মোহনবাগান মাঠে পোগবা। ছবি টুইটার
রবিবার সকালে কলকাতায় এসেছেন। বিকেলেই অনুশীলনে নেমে পড়লেন এটিকে মোহনবাগানের নতুন ফুটবলার ফ্লোরেন্তিন পোগবা, যিনি সম্পর্কে বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলার পল পোগবার দাদা। তবে প্রথম দিনের অনুশীলনে কিছুই করলেন না তিনি। দেড় ঘণ্টার অনুশীলনে মাঠের ধারেই সময় কাটালেন। দেখে নিলেন গোটা দলের অনুশীলনের পদ্ধতি। মাঝেমাঝে বল নিয়ে হালকা জাগলিং করলেন। তা ছাড়া অনুশীলনে সে ভাবে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেল না তাঁকে। সোমবার থেকে অবশ্য পুরোদমে অনুশীলনে নেমে পড়ার কথা রয়েছে তাঁর।
প্রথম দিনই পোগবার মুখে শোনা গেল কলকাতা ডার্বির কথা। ডুরান্ড কাপের ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান দ্বৈরথ যে পিছিয়ে গিয়েছে সেটা জানতেন না। নতুন তারিখ জানার পরেই সাংবাদিকদের বললেন, “ইস্টবেঙ্গলের ব্যাপারে শুনেছি। ওদের সঙ্গে ডুরান্ডে খেলার কথা রয়েছে। শুনেছি ওরা খুব বড় ক্লাব। এ ধরনের ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। সাঁ এতিয়েঁতে খেলার সময় অলিম্পিক লিয়ঁর বিরুদ্ধে ডার্বি খেলেছি। জানি এই ম্যাচের উত্তেজনা। অন্য রকম পরিবেশ থাকে। এখন থেকেই বেশ উত্তেজিত। মাঠে নামার জন্য মুখিয়ে রয়েছি।”
পল পোগবার দাদা বলেই শহরে বেশি পরিচিত হয়েছেন তিনি। সেই পলের কি কোনও সময় ভারতে তাঁর খেলা দেখতে আসার সম্ভাবনা রয়েছে? পোগবার উত্তর, “জানি না পোগবা এখানে খেলা দেখতে আসবে কি না। আপাতত ক্লাবের হয়ে খেলবে। তার পর বিশ্বকাপ রয়েছে। ওর কাছে সময় অনেক কম। মনে হয় না আসতে পারবে। তবে এলে খুবই ভাল হবে।” পোগবার সংযোজন, “এখানে আসার আগে ভাইয়ের সঙ্গে সে ভাবে কথা হয়নি। তবে ও জানে আমি এটিকে মোহনবাগানে খেলতে এসেছি। খুব খুশি। আমার মতো ও-ও চ্যালেঞ্জ নিতে জানে। আমাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে।”
ফ্রান্সের বিভিন্ন ক্লাবে তিনি খেলেছেন। সোশো থেকে যোগ দিয়েছেন সবুজ-মেরুনে। ফ্রান্স থেকে ভারতে আসার যাত্রাটা কী রকম ছিল? পোগবা বলেছেন, “আমার এজেন্ট জানিয়েছিল, এটিকে মোহনবাগানের এক ডিফেন্ডারের চোট রয়েছে। ওরা নতুন ডিফেন্ডার খুঁজছে। আমিও ভাবলাম, যাওয়াই যাক। নতুন চ্যালেঞ্জ বরাবরই নিতে চেয়েছি। সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই এখানে এলাম। এটিকে মোহনবাগান বা ভারতের লিগের ব্যাপারে আগে কোনও দিন খোঁজ খবর নিইনি। তবে জানতাম নিকোলাস আনেলকা, রবার্ট পিরেসের মতো ফুটবলার এখানে খেলে গিয়েছে। অনেকেই এখানে এসে খেলার জন্য আগ্রহী হয়ে রয়েছে। তাই আমিও ভাবলাম চেষ্টা করে দেখা যাক।”
নিজে ডিফেন্ডার হলেও পোগবার পছন্দের ফুটবলার লিয়োনেল মেসি। এই প্রসঙ্গেই তিনি বললেন, “ছোটবেলার স্ট্রাইকার হিসাবেই খেলেছি। উইঙ্গার পজিশনেও খেলেছি। এক বার একটা ক্লাবের হয়ে খেলার সময় দলের ডিফেন্ডার চোট পেয়েছিল। কোচ আমাকে বলেন রক্ষণে খেলতে। সেই ম্যাচে বেশ ভাল খেলি। তার পর থেকে একটানা রক্ষণেই খেলা শুরু করি। সেই থেকেই ধীরে ধীরে ডিফেন্ডার হয়ে গেলাম।”
রবিবার ছুটির দিন থাকায় মোহনবাগান মাঠে পোগবাকে দেখতে হাজির হয়েছিলেন প্রায় হাজার দেড়েক দর্শক। ছবি তোলার ধুম তো ছিলই। উঠল ‘পোগবা, পোগবা’ স্লোগানও। প্রথম দিনই দর্শকদের থেকে এমন অভ্যর্থনা পেয়ে খুশি পোগবা। বললেন, “এখানকার দর্শকরা প্রথম দিনই আমার মন জয় করে নিয়েছে। দর্শকরা অনুশীলন দেখতে এলে বাড়তি তাগিদ তৈরি হয়। আশা করি বাকি দিনগুলোতেও ওঁরা আসবেন।”
গিনির ফুটবলার জানালেন, বেশ কিছু দিন ফুটবল থেকে দূরে থাকলেও তিনি ফিট। এমনকি এক সপ্তাহ পরে কোনও ম্যাচ থাকলে সেখানে অনায়াসে নেমে পড়তে পারেন।