ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লেস। — ফাইল চিত্র।
কলকাতা ডার্বির পর কেটে গিয়েছে পাঁচ দিন। রেফারিং নিয়ে এখনও ক্ষোভ যাচ্ছে না ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের। শনিবার নর্থইস্ট ইউনাইটেড ম্যাচের আগে ‘স্পষ্ট ভাষায়’ জানিয়ে দিলেন, রেফারিং ঠিক না হওয়ার কারণে বেশ কিছু ম্যাচে তিন পয়েন্ট পাননি তাঁরা। উদাহরণ হিসাবে দেখিয়েছেন ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচও। কুয়াদ্রাতের এই আক্রমণে অস্বস্তিতে পড়তে পারেন আয়োজকেরা। এ দিকে, বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে এসে লাল-হলুদের নতুন ফুটবলার ভিক্টর ভাসকুয়েস জানিয়েছেন, তিনি দলকে ট্রফি জেতাতেই এসেছেন।
সাংবাদিক বৈঠকে আগ্রাসী মেজাজে ছিলেন কুয়াদ্রাত। যে ভাবে কথা বলেছেন, তাতে মনেই হয়নি কোনও রকম শাস্তির পরোয়া তিনি করছেন। কুয়াদ্রাত বলেছেন, “প্লে-অফে যেতে গেলে ম্যাচ জিততেই হবে। প্লে-অফই আমাদের লক্ষ্য। তাই তিন পয়েন্টের জন্য লড়াই করব। খারাপ রেফারিংয়ের জন্যই আমরা মাত্র দুটো ম্যাচে জিতেছি। কিছু ম্যাচে শেষ মুহূর্তের রেফারিং আমাদের জিততে দেয়নি। আগের ম্যাচেও তিন পয়েন্ট নিশ্চিত ছিল। শেষ মুহূর্তে ওই ফাউলটা দেওয়া হয়নি। ফলে দু’পয়েন্ট মাঠেই রেখে আসতে হয়েছে।”
এর পরেই রেফারিং নিয়ে একটানা কথা বলে যান কুয়াদ্রাত। লাল-হলুদ কোচের কথায়, “অনেক দিন ধরে ভারতীয় ফুটবলের সঙ্গে আমি যুক্ত। সেই ২০১৬ সাল থেকে। অনেক কিছু দেখেছি। যখন কোনও ম্যাচে একটি দলকে একটা পেনাল্টি দেওয়ার পর আরও একটি পেনাল্টির আবেদন করা হয়, তখন উল্টো দিকের দলও পেনাল্টি পেয়েছে কি না সেটা হয়। যখন কোনও দলের ফুটবলার লাল কার্ড দেখে, খেয়াল করে দেখবেন ম্যাচের শেষে অপর দলের ফুটবলারও লাল কার্ড দেখেছে। সব সময়েই দু’দলের মধ্যে একটা ভারসাম্য রাখা হয়।”
কুয়াদ্রাতের সংযোজন, “এ দেশে রেফারিরা শুধু দুর্বল দলের পক্ষেই থাকেন। যখন কোনও দল পিছিয়ে রয়েছে তখন রেফারি তাদের পক্ষ নেন। রেফারির উচিত যা দেখছেন সেটার ভিত্তিতে বাঁশি বাজানো। কারা পিছিয়ে বা কারা এগিয়ে সেটা বিচার করে নয়। আমি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত যে, কলকাতা ডার্বিতে যদি মোহনবাগান ২-১ এগিয়ে থাকত এবং সেই সময় আমাদের বক্সে নন্দকুমারকে সাহাল ফাউল করত, তা হলে রেফারি ঠিক বাঁশি বাজাতেন। ওরা এগিয়ে থাকলে সায়নকে ধাক্কা মারার জন্য রেফারি দিমিত্রি পেত্রাতোসকে কার্ড দেখাতেন।”
ওড়িশা ম্যাচের উদাহরণ টেনে এনে কুয়াদ্রাত বলেছেন, “অনেক ম্যাচে আমরা শেষ মুহূর্তে খারাপ রেফারিংয়ের শিকার হয়েছি। ওড়িশা ম্যাচের কথা মনে করে দেখুন। যে হেতু ড্র চলছিল তাই রেফারি ভেবেছিলেন সবাই খুশি থাকবে। একটা পেনাল্টি না দিলে কিছু এসে যায় না। দু’বার পেনাল্টির আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। ভাল রেফারি থাকলে অন্তত তিন-চারটে ম্যাচে আমরা তিন পয়েন্ট পেতে পারতাম। এমন বলছি না যে রেফারির জন্য প্লে-অফে যেতে পারব না। কিন্তু ওদের নিরপেক্ষতা থাকলে ফলাফল অন্য রকম হতে পারত।”
এ দিকে, লাল-হলুদের ফুটবলার ভাসকুয়েসের কথায়, “মাত্র তিন দিন আগে এখানে এসেছি। এখনও মানিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। যেটা দলের জন্য ভাল সেটাই করব। এখানে এসে খুব খুশি। আমার কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ। দু’বছর এমএলএসে কঠোর প্রতিযোগিতার মধ্যে খেলেছি। কার্লেসকে আগে থেকেই চিনতাম। দিমাসের (দেলগাদো, সহকারী কোচ) অনেক আগে বার্সেলোনা বি দলের হয়ে খেলেছি। কার্লেসের সঙ্গে কথা বলে খুব ভাল লেগেছিল। তাই এখানে আসার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করিনি। চেষ্টা করব গোল করার এবং দলকে সাহায্য করার।”
তাঁর সংযোজন, “বার্সেলোনায় থাকার সময় আগে মাইকেল লাউড্রপকে খুব ভাল লাগত। তার পরে জ়াভি, আন্দ্রে ইনিয়েস্তাকে দেখে আরও অনেক কিছু শেখার চেষ্টা করেছি। লা মাসিয়া অ্যাকাডেমি থেকে বেড়ে উঠেছি। চেষ্টা করব তরুণদের সাহায্য করার। এখানকার তরুণদের সেটা দরকার। কোচেরা রয়েছেন, কিন্তু ফুটবলারদেরও দরকার। দেখেছি কী ভাবে ক্লেটন, পারদো, সাউলরা ছোটদের সাহায্য করেছে। এখানে ঘুরতে আসিনি। নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে এসেছি।”