ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। —ফাইল চিত্র।
কলকাতা শহরের একটি বিশেষ জায়গা নিয়ে উদ্বিগ্ন ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। তাদের অভিযোগ যুবভারতীতে খেলা থাকলেই কাদাপাড়া অঞ্চল থেকে তাদের সমর্থকদের উপর হামলা করা হচ্ছে। এই অভিযোগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবে ক্লাব।
রবিবার ডার্বি দেখে বাড়ি ফেরার পথে যুবভারতী স্টেডিয়াম সংলগ্ন কাদাপাড়া অঞ্চল (বাইপাস থেকে ফুলবাগান সংযোগকারী রাস্তায় স্বভূমির পাশে) এবং তার আশপাশের আরও কয়েকটি এলাকায় ইস্টবেঙ্গলের একাধিক সমর্থকের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। ইস্টবেঙ্গল ক্লাব সোমবার জানায় যে, তারা মুখ্যমন্ত্রীকে এই ঘটনা জানাবে। সেই সঙ্গে আহত সমর্থকদের চিকিৎসার দায়িত্বও ক্লাব নেবে।
রবিবার ডুরান্ড কাপের ফাইনাল ছিল যুবভারতীতে। সেই ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলকে ১-০ গোলে হারায় মোহনবাগান। ম্যাচের পরে বাড়ি ফেরার পথে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের মারার অভিযোগ ওঠে। মহিলা সমর্থকদের উদ্দেশে অকথ্য ভাষায় কটূক্তি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। বিদ্বেষমূলক মন্তব্যও নাকি করা হয়েছে।
ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, “এমন পরিস্থিতি বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে সেটা জানাব। আহত সমর্থকদের ক্লাবে আসতে বলা হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ শোনা হবে। প্রয়োজনে তাঁদের নিয়ে ক্রীড়ামন্ত্রীর কাছে যাব আমরা।”
ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের তরফে বলা হয়েছে যে, ইট, রড, লাঠি দিয়ে তাদের সমর্থকদের মারা হয়েছে। অনেক ইস্টবেঙ্গল সমর্থকের জার্সি ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের পতাকা মাটিতে ফেলে পা দিয়ে মাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে তারা। ম্যাটাডোরের উপর থেকে নাকি কাচের বোতল, ইট ছোড়া হয়। লোহার রড দিয়ে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের গাড়িতে মারা হয় বলেও অভিযোগ। দেবব্রত বলেন, “এমন ঘটনাকে আমরা সমর্থন করি না। যদি ইস্টবেঙ্গলের কেউ এমন কিছু করে থাকে, আমি সেটারও তীব্র নিন্দা করছি। প্রয়োজনে সেটাও মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব। আমরা শান্তি, শৃঙ্খলা চাই। লড়াই হোক মাঠে। ৯০ মিনিটের লড়াইয়ে কোনও আপস করব না। কিন্তু এর বাইরে কোনও লড়াই চাই না। মোহনবাগান এবং মহমেডান ক্লাবের সদস্য, সমর্থক বা কর্তাদের সঙ্গেও কোনও লড়াই চাই না।”
সোমবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে বলা হয় যে, এই সমস্ত অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানো হবে। ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকেও জানানো হবে। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারকেও ক্লাবের তরফে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে। যদিও কোনও আইনি পদক্ষেপ এখনও করা হয়নি। সেই সঙ্গে আহত সমর্থকদের বুধ এবং বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে থেকে সন্ধে ৭টার মধ্যে ক্লাবে আসতে বলা হয়েছে। তাঁদের চিকিৎসার দায়িত্ব ক্লাবের পক্ষ থেকে নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
শেষ ১০টি কলকাতা ডার্বিতে ন’বার হেরেছে ইস্টবেঙ্গল। এ বারের ডুরান্ডের গ্রুপ পর্বে ১-০ গোলে মোহনবাগানকে হারিয়ে দেয় লাল-হলুদ। তার পর ফাইনালে আবার দুই দল মুখোমুখি হলে ম্যাচের উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।