকে গেলেন কাছ থেকে ট্রফি দেখতে। ভি়ড় হয়ে যাওয়ায় কয়েক জন উঠে গেলেন মঞ্চে। কয়েক সেকেন্ডে মঞ্চের দখল নিয়ে নিল সবুজ মেরুন জনতা। প্রথমে কিন্তু কিন্তু ভাব করে ট্রফি হাতে নিয়ে ছবি তুললেন কয়েক জন। কেউ বাধা দেওয়ার না থাকায় সাহস পেলেন তাঁরা। আইএসএল ট্রফি চলে গেল তাঁদের দখলে। ট্রফি নিয়ে মাঠ ঘুরল উচ্ছ্বসিত মোহনবাগান জনতা। তাঁরাই ট্রফি পৌঁছে দিলেন ক্লাব তাঁবুতে।

Advertisement

সকাল থেকেই সেজেছিল মোহনবাগান তাঁবু। উপলক্ষ্য, আইএসএল ট্রফি দেখতে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আসার কথা ছিল বেলা ১২টা নাগাদ। তার অনেক আগেই সেরে রাখা হয়েছিল সব ব্যবস্থা। মাঠের মধ্যে তৈরি করা হয় অস্থায়ী মঞ্চ। সদস্য গ্যালারি খুলে দেওয়া হয় সমর্থকদের জন্য। সকাল ১১টা থেকে আসতে শুরু করেন সমর্থকরা। কারও গায়ে ছিল প্রিয় ক্লাবের জার্সি। কেউ এনেছিলেন ক্লাবের উত্তরীয় বা পতাকা। সময় যত এগিয়েছে তত বেড়েছে ভিড়। ১২টার মধ্যে হাজার খানেক সবুজ-মেরুন সদস্য-সমর্থক চলে এসেছিলেন। অনুষ্ঠান শুরুর আগে বাজছিল মোহনবাগানের গান। আট থেকে আশির ভিড় তাল মেলাল গানের সঙ্গে। আসলে সেই গানের সুরে বাধা হচ্ছিল উৎসবের ছন্দ। গ্যালারি থেকে মাঝে মাঝেই উঠছিল ‘জয় মোহনবাগান’, ‘ভারতসেরা মোহনবাগান’ ধ্বনি।

ঠিক ১২টা ১০ মিনিটে ট্রফি নিয়ে মাঠে এলেন প্রীতম কোটাল, শুভাশিস বসু, কিয়ান নাসিরি, বিশাল কাইথরা। পিছনে কোচ জুয়ান ফেরান্দো। তাঁদের দেখেই উচ্ছ্বাসে ফেটে প়ড়লেন সমর্থকরা। কখনও প্রীতমের নাম ধরে, কখনও বিশালের নাম ধরে টানা চিৎকার করলেন সমর্থকরা। তাঁদের উৎসাহ, উন্মাদনা উপভোগ করছিলেন মঞ্চে বসা ফুটবলাররাও। বিশালরাও কেউ কেউ তাল মেলাচ্ছিলেন মোহনবাগানের গানের সঙ্গে।

আকাশ তখন মেঘলা। অনেকের মনে আশঙ্কা, বৃষ্টি অনুষ্ঠানের তাল কাটবে না তো? তেমন কিছু হয়নি। বরং সময় যত এগিয়েছে, রোদ তত চড়া হয়েছে। ১২টা ৪০ মিনিট নাগাদ এলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে দেখে আবার উচ্ছ্বাসে ভাসলেন সমর্থকরা। অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার পরও বেশ কয়েক বার গর্জন করল মোহনবাগান জনতা। ফুটবলারদের নাম ডেকে সংবর্ধনা দেওয়ার সময় এবং মুখ্যমন্ত্রীর ৫০ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা সময় চিৎকার দ্বিগুণ হল।

চিৎকার তিনগুণ হল ইস্টবেঙ্গল প্রতিনিধিদের দেখে। মুখ্যমন্ত্রী যখন ফুটবলারদের উত্তরীয় পরিয়ে হাতে স্মারক, ফুল, মিষ্টি তুলে দিচ্ছিলেন, সে সময় উপস্থিত হন ইস্টবেঙ্গলের দুই প্রতিনিধি। লাল-হলুদ গোলাপের স্তবক, মিষ্টি নিয়ে মোহনবাগানকে অভিনন্দন জানাতে এসেছিলেন তাঁরা। সঞ্চালকের অনুরোধে তাঁরা মঞ্চে উঠতেই আওয়াজ উঠল ‘যত বার ডার্বি, তত বার হারবি।’ অস্বস্তি এড়াতে তাঁরা দ্রুত মঞ্চ ছাড়তে চাওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দিলেন মোহন কর্তারা। সবুজ-মেরুন জনতার উচ্ছ্বাসের বাধ আরও এক বার ভাঙল। যখন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে এল ইস্টবেঙ্গলের ব্যর্থতার প্রসঙ্গ।

এটিকে মোহনবাগান আইএসএল ফাইনালে ওঠার পর মুখ্যমন্ত্রী মোহন সচিব দেবাশিস দত্তকে বলেছিলেন, চ্যাম্পিয়ন হতে হবে। আরও বলেছিলেন, আমাকে ট্রফি দেখিয়ে যাবে কিন্তু। দল ট্রফি নিয়ে শহরে ফেরার পর সেই মতো মুখ্যমন্ত্রীর সময় চেয়েছিলেন দেবাশিস। রবিবারই বিকাল ৫টায় মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিনি নিজেই সোমবার বেলা ১২টা নাগাদ মোহনবাগান তাঁবুতে আসবেন ট্রফি দেখতে। মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছা জানার পর মোহনবাগান কর্তারা দ্রুত সব ব্যবস্থা করেন। সীমিত সময়ের মধ্যে মোহন কর্তারা সব ব্যবস্থা করেছেন। তাঁদের চেষ্টাকে প্রাণবন্ত করে তুললেন সমর্থকরাই।

আরও পড়ুন
Advertisement