প্রথম পর্বের কলকাতা ডার্বির একটি মুহূর্ত। ছবি: সমাজমাধ্যম।
চলতি মরসুমে ফিরতি ডার্বি হওয়ার কথা ছিল ১১ জানুয়ারি। যুবভারতীতে সেই ম্যাচ হচ্ছে না। সোমবার নব মহাকরণে এক সাংবাদিক বৈঠকে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, গঙ্গাসাগর মেলার কারণে ওই ম্যাচের জন্য পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়। ফলে সিদ্ধান্ত এখন আইএসএল আয়োজকদের হাতে। তারা ওই দিন অন্য কোনও শহরে ম্যাচ আয়োজন করবে না কি দিন পরিবর্তন করবে সেটা তারাই ঠিক করবে।
আগামী ৮ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি গঙ্গাসাগর মেলা চলবে। সেই মেলা আয়োজন এবং পুণ্যার্থীদের যাতায়াতের খেয়াল রাখার জন্য প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করতে হয়। পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক জঙ্গি ধরা পড়ায় নিরাপত্তা এমনিতেই আঁটসাঁট করা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে জঙ্গি অনুপ্রবেশের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। গঙ্গাসাগরের জন্যই ১৩ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। তাই ডার্বির জন্য আর পুলিশ দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে রাজ্য।
সাধারণত ডার্বি আয়োজন করতে ১২০০ থেকে ১৫০০ পুলিশ লাগে। ৬০ হাজারেরও বেশি দর্শক আসেন ম্যাচ দেখতে। এত পরিমাণ পুলিশ গঙ্গাসাগর মেলার মাঝে পাওয়া যাবে না। তাই রাজ্য পুলিশ ওই ম্যাচ আয়োজন করতে পারবে না বলে জানা গিয়েছে।
অরূপ এ দিন জানিয়েছেন, নিরাপত্তার বিষয়টি তারা ২৫ দিন আগেই আয়োজকদের জানিয়েছেন। ফিরতি পর্বের ডার্বির আয়োজক মোহনবাগান। তাদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি দিন দুয়েক আগে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের তরফেও ডার্বিতে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া যাবে না জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ইস্টবেঙ্গলের কর্তা দেবব্রত (নীতু) সরকার বলেছেন, “এর আগে আমরাও গোয়ার বিরুদ্ধে একটি ম্যাচ ভুবনেশ্বরে খেলেছিলাম। এই ম্যাচের আয়োজক মোহনবাগান। ওরা ভুবনেশ্বরে ডার্বি আয়োজন করুক।” বিধাননগর পুলিশের থেকে চিঠি পাওয়ার খবর মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত স্বীকার করেছিলেন। তাঁরা জানিয়েছেন, এই ব্যাপারটি এফএসডিএলকে জানিয়েছেন তাঁরা।
মোহনবাগানের অন্য একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা ধরেই নিয়েছে যুবভারতীতে ১১ জানুয়ারি ডার্বি হচ্ছে না। আয়োজক হিসাবে তারা বিকল্প দু’টি জায়গার নাম প্রস্তাব করবে এফএসডিএলের কাছে। এগিয়ে রয়েছে ভুবনেশ্বর এবং জামশেদপুর। মোহনবাগান এমন জায়গায় ডার্বি করতে চাইছে যেখানে তাদের সমর্থকেরা সহজেই পৌঁছতে পারেন।
মোহনবাগানের অভিযোগ, ক্রীড়াসূচি তৈরি হওয়ার সময়েই তাদের তরফে সব ম্যাচের দিন এবং সময় পুলিশকে জানানো হয়েছিল। অনুমতিও পাওয়া গিয়েছিল। এখন ম্যাচের দু’সপ্তাহ আগে জানানো হচ্ছে ম্যাচ হবে না। তা হলে তখন কেন অনুমতি দেওয়া হয়েছিল সেই প্রশ্ন তুলেছে তারা।
এ বছরেও দু’টি ডার্বি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। গত ১০ মার্চ আইএসএলের ডার্বির দিনেই ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের ব্রিগেড। সে বারও পুলিশ নিরাপত্তা দিতে পারবে না বলে জানিয়েছিল। বিস্তর টালবাহানার পর ম্যাচের সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৭.৩০টার বদলে ৮.৩০টায় শুরু হয় ম্যাচ। এর পর অগস্টে আরজি কর আন্দোলন তুঙ্গে থাকার সময়ে ডুরান্ড কাপে খেলা পড়েছিল ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের। সেই ডার্বি শেষ মেশ বাতিলই হয়ে যায়। এ বার কী হয়, সেটাই দেখার।