মোহনবাগান কোচ হোসে মোলিনা। — ফাইল চিত্র।
ডুরান্ড কাপের ফাইনালে রক্ষণের ব্যর্থতায় হারতে হয়েছে। আইএসএলের প্রথম ম্যাচে মুম্বই সিটির বিরুদ্ধে দু’গোলে এগিয়ে গিয়েও ড্র করতে হয়েছে। তবু রক্ষণ নিয়ে চিন্তিত নন মোহনবাগানের কোচ হোসে মোলিনা। বুধবার এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স টু-তে এফসি রভশানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামার আগে জানিয়েছেন, ডিফেন্ডারদের খেলায় তিনি খুশি। ছোটখাটো ভুল এড়াতে পারলেই দল জিততে পারবে।
মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে মোহনবাগানের কোচ বললেন, “রক্ষণ খারাপ খেলছে এ কথা মানতে মোটেই রাজি নই। তবে স্বীকার করছি আগের ম্যাচগুলোয় আমাদের ভুল হয়েছে। সেটা ঠিক করতে হবে। পুরো ম্যাচে আমাদের রক্ষণ খুব খারাপ খেলেনি।”
তাঁর সংযোজন, “যদি বিপক্ষ দল প্রচুর গোল করার সুযোগ পায় বা গোল করে তা হলেই বলব আমাদের রক্ষণ খারাপ। মুম্বই বা নর্থইস্ট কি সেটা পেরেছে? দু’-একটা সুযোগ কাজে লাগিয়ে গোল করেছে। তবু বলব আমাদের ভুল এড়াতে হবে।”
রক্ষণের ত্রুটি এড়াতে রভশানের বিরুদ্ধে খেলার কৌশলে বদল আনতে চান কোচ। হয়তো তিনের জায়গায় চার ডিফেন্ডারে খেলতে পারেন। সে প্রসঙ্গে বলেছেন, “প্রতিপক্ষের ধরন অনুযায়ী এমনিই খেলায় বদল আনতে হয়। আমরা আক্রমণাত্মক খেলার পাশাপাশি গোল কম খাওয়ার চেষ্টা করব। প্রতি ম্যাচে তো একই দলের বিরুদ্ধে খেলি না। আপাতত আমার ভাবনায় রভশান ম্যাচ। আইএসএলে ফিরে তখন পরের প্রতিপক্ষ নিয়ে ভাবব।”
রক্ষণ ভাগ শক্তিশালী করতে পর্তুগালের ডিফেন্ডার নুনো রেইসকে সই করিয়েছে মোহনবাগান। সঙ্গে রয়েছেন টম অলড্রেড। তবে বুধবারের ম্যাচে নুনোর খেলার সম্ভাবনা নেই। তিনি দেশেই আসেননি এখনও। তা ছাড়া রক্ষণে অনিশ্চয়তা রয়েছে আলবের্তো রদ্রিগেসকে নিয়েও। খেলার সম্ভাবনা কম জেমি ম্যাকলারেনেরও। তবে মোলিনা জানিয়েছেন, ম্যাকলারেনের অবস্থা আগের চেয়ে ভাল।
কেন আর এক জন ডিফেন্ডার সই করালে সে প্রসঙ্গে মোলিনার জবাব, “দলের বৈঠকে আমরা ঠিকই করেছিলাম একজন ডিফেন্ডার নিতে হবে যে মিডফিল্ডার হিসাবেও খেলতে পারেন। এ মরসুমে অনেক ম্যাচ খেলতে হবে আমাদের। একই খেলোয়াড়দের সব ম্যাচে খেলানো সম্ভব নয়। ক্লান্তির পাশাপাশি চোট লাগতে পারে। তাই আর একজনকে সই করিয়েছি। আশা করি নুনো দলকে ভালই সাহায্য করবে।”
আইএসএল বা ডুরান্ডের থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ যে সম্পূর্ণ আলাদা তা স্বীকার করে নিয়েছেন মোলিনা। বলেছেন, “দুটো প্রতিযোগিতার তুলনাই হয় না। আলাদা দলেরের বিরুদ্ধে খেলব। আমি জানি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যারা প্রতিপক্ষ তাদের ফুটবলের মান আমাদের থেকে অনেক উন্নত। কিন্তু আমাদের হাতে তো দুটো দল নেই। একই খেলোয়াড়দের নিয়ে দুটো প্রতিযোগিতাতেই খেলতে হবে। তাই ওদের থেকে প্রতিটা ম্যাচেই সেরাটা বার করে আনতে চাই।”
মোলিনা এ-ও জানিয়েছেন, রভশানের বেশ কিছু ম্যাচ তিনি দেখেছেন। জানেন তাজিকিস্তানের ক্লাবটির মান তাঁদের থেকে ভাল। পাশাপাশি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বিদেশিদের কোনও সীমা নেই। ফলে একটি ক্লাব যত খুশি বিদেশি খেলাতে পারে। রভশানে তিন জন দীর্ঘদেহী আফ্রিকান ডিফেন্ডার ছাড়াও সার্বিয়া, ইউক্রেনের ফুটবলারেরা রয়েছেন। মোহনবাগান যেখানে চারজন বিদেশিকে পাচ্ছে সেখানে রভশানের সাতজন বিদেশিই খেলার জন্য তৈরি।
যদিও সাত বিদেশি না-ও খেলাতে পারেন রভশানের কোচ মামি নাজারজাদেহ মাসুদ। বলেছেন, “হয়তো পরের দিকে ওরা আমাদের সাহায্য করতে পারে। কিন্তু তাজিকিস্তানের লিগে চার জনের বেশি বিদেশি খেলানোর নিয়ম নেই। এতে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির ক্ষতি হবে। তাই বুঝেশুনে বিদেশিদের খেলাব।”
মোহনবাগান এবং ভারতীয় ফুটবলের ব্যাপারে শুনেছেন রভশানের কোচ। সমীহ প্রকাশ করে জানালেন, সাম্প্রতিক কালে মোহনবাগানের সাফল্য বেশ ঈর্ষণীয়।