FIFA World Cup 2022

ফাইনালে হারের যন্ত্রণার মধ্যেই শোকাহত ফ্রান্স, গুলি করে মারা হল সে দেশের ফুটবলারকে

বড়দিনের ঠিক দু’দিন আগে, অর্থাৎ শুক্রবার গুলি করে খুন করা হল এক ফুটবলারকে। ফ্রান্সের শহর মার্সেইয়ের একটি এলাকায় ওই ফুটবলারকে গুলি করা হয়েছে।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ ১৬:৩৮
ফরাসি ফুটবলারের মৃত্যু হল গুলিতে।

ফরাসি ফুটবলারের মৃত্যু হল গুলিতে। ফাইল ছবি

কাতার বিশ্বকাপ ফাইনালের পর কেটে গিয়েছে এক সপ্তাহ। হারের ঘোর এখনও কাটেনি ফ্রান্সের। এর মধ্যে প্রকাশ্যে এল মর্মান্তিক খবর। বড়দিনের ঠিক দু’দিন আগে, অর্থাৎ শুক্রবার গুলি করে খুন করা হল এক ফুটবলারকে। ফ্রান্সের শহর মার্সেইয়ের একটি এলাকায় ওই ফুটবলারকে গুলি করা হয়েছে। তাঁর নাম আদেল সান্তানা মেন্ডি। ২২ বছর বয়স তাঁর।

গত জুনেই ফ্রান্সের ঘরোয়া লিগের চতুর্থ ডিভিশনের ক্লাব ওবানিয়াতে যোগ দিয়েছিলেন আদেল। এর মধ্যেই তাঁকে খুন করা হল। তবে কী কারণে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে, সেটা এখনও জানায়নি পুলিশ। তারা তদন্ত শুরু করেছে। আদেলের ক্লাব ওবানিয়া সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে লিখেছে, “বিরাট একটা শূন্যস্থান তৈরি হল। আদেল বরাবর আমাদের একজনই থাকবে। ওর পরিবারকে সমবেদনা।”

Advertisement

মার্সেইয়ের যুব অ্যাকাডেমি থেকে উঠে এসেছিলেন আদেল। তার পরে ইংল্যান্ডের ক্লাব ইস্টবোর্ন এবং ল্যাংনেতে খেলেছেন। এ ছাড়া অ্যান্ডোরার বেশ কিছু ক্লাবে খেলেছেন তিনি। আদেল প্রয়াত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিভিন্ন মহল থেকে শোকবার্তা প্রকাশ করা হয়েছে। জন্ম ফ্রান্সে হলেও আদেলের বাবা-মা সেনেগালের। ফ্রান্সের ছোটখাটো ফুটবল ক্লাবেই এত দিন খেলতেন তিনি। স্বপ্ন ছিল বড় ক্লাবে খেলার।

বিশ্বকাপের ফাইনালে হারের পর থেকে অশান্ত ফ্রান্স। রাস্তায় রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন সমর্থকরা। তাদের সামলাতে লাঠি চালায় পুলিশ। কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার অভিযোগও উঠেছে। বিশ্বকাপে হার মেনে নিতে না পেরে এক রাতে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা দেশ। আর্জেন্টিনার সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে পরাজিত হয়েছেন ফরাসিরা। ম্যাচ টাইব্রেকারে নিয়ে গিয়েও জিততে পারেননি তাঁরা। এই হার মানতেই পারছেন না সমর্থকরা। গত রবিবার রাতে প্যারিস-সহ ফ্রান্সের অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। উত্তেজিত ফুটবল ভক্তদের সামলাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। সমাজমাধ্যমেও ফ্রান্সের উত্তাল রাজপথের টুকরো টুকরো ছবি ছড়িয়ে পড়েছে।

ফ্রান্স সরকার ফাইনাল ম্যাচ দেখার জন্য প্যারিসে বা অন্য কোনও শহরে ‘জায়ান্ট স্ক্রিন’ বসানোর অনুমতি দেয়নি। ফলে সকলে এক জায়গায় জড়ো হয়ে বড় পর্দায় খেলা দেখা হয়নি। রবিবার ফাইনাল ম্যাচ দেখার জন্য শহরের নানা প্রান্তে বার কিংবা রেস্তরাঁয় জড়ো হয়েছিলেন মানুষ। কিন্তু তাঁরা স্বপ্নভঙ্গের সাক্ষী থেকেছেন। অধরা থেকে গিয়েছে বিশ্বকাপ।

তার পরে গত শুক্রবার অশান্ত হয় প্যারিস। মধ্য প্যারিসের গার দ্য লে স্টেশন লাগোয়া কুর্দিস সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কাছে একটি রেস্তরাঁ এবং সাঁলোতে ৬৯ বছরের এক বৃদ্ধের গুলিতে তিন জনের মৃত্যু হয়। আহত হন আরও অনেকে। তার পরেই অবশ্য আততায়ী ৬৯ বছরের বৃদ্ধকে ধরে ফেলে পুলিশ। সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে জানানো হয়েছে, ধৃত বৃদ্ধ পুলিশের কাছে কবুল করেছেন, তিনি বিদ্বেষমূলক ভাবনা থেকেই গুলি চালিয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে, মৃত তিন জনই কুর্দ সম্প্রদায়ের।

সাদা চামড়ার ওই বৃদ্ধ ফ্রান্সে ‘বিদেশি’দের উপস্থিতি নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন। এর আগেও একাধিক বার ফ্রান্সে আশ্রয় নেওয়া অন্যান্য দেশের মানুষের উপর বিষোদগার করতে শোনা গিয়েছিল তাঁকে। অতীতে বিদ্বেষমূলক হামলা চালানোর অভিযোগে জেলেও যেতে হয়েছে অভিযুক্ত বৃদ্ধকে। বস্তুত, জেল থেকে বেরোনোর পরের দিনই বন্দুক নিয়ে তিন জনকে হত্যা করার অভিযোগ উঠল প্রাক্তন ওই ট্রেন চালকের বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন
Advertisement