(বাঁ দিকে) মোহনবাগানের অনুশীলনে জেমি ম্যাকলারেন। ইস্টবেঙ্গলের অনুশীলনে সাউল ক্রেসপো (ডান দিকে)। ছবি: সমাজমাধ্যম।
আইএসএলে শনিবার চেন্নাইয়িন এফসি-র বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলবে ইস্টবেঙ্গল। তার পর দিন, রবিবার নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচ মোহনবাগানের। দুই প্রধানেরই চিন্তা রক্ষণ। ইস্টবেঙ্গল যেমন চেন্নাইয়িন ম্যাচে পাবে না হেক্টর ইয়ুস্তেকে, তেমনই কার্ড সমস্যায় নর্থইস্ট ম্যাচে নেই মোহনবাগানের শুভাশিস বসু এবং আলবের্তো রদ্রিগেস।
বৃহস্পতিবার ইস্টবেঙ্গলের অনুশীলনে ছিলেন না ইয়ুস্তে। কোচ অস্কার ব্রুজ়ো জানিয়েছিলেন, বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে স্পেনীয় ফুটবলারকে। শুক্রবারও ইয়ুস্তে ছিলেন না। তার পরে চেন্নাই উড়ে যাওয়ার আগে জানা গেল, তিনি দলের সঙ্গে যাননি। চোট কাটিয়ে সবে নর্থইস্ট ম্যাচে ফিরেছিলেন ইয়ুস্তে। আবার তিনি চোট পেয়েছেন কি না তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে।
ফলে চেন্নাইয়িন ম্যাচে ইয়ুস্তের জায়গায় হিজাজি মাহেরকে খেলানো ছাড়া উপায় নেই ব্রুজ়োর। চলতি মরসুমে একেবারেই ছন্দে নেই হিজাজি। তাঁর দোষে বেশ কিছু ম্যাচে গোলও খেয়েছে দল। কোচ হয়ে আসার পর থেকে ইয়ুস্তেকেই ভরসা করেন ব্রুজ়ো। তবে চেন্নাইয়িন ম্যাচে কিছুটা দায়ে পড়েই খেলাতে হবে জর্ডানের ফুটবলারকে।
তবে মোহনবাগানের কোচ মোলিনাকে খুব বেশি চিন্তিত দেখাল না। যদিও সমস্যা তাঁরও কম নেই। দলে বিকল্প লেফট ব্যাকের অভাব রয়েছে। তাই শুভাশিসের জায়গায় খেলাতে হবে আশিক কুরুনিয়নকে। ডান দিকে অবশ্য আশিস রাইকে খেলাতে পারেন তিনি।
চেন্নাইয়ের আবহাওয়া নিয়েও চিন্তিত ইস্টবেঙ্গল কোচ। দক্ষিণের শহরে এখন দিন ও রাতের উষ্ণ তাপমাত্রার মধ্যে খুব একটা তফাৎ নেই। সদ্য ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব সামলানো এই শহরের গড় আর্দ্রতাও ৮০%-এর আশেপাশে থাকছে। যার ফলে ফুটবলারদের কম সময়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকছে। এই সমস্যার সমাধান হঠাৎ করে শারীরিক সক্ষমতা বাড়িয়ে করা সম্ভব নয়। এর জন্য বিশেষ কৌশলই প্রয়োজন এবং সেই কৌশলই অবলম্বন করতে চান অস্কার। ম্যাচের আগে বলেছেন, “এখানকার আবহাওয়া, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা অন্যান্য শহরের চেয়ে আলাদা। তাই এখানে আমাদের একটু অসুবিধা হতে পারে। এখানে সেরা খেলা দেখানো সোজা নয়। সে জন্য আমাদের উপযুক্ত কৌশল অবলম্বন করতে হবে।”
ডুরান্ড কাপের ফাইনালে নর্থইস্টের কাছে ঘরের মাঠে হেরেছিল মোহনবাগান। সেই শোধ তোলা হয়ে গিয়েছে আইএসএলের প্রথম পর্বে তাদের হারিয়ে। এ বার দ্বিতীয় পর্বে মোহনবাগান খেলবে গুয়াহাটিতে। আত্মবিশ্বাসে ভর করে মোলিনা এই ম্যাচ থেকেও তিন পয়েন্ট তুলে নিতে চান। তাঁকে উৎসাহ দেবে ইস্টবেঙ্গলের কাছে শেষ ম্যাচে নর্থইস্টের হার।
মোহনবাগান রক্ষণের মাঝে টম অলড্রেডের সঙ্গে জুটি বাঁধতে পারেন দীপক টাংরি। ডান দিকে আশিস রাই এবং বাঁ দিকে আশিক কুরুনিয়ন খেলবেন। আক্রমণে ম্যাকলারেনের সঙ্গে গ্রেগ স্টুয়ার্ট থাকবেন। যে হেতু রক্ষণে এক জন বিদেশি নেই, তাই নর্থইস্ট ম্যাচে দিমিত্রি পেত্রাতোসও শুরু থেকে খেলতে পারেন। অথবা আক্রমণে ম্যাকলারেনের পাশে জেসন কামিংসকে জুড়ে দিতে পারেন মোলিনা।
আশিক সাধারণত বাঁ দিকের উইংয়ে খেলেন। কিন্তু লিস্টন কোলাসো ফর্মে থাকায় এ মরসুমে নিয়মিত খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না। পরিবর্ত হিসাবে নেমেছেন। শুভাশিসের চোট তাঁকে প্রথম একাদশে ফেরার সুযোগ করে দিয়েছে। অতীতে বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধেও তিনি লেফট ব্যাক হিসাবে খেলেছেন।
নতুন ভূমিকা নিয়ে আশিক বলেছেন, “বেঙ্গালুরুতে থাকার সময় ওই পজিশনে খেলতাম বলে আমার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই নতুন করে মানিয়ে নিতে অসুবিধা হবে না। তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমি স্ট্রাইকার হিসাবে খেলতেই পছন্দ করি।”
চেন্নাইয়িন ম্যাচে দীপেন্দুকে মোলিনা রাইট ব্যাক হিসাবে খেলালেও বিরতির পরেই তাঁকে তুলে নিতে হয়। তাই আবার হয়তো ঝুঁকি নেবেন না মোলিনা। যদিও দীপেন্দুর পাশে দাঁড়িয়ে এ দিন বলেছেন, “দীপেন্দু খুবই পরিশ্রম করছে। বেঙ্গালুরু ম্যাচে ওর জন্য হারিনি। গোটা দলই হারের জন্য দায়ী। দীপেন্দু তরুণ। আগের ম্যাচেও ৪৫ মিনিট ভাল খেলেছে। তবে এখনও ঠিক করিনি নর্থইস্ট ম্যাচে ওকে প্রথম একাদশে রাখব কি না।”