গুরপ্রীত সিংহ সান্ধু। —ফাইল চিত্র।
রেফারির সিদ্ধান্ত মানতে পারছেন না ভারতের ফুটবল কোচ ইগর স্তিমাচ ও অধিনায়ক গুরপ্রীত সিংহ সান্ধু। বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে কাতারের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে ভারত। সেই ম্যাচে রেফারির কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
ম্যাচের ৭৩ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে ছিল ভারত। ৭৩ মিনিটে কাতারের হয়ে সমতা ফেরান ইউসুফ আইমেন। ভারতের গোলরক্ষক গুরপ্রীত বল ধরতে গিয়ে ফস্কান। বল গোল লাইনের বাইরে বেরিয়ে যায়। সেখান থেকে বল টেনে নিয়ে ভিতরে ঢোকান কাতারের ফুটবলার। গোল করেন আইমেন। গোলের পর কাতারের ফুটবলারদের দেখে পরিষ্কার বোঝা যায় তাঁরাও ভাবেননি এটি গোল দেওয়া হবে। কিন্তু রেফারি কিম উয়ো সাং সবাইকে অবাক করে দিয়ে গোল দিয়ে দেন। দুই লাইন্সম্যান কাং ডং হো এবং চিয়ন জিন হি-ও কার্যত চোখ বুজে থাকেন। অবাক ভারতীয় ফুটবলাররা মাঠেই প্রতিবাদ জানান। কোনও লাভ হয়নি।
রেফারির এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গুরপ্রীত। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, “আমাদের বিশ্বাস ছিল। দলের ছেলেরা মাঠে নেমে নিজেদের সবটা দিয়েছে। কিন্তু গত কালের ম্যাচের ফল ও সমতা ফেরানোর ঘটনা আমাদের শিক্ষা দিল যে আমরা যেখানে যেতে চাই তার জন্য শুধু ভাল খেললেই হবে না, সঙ্গে চাতুরিও প্রয়োজন। আমাদের কেউ হাতে করে কিছু তুলে দেবে না। আমাদের নিয়ে নিতে হবে।” গুরপ্রীতের কথা থেকে স্পষ্ট যে, মাঠের লড়াইয়ে জিততে না পারলে কেউ কেউ চাতুরির আশ্রয় নেয়। সেটাই হয়েছে মঙ্গলবার।
ভারতের কোচ স্তিমাচ মনে করেন, আধুনিক ফুটবলে এই ধরনের রেফারিং মানা যায় না। যদিও তিনি কাতারকে নিশানা করেননি। বরং তাদের প্রশংসা করেছেন। ম্যাচ শেষে স্তিমাচ বলেন, “আমার দলের ছেলেরা যা খেলেছে তাতে ওদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার কোনও জায়গা নেই। দলকে নিয়ে ভারতীয় সমর্থকদের গর্ব করা উচিত। ম্যাচের বেশির ভাগ সময় আমরা দাপট দেখিয়েছি। কাতারের মতো দলের বিরুদ্ধে আমরা বেশি সুযোগ পেয়েছি। প্রথমার্ধেই ৩-০ গোলে এগিয়ে যাওয়া উচিত ছিল আমাদের।”
তার পরেই সেই বিতর্কিত গোল নিয়ে মুখ খুলেছেন স্তিমাচ। তিনি বলেন, “কাতার ভাগ্যের জোরে জিতেছে। ওটা গোল ছিল না। বল পরিষ্কার বাইরে বেরিয়ে গিয়েছিল। আমি রিপ্লে দেখেছি। এখনকার ফুটবলে এই সিদ্ধান্ত মানা যায় না। কারণ, ওই একটা সিদ্ধান্ত খেলার ফল বদলে দিল। এটা কাতারের সঙ্গেও হতে পারত। আমি অজুহাত দিচ্ছি না। কিন্তু ২৩ জন একটা স্বপ্ন সত্যি করার জন্য পরিশ্রম করেছে। একটা সিদ্ধান্ত সেই স্বপ্ন শেষ করে দিল।”
কাতারকে হারাতে পারলে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের তৃতীয় রাউন্ডে পৌঁছে যেত ভারত। দেশের ইতিহাসে কখনও এত দূর এগোতে পারেনি তারা। শুধু তাই নয়, ২০২৭ এএফসি এশিয়ান কাপে সরাসরি খেলার সুযোগ পেতেন গুরপ্রীতেরা। হেরে যাওয়ায় তাঁদের যোগ্যতা অর্জন পর্বে খেলতে হবে। সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন জানিয়েছে, সরকারি ভাবে রেফারিং নিয়ে প্রতিবাদ জানাবে। এত সহজে বিষয়টি ছেড়ে দিতে চাইছে না তারা।