সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসেরে সই করেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। কিন্তু ক্লাবের হয়ে এখনও অভিষেক হল না রোনাল্ডোর। —ফাইল চিত্র
নির্বাসনের কারণে আল নাসেরের হয়ে অভিষেকে সংশয় ছিল ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর। তার পরেও ক্লাব সূত্রে জানা গিয়েছিল, মাঠে নামার একটা শেষ চেষ্টা করবেন সিআর৭। নির্বাসন উপেক্ষা করে মাঠে নামলে আরও বড় সমস্যায় পড়তে হত রোনাল্ডো ও তাঁর ক্লাবকে। শেষ পর্যন্ত কিছুই হল না। রোনাল্ডোও মাঠে নামতে পারলেন না। খেলাও হল না আল নাসেরের। না, রোনাল্ডো নামতে না পারায় খেলা বন্ধ হয়নি। প্রবল বৃষ্টিতে মাঠে বৈদ্যুতিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় খেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
খেলা শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই প্রবল বৃষ্টি হচ্ছিল। তার পরেও খেলা দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন দর্শকরা। ২৮ হাজারের বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু মাঠের বাইরেই তাঁদের আটকে দেওয়া হয়। দরজা বন্ধ ছিল। শুধু সমর্থকরা নন, মাঠকর্মী, নিরাপত্তা রক্ষী, রাঁধুনিরাও মাঠের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। খেলা কখন শুরু হবে সেই অপেক্ষা করছিলেন তাঁরা।
অবশেষে ক্লাবের তরফে ঘোষণা করা হয় যে খেলা হবে না। দর্শকদের কাছে ক্ষমাও চেয়ে নেয় ক্লাব। পরে টুইট করেও সে কথা জানায় তারা। টুইটে আল নাসের লেখে, ‘‘প্রবল বৃষ্টিতে স্টেডিয়ামের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থায় সমস্যা হয়েছে। সেই কারণে আল তাইয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচ বন্ধ করা হয়েছে। শুক্রবার সেই খেলা আয়োজন করার চেষ্টা হবে। এ ভাবে খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সবার কাছে আমরা ক্ষমা চাইছি।’’
Due to heavy rain and weather conditions impacting the stadium’s electricity, we have been officially informed that tonight’s match against Al Ta'i is postponed for 24 hours.
— AlNassr FC (@AlNassrFC_EN) January 5, 2023
We apologise for any inconvenience caused to fans and wish everyone safe travels. https://t.co/TKIOQK8Oqo
আগেই জানা গিয়েছিল বৃহস্পতিবার আল তাইয়ের বিরুদ্ধে অভিষেক হচ্ছে না রোনাল্ডোর। কারণ, ২০২২ সালের এপ্রিলে গুডিসনে পার্কে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে এভার্টনের কাছে হারের পর সাজঘরে ফেরার সময় খুদে ভক্তের মোবাইল আছড়ে ভেঙে দেন রোনাল্ডো। প্রিয় নায়ককে হাতের কাছে দেখতে পেয়ে ছবি তোলার জন্য মোবাইল বাড়িয়েছিল ১৪ বছরের জেকব হার্ডিং। ম্যাচ হেরে যাওয়ায় মাথা গরম ছিল রোনাল্ডোর। রাগে ফোনটা টেনে নিয়ে মাটিতে আছড়ে ফেলেন। জেকবের মা সারাহ ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন রোনাল্ডোর উপর। এই ঘটনার পরে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন রোনাল্ডো। মারসেসাইড পুলিশ তাঁকে ডেকে সতর্কও করে দিয়েছিল। আলাদা করে তদন্তে নামে এফএ। সেই তদন্তেই তাঁর ওপর নেমে আসে শাস্তির খাঁড়া। দুই ম্যাচ বহিষ্কার করা হয় তাঁকে।
ফিফার ১২.১ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনও ফুটবলারের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হয় এবং সেই ফুটবলারকে দুই, তিন বা চার ম্যাচে নির্বাসনের শাস্তি দেওয়া হয় তা হলে সেটা তাঁকে মানতেই হবে। যদি তার মধ্যে কোনও ফুটবলার এক দেশ থেকে অন্য দেশে চলে যান তা হলেও তাঁর শাস্তি কার্যকর থাকবে। রোনাল্ডোকে নির্বাসনের শাস্তি দেওয়ার পরে ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজিত হওয়ায় প্রিমিয়ার লিগের খেলা বন্ধ হয়ে যায়। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড বিশ্বকাপের আগে শেষ ম্যাচ খেলে ফুলহ্যামের বিরুদ্ধে এবং বিশ্বকাপের পরে প্রথম ম্যাচ খেলে বার্নলের বিরুদ্ধে। ম্যান ইউয়ের সঙ্গে চুক্তি বাতিল হয়ে যাওয়ায় এই দু’টি ম্যাচেই দলে ছিলেন না রোনাল্ডো। ফলে ওই নিষেধাজ্ঞা তাঁর নতুন ক্লাবের প্রথম দু’টি ম্যাচেই কার্যকর হবে। সেই কারণেই আল নাসেরের হয়ে প্রথম দু’ম্যাচে মাঠে নামতে পারবেন না রোনাল্ডো।